অঙ্কে স্নাতক হয়েও ‘দাগি’র তালিকায় ভাইয়ের নাম! SSC-র বিরুদ্ধে মামলা শালবনির বিধায়কের

SSC Tainted List

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: কয়েক মাস আগে ২০১৬ সালের এসএসসি শিক্ষকদের অযোগ্যদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন। যা নিয়ে বেশ আন্দোলন শুরু হয়েছিল। শেষে গত ৭ এবং ১৪ সেপ্টেম্বর শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছিল। আর এবার প্রকাশিত হয়েছে অযোগ্য শিক্ষাকর্মীদের তালিকা (SSC Tainted List)। উঠে এসেছে ৩,৫১২ জনের নাম। যার মধ্যে গ্রুপ-সিতে ১১৬৩ জন ও গ্রুপ-ডিতে ২৩৪৯ জন রয়েছেন। আর সেই তালিকা প্রকাশ হতেই সামনে উঠে এল একের পর এক তৃণমূল নেতা বা নেতা-ঘনিষ্ঠদের নাম।

ফের অযোগ্য তালিকায় তৃণমূল ভাইয়ের নাম

কিছুদিন আগে অযোগ্য শিক্ষাকর্মীদের তালিকায় দেখা গিয়েছিল বর্ধমান উত্তর বিধানসভার তৃণমূল বিধায়ক নিশীথ কুমার মালিকের ভাইয়ের নাম। তাঁর ভাই শান্তনু মালিকের নাম লিস্টে বেরতেই কটাক্ষ শুরু করে বিরোধীরা। এদিকে তিনি শুধু বিধায়কের ভাই নন, তাঁর আরও একটা পরিচয় রয়েছে আর সেটি হল তিনি হাটগোবিন্দপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান। যার দরুন শোরগোল পরে গিয়েছে এলাকা জুড়ে। এবার সেই বিতর্কের রেশ কাটতে না কাটতেই ফের অযোগ্যের তালিকায় উঠে এল শালবনির বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতোর ভাই খোকন মাহাতোর। কিন্তু কেন ভাইয়ের নাম টেন্টেড শিক্ষাকর্মীদের তালিকায় উঠল তাই নিয়ে প্রশ্ন তোলে বিধায়ক।

‘১২৭০’ নম্বরে উঠে এল নাম

জানা গিয়েছে, শালবনির বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতোর ভাই খোকন মাহাতো ২০১৭ সালে ঝাড়গ্রামের বৈতা শ্রী গোপাল হাইস্কুলের ক্লার্ক হিসেবে যোগদান করেছিলেন। কিন্তু গত ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ২০১৬ সালের SSC-র শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের প্যানেল বাতিল হয়ে যাওয়ায় চাকরি হারিয়েছেন মন্ত্রীর ভাই শ্রীকান্তও। পরে যদিও চাকরি ফিরে পাওয়ার আশা ছিল তাঁর। কিন্তু অযোগ্যের তালিকা প্রকাশ্যে আসতেই সব শেষ। কারণ ‘১২৭০’ নম্বরে জ্বলজ্বল করছে মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতোর ভাই খোকন মাহাতোর নাম। তাই এবার ভাইয়ের জন্য এসএসসি-র বিরুদ্ধে কেস করতে চলেছে বিধায়ক দাদা শ্রীকান্ত মাহাতো।

কী বলছেন মন্ত্রী?

বৃহস্পতিবার রাজ্যের ক্রেতা, সুরক্ষা ও সমবায় দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতোকে তাঁর ভাইয়ের নাম অযোগ্য তালিকায় ওঠা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে, তাঁর স্পষ্ট জবাব, ‘এসএসসি-র বিরুদ্ধে কেস করেছি। ওরা যে OMR-টা আপলোড করেছে, সেটার সঙ্গে প্রশ্নপত্রটাও ছিল আমাদের কাছে, ওই দুটো দিয়েই কেস করেছি।’ তিনি আরও বলেন, “আমার ভাই অঙ্কে স্নাতক। লাইব্রেরি সায়েন্স বিষয়ে সেট পাস করেছে। প্রাইমারি টেট পরীক্ষাতেও পাস করেছিল। ক্লার্কের চাকরি পাওয়ার আগে ভাই দু’টো চাকরি ছেড়েছে। ও নিজের যোগ্যতাতেই এই চাকরিটাও পেয়েছিল।’

আরও পড়ুন: ২০০২-র ভোটার তালিকায় নাম নেই, বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা আকবরের! চাঞ্চল্য খড়দহে

কটাক্ষ বিজেপির

এর আগে, কলকাতা হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে নিয়েও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মন্ত্রী শ্রীকান্ত। সেই সময়ে ২০২৩ সালের মার্চ মাসে প্রকাশিত ওএমআর বিকৃত করে চাকরি পাওয়া শিক্ষাকর্মীদের তালিকায় নিজের ভাইয়ের নাম দেখে চ্যালেঞ্জের সুরে মন্ত্রী বলেছিলেন, ‘যেদিক থেকেই বিচার করা হোক, আমার ভাই কোনও ভাবেই ১২ পাবে না!’ এবারেও তাই। এদিকে শ্রীকান্ত মাহাতোর এই চ্যালেঞ্জকে কটাক্ষ করছে বিজেপি। বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি শঙ্কর গুছাইত বলেন, ‘এটা প্রমাণিত, তৃণমূলের অনেক নেতাই প্রভাব খাটিয়ে তাঁদের আত্মীয়দের চাকরি পাইয়ে দিয়েছিলেন। এখন আদালতের রায়ে চাকরি যাওয়াতে উনি ভুলভাল বকছেন।’

Leave a Comment