প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: কিছুদিন আগে রাজ্যে ভোটার তালিকায় নাম তোলার ক্ষেত্রে বড়সড় গলদ ধরা পড়েছিল। রাজ্যের দুই ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার সহ মোট ৪ জনের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। এমনকি তাঁদের বিরুদ্ধে FIR-এর সুপারিশ করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিবকে কমিশন চিঠি পাঠিয়েছিল। তাই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। কিছুতেই চার আধিকারিকের সাসপেন্ড রেয়াদ করতে চাইছেনা মুখ্যমন্ত্রী। এমতাবস্থায় অফিসারদের বরখাস্ত করতে রাজ্যকে সময় বেঁধে দিল নির্বাচন কমিশন।
সময়সীমা বেঁধে দিল নির্বাচন কমিশন
টিভি ৯ বাংলার রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ৫ আগস্ট রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে চিঠি পাঠিয়েছিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। চিঠিতে স্পষ্টভাবে বারুইপুর পূর্বের ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার দেবোত্তম দত্ত চৌধুরী এবং AERO তথাগত মণ্ডল এবং ময়নার ERO বিপ্লব সরকার এবং এই বিধানসভা কেন্দ্রের AERO সুদীপ্ত দাসকে সাসপেন্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়। সুরজিৎ হালদার নামে এক ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের বিরুদ্ধে FIR এর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দিনের পর দিন পেরিয়ে গেলেও সেই নির্দেশিকা অনুযায়ী কাজ করছে না প্রশাসন। কেন এত বিলম্ব, তার উত্তর জানার জন্য বেঁধে দেওয়া হল সময়সীমা। জানানো হয়েছে, আগামী সোমবার, ১১ আগস্ট, তিনটের মধ্যে এই প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে।
নির্বাচন কমিশনকে তোপ মমতার
এদিকে কিছুদিন আগে চার আধিকারিকের সাসপেন্ড বিতর্কে ঝাড়গ্রামের জনসভা থেকে নির্বাচন কমিশনকে তোপ দেগে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সরকারী কর্মচারীদের ভয় দেখানো হচ্ছে। আমার ২ অফিসারকে নোটিস পাঠানো হয়েছে। কি না, তাঁদের সাসপেন্ড করা হল। আমরা বলি, তোমার নির্বাচন এখনও ঘোষণা হয়েছে? কোন আইনের বলে তুমি নোটিস পাঠাচ্ছ? সাসপেন্ড করছ। আর বলে দিচ্ছ, FIR করতে হবে। হবে না। আমি কারও পানিশমেন্ট হতে দেব না। এটা মাথায় রাখবেন।” যার ফলে রাজ্যের সঙ্গে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সংঘাত আরও তুঙ্গে উঠেছে।
আরও পড়ুন: ‘CBI অপদার্থ, ব্যারিকেড যতই দিক, নবান্ন অভিযান হবেই’, হুঙ্কার অভয়ার মা-বাবার
উল্লেখ্য, জাতীয় নির্বাচন কমিশনের এই কর্মকাণ্ডের পিছনে যে বিজেপির হাত আছে, তা মনে প্রাণে বিশ্বাস করছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাইতো নির্বাচন কমিশনকে আক্রমণ করে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিজেপির কথা ও ইশারায় কাজ করছে কমিশন।” এমনকি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বিজেপিকে আক্রমণ করে বলেন, “ওরা জানে আমি ভাঙি তবু মচকাই না। ওরা আমায় জব্দ করতে চাইলে, মানুষ ওদের স্তব্ধ করে দেবে। আমাকে শান্তিতে থাকতে দিন। আমি শান্তিতে থাকলে শান্ত হয়ে যাই। আমার বিরুদ্ধে বজ্জাতি করলে, আমি টর্নেডো হয়ে যাই।”