প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: চিকিৎসক অনিকেত মাহাতোর (Aniket Mahato) পোস্টিং নিয়ে একের পর এক বিতর্ক শুরু হয়েছিল বিগত কয়েক মাস ধরে। এবার সেই মামলায় সুপ্রিম কোর্টে বড় স্বস্তি পেলেন অনিকেত। তাঁর পোস্টিং মামলায় এবার কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ বহাল রাখল শীর্ষ আদালত। রাজ্যকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হল, রায়গঞ্জে নয়, জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতোকে পোস্টিং দিতে হবে আরজি কর হাসপাতালেই। রায়ের নির্দেশে মাথায় হাত রাজ্য সরকারের।
সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ রাজ্য সরকার
উল্লেখ্য, আর জি কর কাণ্ডে অন্যতম আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতোর পোস্টিং নিয়ে রাজ্যের সিদ্ধান্তকে আগেই খারিজ করে দিয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। তিনি জানিয়েছিলেন, রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ নয়, আরজি করেই পোস্টিং দিতে হবে অনিকেতকে। কারণ আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, পোস্টিং করার ক্ষেত্রে সাধারণত SOP মেনে চলা হয়, অনিকেতের ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। তাই এই সিদ্ধান্ত। কিন্তু সেই রায় মেনে নেয়নি রাজ্য তাই সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য। কিন্তু বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চও সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ বহাল রাখে। সব শেষে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। আর সেই মামলার শুনানিতে এবার ধাক্কা খেল রাজ্য।
হাইকোর্টের রায়কেই বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট
রিপোর্ট অনুযায়ী আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে অনিকেত মাহাতোর পোস্টিং সংক্রান্ত মামলা আদালতে উঠলে বিচারপতি জেকে মহেশ্বরী এবং বিচারপতি বিজয় বিশ্নোইয়ের বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দেয় যে, হাই কোর্টের নির্দেশের উপর কোনও হস্তক্ষেপ করবে না শীর্ষ আদালত। আরজি করের অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগেই পোস্টিং দিতে হবে অনিকেতকে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যকে ওই নির্দেশ কার্যকর করতে হবে। এরপরই সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় রাজ্য সরকারকে। রাজ্যের যুক্তি ছিল, একজন সরকারি কর্মী বা চিকিৎসক, নিজের পছন্দমতো জায়গা বেছে নিতে পারেন না। যার পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতিরা পাল্টা প্রশ্ন তোলেন কেন তাহলে সকলের ক্ষেত্রে SOP মেনে তালিকা তৈরি হলেও, অনিকেতের ক্ষেত্রে মানা হয়নি? তাই নিয়ে শুরু হল নয়া বিতর্ক।
আরও পড়ুন: শুধু বাংলার সীমান্তেই বেড়া দেওয়া বাকি, অনুপ্রবেশ ইস্যুতে তৃণমূলকে কড়া জবাব অমিত শাহের
প্রসঙ্গত, আরজি কর মেডিকেল কলেজে চিকিৎসক তরুণীকে ধর্ষণ-খুনের পর রাজ্য জুড়ে যে গণআন্দোলন শুরু হয়েছিল, তার প্রথম সারির অন্যতম মুখ ছিলেন অনিকেত মাহাতো। এদিকে চলতি বছর মে মাসে নোটিস আসে যে, অনিকেতকে পোস্টিং দেওয়া হয়েছে রায়গঞ্জে। শুধু তিনি নন তাঁর সঙ্গে আন্দোলনের আরও দুই মুখ দেবাশিস হালদার এবং আসফাকুল্লা নাইয়াকেও যথাক্রমে মালদহের গাজোল এবং হুগলির আরামবাগে পোস্টিং দেওয়া হয়। এ নিয়ে রাজনৈতিক অন্দরে বিস্তর বিতর্ক শুরু হয়। এরপরে সেই নোটিসের বিরোধিতা করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অনিকেত। আর তাতেই মামলার জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে।