‘আপস নয়, যেকোনও মূল্য চোকাতে রাজি!’ ট্রাম্পের শুল্ক বোমার পর মুখ খুললেন মোদী

India US Trade

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: বিশ্ব বাণিজ্য মঞ্চে ফের উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে। হ্যাঁ, ভারত-আমেরিকার মধ্যে দ্বন্দ্ব (India US Trade) দিনের পর দিন বাড়ছে। জেনেটিক্যালি মডিফাইড পণ্য ও দুগ্ধজাত আমদানি নিয়ে এবার কড়া বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দেশীয় কৃষি ও দুগ্ধ চাষিদের স্বার্থে যেকোনো মূল্য চোখাতেই প্রস্তুত বলে জানিয়ে দিল ভারত সরকার।

মোদির কড়া বার্তা

বৃহস্পতিবার দিল্লিতে এম.এস. স্বামীনাথনের শতবর্ষ উদযাপনের উপলক্ষে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, আমাদের কাছে দেশের কৃষকদের স্বার্থ সবথেকে বড়। ভারত কোনওসময় কৃষক, জেলে এবং দুগ্ধ চাষীদের স্বার্থের জন্য আপোস করবে না। আমি জানি, এর জন্য আমাদের অনেক মূল্য চোকাতে হবে এবং আমি তার জন্য প্রস্তুত।

কেন ভারতের আপত্তি?

আসলে আমেরিকা চাইছে, তাদের দুগ্ধজাত ও কৃষি পণ্য ভারতীয় বাজারে শুল্ক ছাড়াই ঢুকুক। বিশেষ করে কম দামে আমদানি করা মার্কিন দুধ এবং আপেল দেশের কৃষি পণ্যের উপর মারাত্মকভাবে চাপ ফেলবে। ভারতের আপত্তি মূলত দুইটি কারণে। প্রথমত, মার্কিন গবাদি পশুদের মূলত মাংসজাত খাবার খাওয়ানো হয়। ফলে সেই দুধকে আমিষ হিসেবেই মনে করছে ভারত। দ্বিতীয়ত, জেনেটিক্যালি মডিফাইড কৃষি পণ্য ভারতীয় কৃষির পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের দিক থেকে বিপজ্জনক বলেই মনে করা হচ্ছে।

ভারত দাবী করছে, বস্ত্র, চামড়া, অলংকার প্লাস্টিক, রাসায়নিক, চিংড়ির মতো পণ্যগুলোর উপর বিশেষ শুল্ক ছাড় দিতে হবে। পাশাপাশি ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম ও অটো খাতে শুল্ক হ্রাস করতে হবে। শুধু তাই নয়, 26% থেকে 50% পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত বাড়তি শুল্ক প্রত্যাহার করতে হবে।

ওদিকে আমেরিকা দাবি করছে, দুগ্ধজাত পণ্য, আপেল, ওয়াইন, ইভি, জেনেটিকালি মডিফাইড ফসলসহ একাধিক পণ্যের উপর শুল্ক ছাড় দিতে হবে। পাশাপাশি ভারতে মার্কিন কৃষিপণ্য ও দুগ্ধজাত পণ্যের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ ইটের জবাব পাটকেলে! আমেরিকার সাথে ৩১,৫০০ কোটি টাকার চুক্তি বাতিল করল ভারত

উল্লেখ্য, এখনও পর্যন্ত 5 দফা বৈঠক হয়েছে ভারত ও মার্কিন বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে। সর্বশেষ বৈঠক ওয়াশিংটনে হলেও তার ফলাফল ইতিবাচক হয়নি। 25 আগস্ট নির্ধারিত রয়েছে ষষ্ঠ দফার বৈঠক। আর এবার তা ভারতের মাটিতেই হবে। সূত্র বলছে, একাধিক মূল বিষয়ের উপর এখনো পর্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। যদিও দুই দেশ আগেই লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল যে, 2030 সালের মধ্যে নিজেদের মধ্যে বাণিজ্য 500 বিলিয়ন ডলারের পৌঁছানো। এখন আগামী বৈঠকে কী হয়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

Leave a Comment