সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: এসএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় (WB SSC Case) ফের বড় ধাক্কা। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌগত চট্টোপাধ্যায় সাফ জানিয়ে দিলেন যে, চিহ্নিত অযোগ্যদের আর নতুন করে পরীক্ষায় বসার কোনোরকম অধিকার নেই। বিজ্ঞপ্তি বদল করে তাদের বাদ দিয়েই এবার নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে। আর এতে করে সমস্ত আশায় জল পরল চাকরিহারা প্রার্থীদের।
ঘটনার সূত্রপাত কীভাবে?
জানিয়ে রাখি, 2016 সালের এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে সুপ্রিম কোর্ট প্রায় 26 হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেয়। আর এরপর নতুন নিয়োগের জন্য 30 মে এসএসসি একটি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিও জারি করে। সেই বিজ্ঞপ্তিতে চিহ্নিত অযোগ্যদের নতুন করে অংশগ্রহণের সুযোগও দেওয়া হয়। আর তা নিয়েই শুরু হয় আইনি জটিলতা।
এই বিজ্ঞপ্তির বিরুদ্ধে একসঙ্গে 9টি মামলা দায়ের করা হয় হাইকোর্টে। আর সোমবার সেই মামলাগুলির শুনানিতে কমিশন এবং রাজ্যকে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি সৌগত চট্টোপাধ্যায় তিরস্কারও করেন।
বিচারপতির মন্তব্য
এদিন এসএসসি’র পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে প্রবীণ আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, সুপ্রিম কোর্ট কোথাও বলেনি যে, অযোগ্যরা পরীক্ষায় বসতে পারবে না। তবে এই যুক্তিতে ক্ষুব্ধ হয়ে বিচারপতি সৌগত চট্টোপাধ্যায় বলেন, এত বড় দুর্নীতির পরও কীভাবে অযোগ্যরা সুযোগ পায়? তারা প্রতারণা করে চাকরি পেয়েছে। তারা কেন ছাড় পাবে? এমনকি অযোগ্যরা 10 শতাংশ নম্বরের সুবিধাও কেন পাবে? তাদের শিক্ষক হিসেবে কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না।
এমনকি বিকাশ ভট্টাচার্য বলেছেন, এসএসসি’র বিজ্ঞপ্তি সুপ্রিম কোর্টের রায়কে লঙ্ঘন করে। অযোগ্যদের বাঁধা না দিয়ে এই বিজ্ঞপ্তি সম্পূর্ণ বেআইনি। যোগ্য শিক্ষক অধিকার মঞ্চের পক্ষ থেকে অনিন্দ্য মিত্র বলেছেন, চিহ্নিত অযোগ্যদের নাম শীর্ষ আদালত বাদ দিতে বলেছে। আর সেটা না করেই প্রতারকদের পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ ভারতের শীর্ষ ১০ ধনকুবেরের তালিকায় নেই টাটা! চমক দিচ্ছে আম্বানি, আদানি
হাইকোর্টের রায়ে কী বলা হল?
হাইকোর্ট এদিন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, চিহ্নিত অযোগ্য প্রার্থীরা নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনোভাবেই অংশ নিতে পারবে না। আর নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে। সেখানে বিষয়টিকে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের নির্ধারিত সময় সীমার মধ্যেই সমস্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
এ বিষয়ে এসএসসি’র তরফ থেকে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, সবারই পরীক্ষায় বসার অধিকার রয়েছে। কিন্তু যারা চিহ্নিত অযোগ্য, তারা আর বয়সের ছাড় পাবে না। তবে বিচারপতি বলেছেন, আইন ভাঙ্গা এবং প্রতারণা করে চাকরি পাওয়া ব্যক্তিরা কোনোভাবেই শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত হতে পারে না। তাই তারা আর পরীক্ষায় বসতে পারবে না।