সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: না ছিল কোনও বড় ডিগ্রি, না ছিল শহরে চাকরির অভিজ্ঞতা। শুধু সাহস আর নিজের পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা দিয়েই জমিয়ে ফেলল ৪০০ কোটি টাকার সাম্রাজ্য! হ্যাঁ, আমরা বলছি এক বিহারের সাধারণ অটো চালক দিলখুশ কুমারের (Rodbez CEO Dilkhush Kumar) কথা। কিন্তু কীভাবে এই অসাধ্য সাধন করলেন তিনি? জানুন আজকের প্রতিবেদনে।
আসলে বিহারের এক ছোট্ট শহরে হাতে উচ্চ মাধ্যমিক পাস সার্টিফিকেট নিয়ে একসময় তিনি সিকিউরিটি গার্ড নিয়োগের লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁর আসল খিদে ছিল রোজগারের। কিন্তু শিক্ষাগত যোগ্যতা কম থাকার কারণে তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এতেই বেড়ে ওঠে তাঁর মনোবল।
হাতে উঠল অটোর স্টেয়ারিং
তবে পেটে খিদে নিয়ে তিনি নেমে পড়েন অটো চালাতে। তনে তিনি সেখানে উপলব্ধ করেন যে মানুষ দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে কত সমস্যায় পড়েন। শহরের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে যাওয়ার জন্য নিরাপদ নির্ভরযোগ্য আর সাশ্রয়ী ট্যাক্সে পরিষেবা তখন ছিল না বললেই চলে। সেই সমস্যার স্থায়ী সমাধান খুঁজে পেলেন দিলখুশ। সামান্য পুঁজি দিয়েই তিনি শুরু করে দিলেন Rodbez নামের একটি প্ল্যাটফর্ম। কারণ, তাঁর ভাবনা ছিল নিজস্ব কোনও গাড়ি নয়, বরং এমন একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার, যা যাত্রীদেরকে বিশ্বাসযোগ্য ট্যাক্সি চালকদের সঙ্গে সংযোগ ঘটাবে।
জানা যায়, ২০২১ সালে তিনি এই Rodbez অ্যাপটিকে চালু করেন। আর তাঁর উদ্যোগ এতটাই শক্তিশালী ছিল যে, প্রথম বিনিয়োগেই ৪০ লক্ষ টাকা পেয়ে যান। পাশাপাশি গ্রাহকদের নিরাপত্তার জন্য তিনি প্রতিশ্রুতি দেন যে, ড্রাইভারের ভুলে যদি যাত্রীরা ফ্লাইটের টিকিট মিস করে, তবে Rodbez আবার নতুন করে টিকিট বুক করে দেবে। এরকম নিশ্চয়তা বিহারে আগে কেউ কখনো দেখেনি। তাই এই অ্যাপের জনপ্রিয়তা আরও হু হু করে বাড়ে।
আরও পড়ুনঃ ফের ED-র গেরোয় অনিল আম্বানি! ১৪০০ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা
অটো চালক থেকেই ৪০০ কোটি টাকার সাম্রাজ্যের মালিক
উল্লেখ্য, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে Rodbez শুধুমাত্র পরিষেবার দিক থেকে নয়, বরং বিরাট কর্মসংস্থানের ব্যবসাতেও পরিণত হয়েছে। বর্তমানে হাজার হাজার মানুষ এই সংস্থার মাধ্যমে কাজ পায়। এমনকি কোম্পানির টার্নওভার পৌঁছয় ১০০ কোটি টাকার ঘরে। আর বর্তমানে দিলখুশ কুমার ৪০০ কোটি টাকার মালিক। তাই সাধারণ একজন অটো চালক হয়েও পেটে যদি খিদে থাকে আর নিজের চিন্তাভাবনা যদি দৃঢ় হয়, তাহলে যেকোনও কিছুই যে সম্ভব তা হাতেনাতে করে দেখালেন এই দিলখুশ কুমার।