আমেরিকা, NATO-র আপত্তি সত্ত্বেও ভারতে আসছে পুতিন! নেপথ্যে কারণ কী?

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: বিশ্বজুড়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের উত্তেজনা এমনিতেই তুঙ্গে। আর ঠিক সেই আবহে দিল্লিতে কূটনৈতিক সমীকরণ তৈরি হতে চলেছে। আমেরিকা ও নেটোর আপত্তি সত্ত্বেও রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন (Vladimir Putin) এবার ভারতে আসছে। 2025 সালের শেষ নাগাদ অনুষ্ঠিত হতে চলা ভারত-রাশিয়া বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্যই তার এই ভারত সফর বলে মনে করা হচ্ছে। 

আসলে 2021 সালের পর এই সম্মেলন প্রথমবার ভারতের মাটিতে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। আর ঠিক এমন এক সময়ে এই সফর অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন আমেরিকা এবং ইউরোপীয় দেশগুলি দিনের পর দিন রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা চাপাচ্ছে, আর ভারতকে রুশ প্রতিরক্ষা ও জ্বালানি সহযোগিতা কমিয়ে বিপাকে ফেলছে।

কী জন্য এই বার্ষিক বৈঠক?

HT-র এক রিপোর্ট মারফৎ জানা যাচ্ছে, এবারের এই বার্ষিক বৈঠকে একাধিক কৌশলগত বিষয়ে আলোচনা করা হবে। যার মধ্যে থাকছে প্রতিরক্ষা শিল্পে সহযোগিতা বৃদ্ধি, উচ্চ প্রযুক্তি খাতে যৌথ রোডম্যাপ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া, আর্কটিক অঞ্চলে ভারতের ভূমিকা বাড়ানো এবং জ্বালানি ও পরমাণবিক শক্তি প্রকল্পে যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করা।

সম্প্রতি রুশ প্রেসিডেন্ট নিজেই জানিয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অনুরোধেই রাশিয়া ভারতে সার রপ্তানি বাড়িয়েছে, যা ভারতের খাদ্য নিরাপত্তায়ও বিরাট অবদান রেখেছে। এমনকি এই সফরের সময় ভারত-রাশিয়া যৌথভাবে নতুন একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনের চুক্তিও চূড়ান্ত করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

তাহলে ভারতের আপত্তি কোথায়?

এদিকে আমেরিকার নেতৃত্বাধীন পশ্চিম বিশ্ব বরাবর ভারতের উপর চাপ সৃষ্টি করছে, যাতে রাশিয়ার সঙ্গে প্রযুক্তি ও সামরিক খাতে ভারত সম্পর্ক কমায়। যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে, রাশিয়ার সঙ্গে এই ধরনের সহযোগিতা পশ্চিম দিকের নিষেধাজ্ঞা ও কৌশলগত জোট G7-র অবস্থানকে আরো দুর্বল করে দিতে পারে।

আরও পড়ুনঃ মেট্রোর মতো সব লোকাল ট্রেনে AC, দিতে হবে না অতিরিক্ত ভাড়া! বিরাট পদক্ষেপ মহারাষ্ট্রে

জানিয়ে দিই, এই সফরের আগে সর্বশেষ মোদি ও পুতিনের বৈঠক হয়েছিল অপারেশন সিঁদুর শুরু হওয়ার আগে। ভারত যখন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছিল, রাশিয়া তখন ভারতের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল। বিশেষজ্ঞরা মনে করছে, S-400 মিসাইল সিস্টেম এবং ব্রহ্মস প্রকল্পে রাশিয়া সহযোগিতা করাতেই পাকিস্তান চাপে পড়ে গিয়েছিল।

এবার যদি চিন SCO সম্মেলনের আয়োজন করে এবং সেখানে মোদির সফর নিশ্চিত হয়, তাহলে আরো একবার মোদি এবং পুতিন মুখোমুখি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আর সেই সুযোগে রাশিয়া-ভারত দিপাক্ষিক সম্পর্ক যে আরো জোরদার হবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

Leave a Comment