সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: চুঁচুড়ার বাণীমন্দির স্কুলকে ঘিরে রাজনৈতিক টানাপড়েন হুগলির রাজনীতিকে আরো উত্তপ্ত করে দিচ্ছিল। প্রকাশ্যে মুখোমুখি হয়েছিল দুই দলের প্রতিনিধি, তৃণমূলের সংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় (Rachna Banerjee) আর বিধায়ক অসিত মজুমদার। অভিযোগ উঠছিল, সাংসদর তহবিলে স্মার্ট ক্লাসরুম তৈরির কাজকে ঘিরেই। পাশাপাশি স্কুল চত্বরে বিধায়কের আচরণে শিক্ষিকাদের ক্ষোভের কথা শুনে সাংসদ প্রকাশ্যে ক্ষুব্ধ হন। আর তারপরেই শুরু হয় দ্বন্দ্ব। তবে সেই অধ্যায়ের ইতি টানলেন বিধায়ক নিজেই।
রবিবার তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অসিত বলেছেন যে, রচনা তো আমার বোনের মতো। ওর সঙ্গে আমার কোনো দূরত্ব নেই। সাময়িক একটা ভুল বোঝাবুঝি নিয়েই এই পরিস্থিতি। তার পেছনে বিজেপি আর সিপিএম রয়েছে। ওরাই আমাদের সম্পর্ক নষ্ট করতে চাইছে।
ঠিক কী ঘটেছিল?
আনন্দবাজারের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই ঘটনার সূত্রপাত বাণীমন্দির স্কুলের স্মার্ট ক্লাসরুম তৈরির প্রকল্পকে ঘিরে। সাংসদ তহবিল থেকে ওই কাজের আর্থিক সহায়তা আসার পর অভিযোগ উঠছিল যে, বিধায়ক স্কুলে গিয়ে শিক্ষিকাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছে। পাশাপাশি অনুমতির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, এমনকি গালিগালাজও করেছেন।
এরপরই বৃহস্পতিবার ওই স্কুল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন রচনা। শিক্ষিকাদের থেকে সমস্ত ঘটনার বিবরণ শুনে তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আমি বাকরুদ্ধ। শিক্ষিকাদের সঙ্গে এরকম ব্যবহার আমি বিশ্বাস করতে পারছি না। তৃণমূলের একজন বিধায়কের এরকম আচরণ আমি মেনে নিতে পারি না। কার কত দম আছে আমি দেখব। আমি সাধারণ মানুষের পাশে আছি, স্কুলেরও পাশে থাকব।
প্রথমে বিধায়ক অসিত মজুমদার প্রকাশ্যে কোনোরকম মন্তব্য করেনি। তিনি বলেছিলেন, দলের সাংসদদের বিরুদ্ধে কিছু বলব না। পরদিন অবশ্য সুর চড়িয়ে তিনি জানান, তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বদের কাছে রচনার আচরণ নিয়ে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে। এরপর তিনি বলেছেন, রচনা আমার বোনের মতো। ও যা করেছে, তা নিয়ে কিছু বলব না।
আরও পড়ুনঃ বাংলায় SIR আতঙ্ক! বার্থ সার্টিফিকেটের জন্য হুড়োহুড়ি রাজ্যের পুরসভায়
তবে রবিবার সব বিতর্কে জল ঢেলে দিল অসিত নিজেই। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এক বৈঠকের পর তিনি জানিয়েছেন, রচনাকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাঠিয়েছেন। আমরা একসঙ্গে নির্বাচনে লড়েছ, আর একসঙ্গে কাজ করব। রচনা যদি আমার কথায় দুঃখ পেয়ে থাকে, তাহলে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত ও অনুতপ্ত। আমি ওর কাছে ক্ষমা চেয়ে নেব। এরপর বিজেপি আর সিপিএমকে দায়ী করে তিনি বলেন, ওরাই আমাদের মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি করতে চাইছে। রচনার সঙ্গে আমার কোনোরকম মনোমালিন্য নেই।