বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: মেট্রো লাইনের একাধিক পিলারে ফাটল, বসে যাচ্ছে স্টেশনের বিভিন্ন অংশ। মূলত সেই সব কারণকে সামনে রেখেই 9 মাসের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশন। পাশাপাশি গোটা স্টেশন ভেঙে নতুন করে সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এমতাবস্থায়, শোনা যাচ্ছে নতুন খবর। রাইটসের দেওয়া সমীক্ষা রিপোর্ট দেখে এবার কলকাতা মেট্রোর একাধিক স্টেশনে সংস্কারের কাজ করতে পারে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই নাকি শহরের মেট্রো পরিষেবাকে সুস্থ রাখতে এবং যাত্রী নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে রাইটসকে দিয়ে সমীক্ষা করিয়ে নিয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
মেট্রো কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, ওই রিপোর্ট ইতিমধ্যেই জমা পড়ে গিয়েছে মেট্রো ভবনে। শীঘ্রই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে তা দিল্লির রেলবোর্ডের কাছে পাঠাবে মেট্রিভবন কর্তৃপক্ষ। আর সেখান থেকে সবুজ সংকেত পাওয়া মাত্রই নাকি শুরু হয়ে যাবে একাধিক মেট্রো স্টেশনের সংস্কারের কাজ।
কবি সুভাষ থেকে টালিগঞ্জ পর্যন্ত একাধিক স্টেশন প্রশ্নের মুখে!
সম্প্রতি কলকাতা মেট্রোর এক কর্মকর্তা দাবি করেছেন, কবি সুভাষ থেকে সরাসরি টালিগঞ্জ পর্যন্ত মেট্রো লাইন গিয়েছে আদিগঙ্গার ওপর দিয়ে। মূলত সেই কারণেই আদিগঙ্গার উপরে তৈরি প্রতিটি পিলারের স্থায়িত্ব প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
ওই মেট্রো কর্তার বক্তব্য, কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশন থেকে গীতাঞ্জলির মধ্যে একাধিক পিলারে চিড়, ফাটল ধরা পড়েছিল বহু আগেই। তবে প্রথম থেকেই বিষয়টিকে গুরুত্ব না দেওয়ার কারণেই আজ তার ফল ভোগ করতে হচ্ছে নিত্যযাত্রীদের।
বলা বাহুল্য, সম্প্রতি রাইটাসকে দিয়ে একটি লম্বা সমীক্ষা চালিয়েছে কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষ। আর সেই সমীক্ষা থেকেই উঠে এসেছে একাধিক সমস্যার কথা। বর্তমান পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী, উত্তম কুমার মেট্রো স্টেশন থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত মাটির ওপরের স্টেশনগুলির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, টালিগঞ্জ স্টেশনেও সমস্যা থাকতে পারে!
মেট্রোকর্তারা আশঙ্কা করছেন, কবি সুভাষ স্টেশন থেকে একেবারে টালিগঞ্জ পর্যন্ত যতগুলি স্টেশন রয়েছে প্রায় বেশিরভাগ স্টেশনের পিলারে চিড় বা হালকা ফাটল থাকার সম্ভাবনা প্রবল! আর সেই সব দিক মাথায় রেখেই ইতিমধ্যেই বড় সমীক্ষা চালিয়ে সমস্যা মেটাতে কোন প্রযুক্তি প্রয়োজন, তা নিয়ে ডিটেল প্রজেক্ট রিপোর্ট পেশ করেছে রাইটস। এবার সেই সমীক্ষার রিপোর্টে রেলবোর্ডের সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় রয়েছে কলকাতা মেট্রো। তা পাওয়া গেলেই শহরের লাইফলাইন অর্থাৎ মেট্রোর একাধিক স্টেশনে সংস্কারের কাজ শুরু করা যাবে বলেই আশা করা যাচ্ছে।
অবশ্যই পড়ুন: পন্থের মতোই অবস্থা হল ইংলিশ পেসারের, শেষ টেস্টে ধাক্কা খেল ইংল্যান্ড!
উল্লেখ্য, কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশন নতুনভাবে তৈরি না হওয়া পর্যন্ত, শহিদ ক্ষুদিরাম স্টেশন বা ব্রিজি স্টেশনটিকে প্রান্তিক স্টেশন হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে সমস্যা একটাই, এই স্টেশন থেকে যাত্রী ওঠানামা করলেও লাইন বদলের জন্য মেট্রোকে সেই কবি সুভাষ স্টেশনে যেতেই হয়। তবে নিউ গড়িয়া স্টেশন প্ল্যাটফর্ম ভাঙার পর লাইনের ক্ষতি হলে, সে ক্ষেত্রে ক্ষুদিরাম স্টেশন থেকে পরিষেবা চালানো সম্ভব হবে না।
কারণ, টালিগঞ্জ স্টেশনের পর একমাত্র কবি সুভাষ স্টেশনেই মেট্রো রেক আপ কিংবা ডাউনের জন্য অভিমুখ বদল করতে পারে। এদিকে শহিদ ক্ষুদিরাম স্টেশনে এখনও পর্যন্ত সেই পরিকাঠামো নেই। কাজেই, কবি সুভাষ স্টেশনের সংস্কারের কাজ শুরুর আগেই ব্রিজি স্টেশনে পরিকাঠামো এবং প্রয়োজনীয় কারিগরি ব্যবস্থা গড়ে তুলতেই হবে। অন্যথায়, দক্ষিণেশ্বর থেকে শহিদ ক্ষুদিরাম পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা অব্যাহত রাখা যাবে না!