অটোমোবাইল শিল্পের পর এবার কৃষিক্ষেত্রে ভারতের বিরাট ক্ষতি করে দিল চিন!

বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: সম্প্রতি বিরল আর্থ ম্যাগনেট রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ভারতের অটোমোবাইল সেক্টরে জোরালো ধাক্কা দিয়েছিল চিন! বর্তমানে সেই রেশ কাটিয়ে উঠতে পারেনি অটোমোবাইল শিল্পের সাথে যুক্ত কর্মীরা।

তবে সেই ধাক্কা সামাল দিয়ে ওঠার আগেই ফের ভারতের বড়সড় ক্ষতি করল ড্রাগন! প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এবার জলে দ্রবণীয় সার WSF রপ্তানি নিষিদ্ধ করে দিয়েছে বেইজিং। যা প্রধানত বিভিন্ন গাছপালায় ব্যবহার করা হয়।

চিনের নিষেধাজ্ঞায় কতটা প্রভাব পড়বে ভারতে?

প্রথমেই বলে রাখি, WSF আসলে এক ধরনের প্রয়োজনীয় সার। এটি গাছপালা সহজেই দ্রবীভূত হয়ে যায়। এই সার মূলত সেচ, ড্রিপ ও স্প্রিংকলারের মাধ্যমে গাছের পাতায় স্প্রে করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় সার মাটির বদলে গাছের পাতা দিয়ে শিকড়ে পৌঁছায়। এবার সেই সারেই রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা দিল চিন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই নিষেধাজ্ঞা ভারতে উদ্ভিদ পালনের ক্ষেত্রে বড়সড় ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। কেননা, বর্তমানে এই সারের চাহিদা রয়েছে ভারতে। এই ব্যবসা শস্য ব্যবসার থেকেও বৃহৎ। রিপোর্ট বলছে, এটি ভারতের কৃষি জিডিপিতে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জুড়ে রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিনের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার পর ভারতে আঙুর, ডালিম, কলা ও পলি হাউস চাষ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে! এছাড়াও বিদেশি ফুল ও সবজি চাষের ক্ষেত্রেও প্রভাব পড়তে পারে অনেকটাই।

ভারতে রপ্তানি পুরপুরি নিষিদ্ধ করতে চাইছে চিন?

ভারতের ওপর ড্রাগনের একের পর এক রপ্তানি সংক্রান্ত পদক্ষেপের পর দ্রবনীয় সার শিল্প সমিতির সচিব বিনোদ গোয়েল জানিয়েছেন, চিন বর্তমানে সিআইকিউ-র মাধ্যমে এক বিশেষ অবরোধ তৈরি করতে চাইছে। আসলে ভারতে প্রয়োজনীয় সারের 80 শতাংশই আসে চিন থেকে। মূলত সেই কারণেই ভারতকে ধাক্কা দিতে রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করছে চিন।

গোয়েল বলেন, চিন অন্যান্য দেশের সরবরাহ অব্যাহত রাখলেও ভারতকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ করেছে। পরিসংখ্যান বলছে, ভারতে প্রতিবছর অন্তত 4 লক্ষ টন সারের প্রয়োজন হয়। যার বেশিরভাগটাই আসে চিন থেকে। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে, কেন শুধুমাত্র চিনের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে ভারতকে? বিকল্প হিসেবে উঠে আসছে, রাশিয়ার নাম।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেন সারের জন্য শুধুমাত্র ড্রাগনের ওপর নির্ভর করে থাকতে হবে আমাদের? যদিও বাস্তব অর্থে, চিন থেকে কম দামে ভাল মানের সার পাওয়ার কারণেই আমদানির ক্ষেত্রে ড্রাগনের ওপরই বেশি ভরসা ভারতের।

অবশ্যই পড়ুন: RBI-র এক সিদ্ধান্তে ব্যাঙ্কের মনমর্জি বন্ধ, বিরাট স্বস্তি গ্রাহকদের মধ্যে

উল্লেখ্য, চিনের তরফ WSF নিয়ে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার পর মুখ খুলেছেন গুজরাতের WSF প্রস্তুতকারক ললিত কুমার পেরিওয়াল। তাঁর বক্তব্য, বর্তমানে দেশে দু মাসের মতো সার মজুদ আছে। এরপরই পেরিওয়াল বলেন, শুধুমাত্র এখনই নয়, এর আগে 2023 সালে চিন প্রথমবারের মতো সারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

তবে পরবর্তীতে তা তুলে নেওয়া হলে আমদানি সচল ছিল। কিন্তু এবার ফের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা দিল ড্রাগন। এরপরই ললিত কুমার বলেন, যত দ্রুত সম্ভব WSF-কে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন থেকে বাদ দিতে হবে। এবং সেই সাথেই দেশের মাটিতে কীভাবে এই সারের উৎপাদন বাড়ানো যায় সেদিকেই নজর দিতে হবে আমাদের!

Leave a Comment