সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ভারতের সবথেকে উদার দশজন ধনকুবের (Generous Billionaires in India) কারা? এই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করলে হয়তো অনেকেই সঠিক উত্তর দিতে পারবে না। আসলে এই সমস্ত বিলিয়নেয়াররা ৯৯% ক্লাবের অন্তর্ভুক্ত। তারা মৃত্যুর পর তাদের ৯৯ শতাংশ সম্পদ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু কারা সেই দশজন মুখ? জানতে হলে অবশ্যই প্রতিবেদনটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
শিব নাদার
এইচসিএল টেকনোলজিসের কর্ণধার এবং তার পরিবারের বর্তমানে বার্ষিক দানের পরিমাণ প্রায় ২৭০০ কোটি টাকারও বেশি, হ্যাঁ শিব নাদার প্রতিদিন ৭.৪ কোটি টাকা দান করেন বলেই রিপোর্ট অনুযায়ী খবর, তাও মূলত শিক্ষার জন্য। এমনকি তালিকায় শীর্ষস্থান অর্জনের পর তার অবদান ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে প্রায় ২৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
মুকেশ আম্বানি
রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের কর্ণধার ৬৮ বছরের বয়সী মুকেশ আম্বানি এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন। রিপোর্ট বলছে, তিনি বার্ষিক ৬২৬ কোটি টাকা জনহিতকর কাজে অবদান রাখেন। মূলত গ্রামীণ অবকাঠামো রূপান্তর, স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষা, ক্রীড়া উন্নয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, নারীদের ক্ষমতায়ন, ইত্যাদিতেই তিনি মননিবেশ করেন।
বাজাজ পরিবার
তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাজাজ পরিবার। পূর্ববর্তী রেকর্ডের তুলনায় তাদের দানের পরিমাণ ২৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এখন তারা স্বাস্থ্যসেবা খাতেই বার্ষিক ৪৪০ কোটি টাকার বেশি অবদান রাখেন। এর পাশাপাশি শ্রী জামনালাল বাজাজ এবং শ্রী কমলনয়ন বাজাজের জনহিতকর উত্তরাধিকারকে সম্মান জানানোর জন্য তারা বাজাজ ট্রাস্ট এবং বাজাজ ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছেন।
কুমার মঙ্গলম বিড়লা
৯৮ বছর বয়সী এই ধনকুবের বছরে প্রায় ৪৪০ কোটি টাকা করে দান করছেন, যার ২০%-এর বেশি আসে তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকেই। তিনি মূলত জনহিতকার প্রচেষ্টা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, নারীর ক্ষমতায়ন ইত্যাদি কাজগুলোতেই এই বিপুল পরিমাণ টাকা দান করে থাকেন। এমনকি ফাউন্ডেশনটি প্রতিদিন ১ কোটি টাকার বেশি অনুদান দিয়ে থাকে।
গৌতম আদানি
আদানি গ্রুপের কর্ণধার গৌতম আদানি ৩৮৬ কোটি টাকা দান করে জনহিতকর কাজে অবদান রাখেন এবং এই তালিকায় পঞ্চম স্থান দখল করে রেখেছেন। গত বছরের তুলনায় এই পরিমাণ ১৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাঁর এই দান মূলত প্রাথমিকভাবে শিক্ষার দিকেই পরিচালিত করছে। এছাড়া দক্ষতা উন্নয়ন ও সম্প্রদায়িক স্বাস্থ্য কর্মসূচিতেও তিনি প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।
রোহিনী নীলেকানি
এরপর রয়েছে রোহিনী নীলেকানি ফিলানথ্রপিজের চেয়ারপারসন। ১৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধির সাথে তিনি একাই বছরে ৩৬৫ কোটি টাকা দান করে থাকেন। লক্ষ্যের প্রতি অঙ্গীকার রেখেই তিনি তার বিপুল পরিমাণ সম্পদ জনহিতকর কাজে দান করেন ।
সুধীর এবং সমীর মেহতা
রিপোর্ট বলছে, মেহতা পরিবার ২০২৫ সালে শীর্ষ ১০ জন দানশীল ব্যক্তির তালিকায় পাকাপোক্তভাবে জায়গা করে নিয়েছে। তারা বছরে মোট ১৯৯ কোটি টাকা দান করেন। ইউএনএম ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে পরিচালিত তাদের দান মূলত স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, গ্রামীন উন্নয়ন ও সমাজ কল্যাণের মতো কাজেই ব্যবহার করা হয়।
আরও পড়ুনঃ MIG-21 এর জায়গায় তেজস, শক্তিশালী যুদ্ধবিমানের জন্য ১১৩টি মার্কিন ইঞ্জিন কিনছে ভারত
সাইরাস এস পুনাওয়ালা এবং আদর পুনাওয়ালা
১৬৩ কোটি টাকা অবদান রেখে দানশীল বিলিয়নেয়ারের তালিকায় শীর্ষ দশে জায়গা করে নিয়েছেন সাইরাস এস পুনাওয়ালা এবং আদর পুনাওয়ালা। তাদের এই দান মূলত শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও সামাজিক অবকাঠামোতে জড়িত। সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার সঙ্গে যুক্ত তাদের ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে স্কুল নির্মাণ, কুষ্ঠ রোগাক্রান্তদের পুনর্বাসনের সুবিধা ইত্যাদি দেওয়া হয়।