আরও বিপাকে কসবা গণধর্ষণ কাণ্ডে ধৃত মনোজিৎ মিশ্র! গ্রেফতার পৃথক দুটি মামলায়

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: আরজি কর ঘটনার ক্ষত এখনও যেখানে কলকাতার বুকে দগদগ করছে সেখানে এক বছরের মাথায় ফের আরও এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ধর্ষণের গুরুতর অভিযোগ উঠে এসেছে। কসবায় আইন কলেজে আইনের এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠে এসেছে কলেজের প্রাক্তন ছাত্র তথা TMCP নেতা মনোজিৎ মিশ্র ও ২ ছাত্রের বিরুদ্ধে। এর আগেও নাকি একাধিক কলেজ পড়ুয়ার সঙ্গে এমন ব্যবহার করেছে মনোজিৎ। আর এবার তাই তাঁর কাঁধে চাপল আরও ১২ টি মামলার ভার।

মনোজিৎ-এর বিরুদ্ধে ১২ টি মামলা!

সংবাদ প্রতিদিনের রিপোর্ট অনুযায়ী, গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার, ২২ জুলাই আলিপুর কোর্টে কসবা ধর্ষণের মামলার শুনানিতে বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি বিভাস চট্টোপাধ্যায় দাবি করেন, ‘‘মনোজিতের বিরুদ্ধে গত কয়েক বছরে মোট ১২টি মামলা হয়েছে। যদি এই বারোটি মামলায় আগে অভিযুক্ত মনোজিতের বিরুদ্ধে আইনি ব‌্যবস্থা নেওয়া হত, তাহলে এই দিনটা আর আসত না। কলেজে এত বড় ঘটনাও ঘটত না।’’ এই মন্তব্য শোনার পরেই বিচারক প্রশ্ন করেন, ‘‘ওই মামলাগুলিতে রাজ্যের কী ভূমিকা ছিল?’’

মারপিট ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ

যদিও বিচারকের সেই প্রশ্নে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি বিভাস চট্টোপাধ্যায়। তিনি শুধু বলেন, ‘‘রাজ্য বিষয়টি আইনগত ভাবেই দেখেছে।’’ এদিকে কসবা থানায় দায়ের হওয়া আরও দু’টি মামলায় মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্রকে গ্রেপ্তার করা হয়। যার মধ্যে একটি ২০২৩ সালে মারপিট ও শ্লীলতাহানির জন্য করা হয়েছে এবং অপরটি ২০২৪ সালের মারপিট ও সংঘর্ষের অভিযোগের জন্য উঠেছে। তবে মনোজিৎ এর আইনজীবী রাজু গঙ্গোপাধ‌্যায় জানান, ২০২৩ সালের ঘটনাটির সময় মনোজিৎ আলিপুর আদালতেই একটি মামলা করছিলেন।

এছাড়াও আইনজীবী রাজু গঙ্গোপাধ‌্যায় আরও জানান যে মনোজিৎ- এর প্রত্যেকটি মামলাই রাজনৈতিক সংঘর্ষ হয়েছে অর্থাৎ সে রাজনীতির শিকার। যদিও এই দু’টি মামলায় আগেই পুলিশ চার্জশিট পেশ করেছে। তাই পুলিশের পক্ষ থেকে দু’টি মামলায় জেল হেফাজতে চাওয়া হলেও এই দু’টি মামলায় জামিন পেয়ে যায় মনোজিৎ। আর এই আবহে কসবা কাণ্ডে অভিযুক্তদের ‘গেট প‌্যাটার্ন’ পরীক্ষার প্রসঙ্গ উঠে এসেছে।

জেল হেফাজতের নির্দেশ মনোজিৎ-এর!

আরেক সরকারি আইনজীবী সৌরিন ঘোষাল জানিয়েছেন, ‘‘গেট প্যাটার্নের মাধ্যমে কলেজের সিসি ক্যামেরার ছবির সঙ্গে অভিযুক্তদের হাঁটাচলা মিলিয়ে দেখার পরীক্ষা করার আবেদন করা হয়েছে। আজ, বুধবার সংশোধনাগারে ওই পরীক্ষা করা হবে।’’ তাঁর দাবি, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত চার্জশিট দেওয়া হবে এবং হেফাজতে রেখে বিচার প্রক্রিয়া করা হবে বলে আদালতে জানানো হয়েছে। এ দিন শুনানি শেষে অভিযুক্তদের ৫ অগস্ট পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।

আরও পড়ুন: রাজ্যের কর্তৃত্ব আর ফলবে না মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তরে! নবান্নে চিঠি কমিশনের

এ দিন মনোজিতের আইনজীবী রাজু গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জেলে গিয়ে জেরার সময় অভিযুক্তকে দোষ স্বীকারের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। তাই সেক্ষেত্রে জেলে জেরার সময় আইনজীবী হাজির থাকার আর্জি জানানো হচ্ছে।” যা শুনে আদালতের স্পষ্ট নির্দেশ, অভিযুক্ত জেলে থাকাকালীন যা প্রয়োজন, তা তাঁকে দিতে হবে। আইনজীবী মনোজিৎ-এর সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। এবং মনোজিৎ-কে জেলের ভিতর পুলিশ জেরা করার সময় দু’জন আইনজীবী হাজির থাকতে পারবেন বলে নির্দেশ আদালতের।

Leave a Comment