আমেরিকাকে ঝটকা! ফ্রান্সের সাথে হাত মিলিয়ে স্বদেশী ফাইটার জেট ইঞ্জিন তৈরি করবে ভারত

Fighter Jet Engine

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ইতিহাস গড়ার পথে এবার ভারত! বহুদিনের স্বপ্ন পূরণে দেশীয় স্টেলথ ফাইটের জেটের নিজস্ব শক্তিশালী ইঞ্জিন (Fighter Jet Engine) তৈরি করবে এবার দিল্লি। হ্যাঁ, এই প্রকল্পে ভারতের পাশে থাকছে ফ্রান্স। প্রতিরক্ষা গবেষণা এবং উন্নয়ন সংস্থা ডিআরডিও খুব শীঘ্রই এই প্রকল্পটি কেবিনেট কমিটি অন সিকিউরিটির জন্য অনুমোদন পাঠাবে বলে জানা গিয়েছে।

100% প্রযুক্তি হস্তান্তর করবে এবার ফ্রান্স

সরকারি সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, ফ্রান্সের বিখ্যাত সংস্থা Safran এই প্রকল্পে এবার ভারতের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করবে। সবথেকে বড় ব্যাপার, Safran পুরোপুরি প্রযুক্তি হস্তান্তর করবে। আর এর ফলে 120 কিলোনিউটন ক্ষমতার নতুন ইঞ্জিন ভারতেই তৈরি করা হবে।

এদিকে ডিআরডিও ইতিমধ্যেই Safran-এর প্রস্তাব মেনে নিয়েছে। এমনকি সংস্থাটি আগে থেকেই ভারতের বিভিন্ন হেলিকপ্টার ইঞ্জিন তৈরি করেছে বলে খবর। আর এবার তাদের মূল লক্ষ্য পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান AMCA-এর ইঞ্জিন তৈরি করা। জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পে ডিআরডিও’র ল্যাব GTRE কাজ করবে। আর এর জন্য মোটামুটি 7 বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ হবে।

সবথেকে বড় ব্যাপার, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে সবুজ সংকেত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আমরা আমাদের পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান তৈরির পথে এগোচ্ছি। আর এবার ফ্রান্সের সহায়তায় দেশেই তৈরি হবে যুদ্ধবিমান ইঞ্জিন উৎপাদনের কাজ।

কেন গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্প?

উল্লেখ্য, এতদিন ভারতের সবথেকে বড় সমস্যা ছিল নিজস্ব এয়ার ইঞ্জিন তৈরি করতে না পারা। মার্কিন সংস্থা GE-র কাছ থেকে 99টি GE-F404 টার্বোফ্যান ইঞ্জিন ডেলিভারিতে ইতিমধ্যেই প্রায় দুই বছর দেরি হয়েছে। আর এই বিলম্বের কারণে তেজস মার্ক-1A যুদ্ধবিমানের উৎপাদনে থমকে গিয়েছে। এর পাশাপাশি অস্ত্র ও রাডার ইন্টিগ্রেশনে হচ্ছিল সমস্যা। এ কারণেই দেশীয় ইঞ্জিন তৈরি করতে উদগ্রীব কেন্দ্রীয় সরকার।

আরও পড়ুনঃ SBI-র অভিযোগ! ১৭,০০০ কোটির ব্যাঙ্ক জালিয়াতি কাণ্ডে অনিল আম্বানির বাড়িতে CBI হানা

এদিকে হিন্দুস্থান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড এবং জেনারেল ইলেকট্রিক ইতিমধ্যেই GE-F404 ইঞ্জিনকে কো-প্রোডাকশনের জন্য চালানোর আলোচনা চালাচ্ছে। আর এই ইঞ্জিন মূলত 98 কিলোনিউটন শ্রেণীর। কিন্তু এখানে প্রযুক্তি হস্তান্তর হবে মাত্র 80% আর এর জন্য প্রায় 1.5 বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করা হবে।

জানিয়ে রাখি, পরিকল্পনা অনুযায়ী, যুদ্ধবিমান AMCA 2035 সালের মধ্যেই উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে। আর এতে অভ্যন্তরীণ অস্ত্র ব্যবস্থা, আধুনিক সেন্সর ফিউশন সহ স্টেলথ ডিজাইন থাকবে। বিশেষ করে এর সার্পেন্টাইন এয়ার-ইন্টেক প্রযুক্তি শত্রুপক্ষের রাডার থেকে বিমানকে আড়াল করবে। এমনকি ভারতীয় বায়ুসেনা মোট 126টি AMCA অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়েছে। এখন শুধু আগামী দিনের অপেক্ষা।

Leave a Comment