আমন্ত্রণ পেয়েও যাননি পাঁচ লক্ষের গীতা পাঠের আসরে! এবার কারণ ব্যাখ্যা করলেন মমতা

Mamata Banerjee

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সামনেই ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। আর সেই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একের পর এক পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে রাজনৈতিক দলগুলি। এমতাবস্থায় ভোটের আগে ফের ধর্মীয় আবহে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। গতকাল অর্থাৎ রবিবার ব্রিগেডের ময়দানে ‘৫ লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ’-এর মহাআয়োজন করেছিল সনাতন সংস্কৃতি সংসদ। সেই অনুষ্ঠানে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম হয়। উপস্থিত ছিলেন দেশের বহু সাধু-সন্ত থেকে রাজ্যের বিজেপি নেতারা। জানা গিয়েছে সেই অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ পত্র পাঠানো হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও (Mamata Banerjee)। কিন্তু সেখানে যাননি তিনি, এবার তাই অনুপস্থিতির কারণ স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন মমতা।

গীতাপাঠের অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন মমতা

উল্লেখ্য, গত লোকসভা ভোটের আগেও ব্রিগেডে আয়োজন করা হয়েছিল ‘লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ’। এবারেও তার অন্যথা হয়নি। বিধানসভা নির্বাচনের আগে আরও একবার একই জায়গায় গীতাপাঠের আয়োজন করা হয়েছিল গতকাল অর্থাৎ রবিবার। গীতাপাঠে যোগ দিয়েছিলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। আর সেই অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও। কিন্তু গতকালের অনুষ্ঠানে তাঁকে আর দেখা যায়নি, এবার সেই নিয়ে ভিন্ন সুর তুলেছেন বিরোধীরা। এমতাবস্থায় মুখ খুললেন তৃণমূল সুপ্রিমো। রিপোর্ট অনুযায়ী, আজ কোচবিহার যাওয়ার আগে বিমানবন্দরে গীতা পাঠের কর্মসূচি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি স্পষ্ট জানান এটি বিজেপির অনুষ্ঠান তাই সেই কারণে তিনি অংশ নেননি।

অনুপস্থিতির কারণ ব্যাখ্যা মমতার

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিকদের গীতা পাঠের অনুষ্ঠানে না যাওয়ার প্রসঙ্গে বলেন যে, ‘আমি বিজেপির অনুষ্ঠানে কীভাবে যাব? আপনারাই আমাকে বলুন। এটা যদি কোনও নিরপেক্ষ অনুষ্ঠান হত, নিশ্চয়ই যেতাম। কিন্তু আমি বিজেপির কর্মসূচিতে কীভাবে যাব? আমার তো একটা নীতি আছে। সেই প্রটোকল ভেঙে আমি যেতে পারি না। তবে মনে রাখবেন আমি সর্বধর্ম সমন্বয়ে বিশ্বাস করি। সব ধর্মকে সম্মান করি। সব ধর্ম, সব জাতি, সব বর্ণকে সম্মান করি। কিন্তু যেখানে বিজেপি সরাসরি যুক্ত, সেখানে আমি যাব কী করে বলুন তো?” বিরোধীদের এদিন ধিক্কার জানিয়ে বলেন, “ওরা বলছে নেতাজিকে ঘৃণা করে, গান্ধীকে মানে না। আমার বাবা-মা আমাকে এই শিক্ষা দেয়নি। আমার বাংলার মাটি, আমাদের শিক্ষকরা এই শিক্ষা দেননি। বাংলাকে যারা অপমান করে, অসম্মান করে তাদের সঙ্গে আমি নেই।”

আরও পড়ুন: হাওড়া থেকে বিনা টিকিটে ৩০০ যাত্রীকে বন্দে ভারতে যাত্রার অনুমতি দিল রেল

প্রসঙ্গত, গতবারের মতো এবারও গীতাপাঠের অনুষ্ঠানে মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত। এদিনের ধর্মগুরুদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ধীরেন্দ্রকৃষ্ণ শাস্ত্রী। তিনি কলকাতার গীতা পাঠের ভিড়কে মহাকুম্ভের সঙ্গে তুলনা করেন। বলেন, ‘কলকাতার পবিত্র ভূমিতে পাঁচ লক্ষ মানুষ একসঙ্গে গীতা পাঠ করলেন। যে উচ্ছ্বাস, যে ভক্তির জোয়ার চোখে পড়ল, তাতে মনে হচ্ছিল যেন কলকাতায় মহাকুম্ভ বসেছে। এই বাংলার মানুষই পারে দেশকে হিন্দু রাষ্ট্র বানাতে।

Leave a Comment