সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: মহিলাদের স্বার্থ সুরক্ষা করার জন্য একের পর এক পদক্ষেপ নিচ্ছে অসমের হিমন্ত বিশ্ব শর্মা সরকার (Assam Government)। আর এবার নারীদের অধিকার রক্ষার জন্য নয়া আইন এনেছে রাজ্য। সোমবার জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে মুখ্যমন্ত্রী বহুবিবাহ নিষিদ্ধ করেছে। আর সরকারের নতুন এই আইনে একাধিক বিবাহের জন্য সাত বছরের কারাদণ্ডের বিধানও দেওয়া হয়েছে।
তবে প্রশ্ন উঠছে, এই আইন কি মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য প্রযোজ্য? নাকি শুধুমাত্র অন্যান্য ধর্মের লোকদের জন্যও প্রযোজ্য হবে? কারণ, একাধিক বিবাহের প্রথা বেশিরভাগ মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যেই বর্তমানে প্রচলিত। তবে অসম সরকার এ বিষয়ে কী বলল তা জানতে হলে পড়ুন আজকের প্রতিবেদন।
কী আইন আনা হল?
আগামী ২৫ নভেম্বর রাজ্যের বিধানসভায় বহুবিবাহ বন্ধ করার জন্য অসম সরকার যে বিল পেশ করবে, সেখানে অবৈধভাবে দ্বিতীয়বার বিয়ে করলে সাত বছরের কারাদণ্ডের প্রস্তাব দেওয়া হবে। রাজ্যের নারীদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যেই মুখ্যমন্ত্রী সন্তোষ ময়না প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের সূচনা করার সময় এই ঘোষণা করেছেন। উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী এ মাসে বেশ কয়েকবার আগামী বিধানসভা অধিবেশনে বহুবিবাহ বিলুপ্ত করার কথা বলেছিল। তবে সোমবারই তার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়েছেন, এবার অসমে আমরা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, কেউ একাধিকবার বিয়ে করলে তাকে সাত বছর জেল খাটতে হবে, সে যে ধর্মেরই হোক না কেন। এমনকি তিনি আরও জানিয়েছেন, আর কোনওরকম বিকল্প নেই। তোমার ধর্ম তোমাকে অনুমতি দিতে পারে। কিন্তু হিমন্ত বিশ্ব শর্মা আর বিজেপি সরকার কোনও দ্বিতীয় বা তৃতীয় বিবাহের অনুমতি দেবে না। আমরা অসমের নারী ও মেয়েদের মর্যাদা রক্ষা করবই।
পাশাপাশি তিনি এও বলেছেন, আমরা নারীদের ক্ষমতায়নের জন্যই এগোচ্ছি। আর এই আইনগুলি আরও জোরদার করা হবে। আমরা ইতিমধ্যেই বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে ফেলেছি এবং দুই বছরে ৮০০০ এর বেশি লোককে গ্রেফতার করে ফেলেছি। বহুবিবাহ বিরোধী আইন আমাদের এই ধরনের সামাজিক কুফলের বিরুদ্ধে লড়াই করবে আর আমাদেরকে আরও উৎসাহিত করে তুলবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
আরও পড়ুনঃ ধর্ষক বাবাকে বাঁচাতে নিজেই নিজের উপরেই হামলা! দিল্লির অ্যাসিড কাণ্ডে বড় তথ্য
উল্লেখ্য, শনিবার কাছাড় জেলার এক অনুষ্ঠানে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা রাজ্যের দুই সন্তান নীতি সম্পর্কেও কথা বলেছেন। সেখানে তিনি বলেন, বেশি সন্তানধারী মহিলাদের সরকারি কল্যাণমূলক প্রকল্প থেকে সরাসরি বাদ দেওয়া হবে, যার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী নারী উদ্যোক্তা যোজনাও অন্তর্ভুক্ত থাকছ। যদি কোনও মহিলা এবার তিন বা তার বেশি সন্তান নেয়, তাহলে সে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রাপ্য ঋণ থেকে বঞ্চিত হবে।