আদিবাসী যুবককে মারধর সিভিকের, প্রতিবাদে তীর-ধনুক নিয়ে আরামবাগে রাস্তা অবরোধ মহিলাদের

Arambagh

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: এবার আরামবাগের (Arambagh) এক সাধারণ আদিবাসী যুবকের বিরুদ্ধেই সিভিক পুলিশের বেধড়ক মারধরের অভিযোগ! আর তার যোগ্য জবাব দিতে আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার বর্ধমান-আরামবাগ রোডে কয়েকশো মহিলা রাস্তায় নেমে পরল। তাও হাতে দা, কাঁচি, লাঠি-সোটা, তীর-ধনুক নিয়ে। যে যা সামনে পেয়েছে, তাই নিয়েই বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে তারা। তবে ওই যুবককে মারধরের পিছনে কারণ কী?

কেন এই বিক্ষোভ?

অভিযোগ উঠছে, গ্রামের ওই যুবক প্রতিদিনের মতোই কাজের উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছিল। মাঝপথে দুজন সিভিক পুলিশ হঠাৎ করে তাদেরকে আটকায়। আর কোনো কারণ ছাড়াই ব্যাপক মারধর শুরু করে। এমনকি যুবকের গায়ে চোটের দাগ এখনো পর্যন্ত স্পষ্ট। 

এক আন্দোলনকারী মহিলা নিজের ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলেছেন যে, ও ছেলে খুবই ভালো। কোনোদিন নেশা করে না, রাজনীতি করে না। শান্তভাবে নিজের কাজে যাচ্ছিল। সিভিক পুলিশ তাকে এভাবে মেরেছে, মনে হচ্ছে ও বিরাট কোনো অপরাধ করে ফেলেছে। যদি সত্যিই কোনো দোষ থাকত, তাহলে থানায় নিয়ে যেত, রাস্তায় ফেলে কেন মারল?

রিপোর্ট অনুযায়ী জানা যাচ্ছে, ওই ছেলেটি স্থানীয় এক রাইস মিলে কাজ করত। এমনকি নিত্যদিন ওই রাস্তা দিয়েই সে কাজে যেত। তবে হঠাৎ করেই সিভিক ভলেন্টিয়ারের এহেন আচরণের পিছনে কী কারণ রয়েছে, তা এখনো জানা যায়নি। প্রতিবাদী মহিলারা বলছে, সরকারের কর্মকর্তার পদে থেকেও সিভিক পুলিশ যদি সাধারণ মানুষের উপর এরকম মারধর করে, তাহলে মানুষের নিরাপত্তা কোথায়? 

এমনকি আরেক মহিলা বলেছে, আমরা সারাদিন-রাত খেটে ছেলেমেয়েদেরকে মানুষ করছি। অথচ পুলিশ চোর-ডাকাত ধরতে পারছে না, সাধারণ যুবকদের ধরে মারধর করছে, তাও কোনো অপরাধ ছাড়াই। এর যোগ্য বিচার চাই, আর কেন মেরেছে তার সঠিক উত্তরও চাই।

আহত যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে নিজেই জানিয়েছে যে, আমি শুধু বলেছিলাম আমি রাইস মিলে কাজ করি। আমি প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়েই যাই। না বিশ্বাস হলে আমার সঙ্গে গিয়ে জেনে নিন। তবে তারা কিছুই শোনেনি। বেদম মারধর করেছে। আমাকে কেন মারল, তা আমি নিজেও জানিনা।

আরও পড়ুনঃ মাসে ৫০০০ টাকা বিনিয়োগে অবসর জীবনে ৩.৫ কোটি রিটার্ন! দেখুন EPF-র হিসেব

উল্লেখ্য, গোটা ঘটনা নিয়ে গ্রাম জুড়ে ক্ষোভ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। পাশাপাশি আরামবাগ-বর্ধমান রাস্তায় ওই মহিলাদের বিক্ষোভে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ। দীর্ঘক্ষন ধরেই বহাল ছিল অবরোধ। যদি সত্যিই সিভিক ভলেন্টিয়ার দোষী প্রমাণিত হয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রশাসন কী ব্যবস্থা নেয়, এখন সেটাই দেখার।

Leave a Comment