কৃশানু ঘোষ, কলকাতাঃ প্রশাসন প্রতিশ্রুতি রাখে নি, উঠছে না বাস চালানোর খরচও, তাই অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যেতে পারে আরামবাগের বেসরকারি বাস পরিষেবা (Arambagh Bus Service)। বাস মালিক ও ইউনিয়নের দাবি, প্রশাসনিক বৈঠকে অস্থায়ী ব্রিজ নির্মাণ সহ অন্যান্য আশ্বাস দেওয়া হলেও বাস্তবায়ন হয়নি কিছুই, ফলে বসে যেতে পারে বেশ কিছু বাস। আর এই খবর চাউর হতেই নিত্য যাত্রীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে আশঙ্কা।
কী জানাচ্ছে বাস মালিক ও ইউনিয়নের কর্মকর্তারা?
৩ সেপ্টেম্বর, আরামবাগের একাধিক বেসরকারি বাস মালিক ও ইউনিয়নের কর্মকর্তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, ১৩ আগস্ট একটি বৈঠক হয়েছে প্রশাসনিক স্তরের অফিসারদের সাথে। সেখানে ‘হরিণখোলা’র মতো একটি অস্থায়ী ব্রিজ নির্মাণ করার আবেদন জানিয়েছল বাস মালিকরা। পাশাপাশি সেই ব্রিজ হলে টোল দেওয়ার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছিল বাস মালিকদের তরফ থেকে। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি কিছুই।
পাশাপাশি বাস মালিক ও ইউনিয়নের কর্মকর্তাদের আশঙ্কা, “ব্রিজের মেরামতের যা অবস্থা, এই গতিতে আগামী ২০২৬ সালেও এই ব্রিজ কি চালু হবে কিনা, তার কোনও গ্যারান্টি নেই।” এমনকি PWD ইঞ্জিনিয়ারের সাথে ব্রিজ কবে খুলবে এই বিষয়ে কথা বলেও মেলেনি কোনও সুদুত্তর। তবে অভিযোগ এখানেই শেষ নয়।
আরও পড়ুনঃ মেলেনা জল, চাষের অনুমতি! তৃণমূল নেতার নির্দেশে ৩ বছর একঘরে আরামবাগের পরিবার
রয়েছে একাধিক অভিযোগ!
বাস মালিক ও ইউনিয়নের কর্মকর্তাদের আরও অভিযোগ, “আমরা প্রশাসনিক স্তরের অফিসারদের কাছে আমাদের বাসচালক, কন্ডাক্টর এবং কর্মীদের বিনামূল্যে টয়লেটের ব্যবস্থা করে দিতে বলেছিলাম। সেই বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানালেও এখনও টয়লেট ব্যবহারের জন্য নেওয়া হচ্ছে ১০ টাকা করে। পাশাপাশি ৫–৬ ঘণ্টা বাস চালিয়ে এসে বাসচালক, কন্ডাক্টর এবং কর্মীদের পর্যাপ্ত বিশ্রামের জন্য নেই রেস্টরুমও। এই বিষয়ে আবেদন করেও মেলেনি কোনও সুরাহা।“
অন্য একটি অভিযোগে বলা হয়, “একাধিক প্রধান সড়ক, যেমন কামারপুকুর থেকে কালিপুর, খানাকুল থেকে আরামবাগ কালিপুর, বালিগঞ্জ রোড থেকে আরামবাগ কালিপুর পর্যন্ত টোটো-অটোর চলাচল বন্ধ রাখার আবেদন জানিয়েছিলাম আমরা। সেক্ষেত্রেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, কিন্তু নেওয়া হয়নি একটিও পদক্ষেপও। RTO প্রতিনিধিসহ প্রশাসনের তরফ থেকে এই মর্মে নিয়ম জারি করা হলেও সেই নিয়ম অমান্য করা হয়েছে।”
সবশেষে বাস মালিক ও ইউনিয়নের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, “আমরা ১৫ দিন নিজের খরচে বাস চালানোর কথা জানিয়েছিলাম, তা অতিক্রান্ত হয়েছে। আমরা ১০ সেপ্টেম্বর অবধি দেখবো। এরপর আমরা বাস পরিষেবা বন্ধ করে দেবো। কারণ, পরিস্থিতি এমন যে বর্তমানে বাস চালাতে গেলে আমাদের লাভের তুলনায় উল্টে দৈনিক ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা লোকসান হচ্ছে। অন্যদিকে বাস চালকরা যেখানে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা কামাতো, সেখানে তারা ২০০ থেকে ৩০০ টাকার বেশি কামাতে পারছে না। ফলে আমরা ধর্মঘটে না গেলেও, আমাদের বাস পরিষেবা নিজে থেকেই বন্ধ হয়ে যাবে।“ এই নিয়ে তাদের তরফ থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে।