বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: আচমকা এল সাময়িক কর্মবিরতির নোটিস। আর তারপরই বন্ধ করে দেওয়া হল ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল জগদ্দলের জে জে আই চটকল (Factory Closed In Jagatdal)। প্রাথমিকভাবে কিছু না জানলেও সোমবার সকালে কারখানার সামনে সাময়িক কর্মবিরতি বা কারখানা বন্ধের নোটিস দেখে মাথায় হাত পড়ে যায় কর্মীদের। তারপরই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তারা। কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই উত্তেজনাময় পরিস্থিতি তৈরি হয় ওই চটকল চত্বরে। পরবর্তীতে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
কেন হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়া হলো কারখানা?
সূত্রের খবর, বিগত দিনগুলিতে কাঁচামালের ব্যাপক অভাব এবং দিনদিন মূল্য বৃদ্ধির কারণে বিরাট লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছে ওই কারখানার মালিকদের। আর তারপরেই সাময়িক কর্মবিরতি ঘোষণা করে বন্ধ করে দেওয়া হয় চটকলটিকে। তবে আচমকা নোটিস দিয়ে কারখানা বন্ধ করে দেওয়ায় মেজাজ ঠিক রাখতে পারলেন না শ্রমিকরা। সোমবার একপ্রকার বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন তাঁরা। ওই কারখানার শ্রমিকদের একাংশের বক্তব্য, ভাবতেই পারেননি এভাবে কর্ম দিবসের দিন কর্মহীন হয়ে যাবেন।
সূত্রের খবর, ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের ওই কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এক ধাক্কায় কাজ হারিয়েছেন প্রায় 5 হাজার শ্রমিক। প্রশ্ন উঠছে, এভাবে আচমকা কারখানা বন্ধ করে দেওয়ায় হাজার হাজার শ্রমিকের পেট চলবে কীভাবে? বলাই বাহুল্য, বিগত দিনগুলিতে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে ব্যাপক পাটের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, চরম অস্থিরতার কারণে সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশ থেকে পাট আমদানি করা যায়নি। তাতেই একপ্রকার ধাক্কা খেয়েছে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের চটকলগুলি।
আরও পড়ুনঃ পিছিয়ে গেল গঙ্গাসাগর সেতুর শিলান্যাস, কবে হবে? প্রকাশ্যে নতুন তারিখ
এর আগে টিটাগরের এম্পায়ার ও খড়দহের লুমটেক্স চটকল আচমকা বন্ধ করে দেয়া হয়। আর তারপরই কাজ হারান অসংখ্য শ্রমিক। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের চটকল শ্রমিকদের একটা বড় অংশের প্রশ্ন, এভাবে একের পর এক কারখানা বন্ধ হয়ে গেলে আগামী দিনে পেট চলবে কীভাবে? তার উপর অভিযোগ, কিছু কারখানা খোলা থাকলেও কাঁচামালের অভাবে প্রতিদিন কাজ থাকে না সকলের। সব মিলিয়ে, বাংলাদেশ থেকে পাট আমদানি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিরাট ক্ষতির মুখে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের চটকল কর্মীরা।
অবশ্যই পড়ুন: আফগানিস্তানে নিরাপদ নন রশিদ খান? মুখ খুললেন তারকা অলরাউন্ডার
প্রসঙ্গত, দিনের পর দিন চটকলগুলি বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়ে জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম জানিয়েছেন, “এতদিন 40 শতাংশ পাট আমদানি করা হতো বাংলাদেশ থেকে। তবে আপাতত সেই সুবিধা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পাটের ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তার উপর দেশে পাট উৎপাদনও অনেক কম। এর ফলে সরাসরি প্রভাব পড়েছে চটকলগুলিতে।” এদিকে বহু শ্রমিক বেকার হয়ে যাওয়ায় সমস্যা সমাধানে সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন।