আবাসের আশায় ভাঙেন মাটির বাড়ি, ১০ মাস ধরে খোলা আকাশের নীচে বাস পরিবারের!

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনাকে কেন্দ্র করে একের পর এক বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে। রাজ্যের একাধিক জেলায় উঠে এসেছে এই প্রকল্পকে ঘিরে দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ। এও দেখা গিয়েছিল যে যাঁদের দুই তিন তলা বাড়ি রয়েছ তাঁরাও আবাস যোজনায় ঘর পাওয়ার জন্য আবেদন করেছেন।

যার জেরে কেন্দ্র আবাস যোজনার জন্য টাকা দেওয়াও বন্ধ করে দিয়েছে রাজ্যকে। তবে এবার দেখা গেল আরেক ঘটনা। আবাস যোজনার পাকা বাড়ির আশায়, মাটির ঘর ভেঙে ফেলে বিগত ১০ মাস ধরে গাছতলাতেই থাকছে পরিবার!

ঘটনাটি কী?

ঘটনাসূত্রে জানা গিয়েছে, মধ্যপ্রদেশের ধার জেলার লোহারি গ্রামে চার জনের সংসার নিয়ে গৌড়া বাঈ নামে এক বৃদ্ধা মাটির বাড়িতে বসবাস করতেন। ছোটবেলায় বিয়ে করে ওই গ্রামে এসেছিলেন। এরপর বহু বছর কেটে গিয়েছে, মাঝে স্বামী এবং পুত্রের মৃত্যুও হয়ে গিয়েছে। এখন তাঁর এই মাটির বাড়িতে শুধু রয়েছেন তিনি, তাঁর বিধবা পুত্রবধূ এবং নাতি-নাতনি। কিন্তু এখন সেই মাটির বাড়িও আর নেই। থাকতে হচ্ছে এখন গাছের তলায়। আর তার অন্যতম প্রধান কারণ হল প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা।

মাটির ঘর ছেড়ে গাছের তলায় বাস বৃদ্ধার!

গৌড়া বাঈ নামের সেই বৃদ্ধা জানান, গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান এবং পঞ্চায়েত সচিব নাকি তাঁকে বলেছিল যে তিনি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি পেয়েছেন। কিন্তু বাড়ি পেতে গেলে তাঁকে আগে মাটির বাড়িটি ভেঙে ফেলতে হবে! কারণ, যখন পরিদর্শনে আসবেন অফিসাররা, তখন যেন দেখা যায় তাঁর কোনও বাড়ি নেই।

এদিকে সেই পাকা বাড়ির আশায় বৃদ্ধা ভেঙে ফেলেন মাটির বাড়ি। আশ্রয় নেন কাছের বড় বাবুল গাছের নীচে। কিন্তু পাকা বাড়ি আর আসেনা। তার পর থেকে বার বার গ্রাম পঞ্চায়েত, ব্লক অফিসে ছোটাছুটি করছেন, কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না।

অসহায়তার অভিযোগ পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে

এই বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমের আওতায় আসলে গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান অমর সিংহ তাঁর উল্টো সুর ধরে। তাঁর কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার সুবিধাভোগীদের তালিকায় গৌড়ার নাম দেখতে পেয়েই বিষয়টা আমরা তাঁকে জানাই। কিন্তু পরে দেখা যায় অনলাইনে আর তাঁর আবেদন এগোয়নি। এখন আর পঞ্চায়েত পর্যায়ে কিছু করা যাবে না। তাঁকে কালেক্টর বা মহকুমা অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।’’

আরও পড়ুন: বিরাট ভোগান্তি! ১৩ দিন চলবে না বহু লোকাল ট্রেন থেকে এক্সপ্রেস, বিজ্ঞপ্তি দক্ষিণ পূর্ব রেলের

পাশাপাশি মহকুমাশাসক প্রিয়ঙ্ক মিশ্র জানান, “এই বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ছিলেন না। এখন বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। অগ্রাধিকার দিয়ে বিবেচনা করব।’’ অন্যদিকে ব্লক অফিসের এক আধিকারিক জানায় ‘‘যখন বৃদ্ধা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার জন্য অনলাইনে আবেদন করে তখন সিস্টেমে বেশ কিছু ত্রুটি দেখা দেয়। দ্রুত সমাধান বার করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’

Leave a Comment