“আর কত প্রাণ যাবে..?” কৃষ্ণনগরে BLO মৃত্যু ঘটনায় ফের কমিশনকে প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রী মমতার

Mamata Banerjee

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: এ বার নদিয়ার কৃষ্ণনগরে আত্মঘাতী হলেন এক বুথ স্তরের আধিকারিক ৫১ বছর বয়সী রিঙ্কু তালুকদার। বিশেষ নিবিড় সংশোধন সংক্রান্ত কাজের চাপের কারণেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেছে তাঁর পরিবার। এমনকি তাঁর দেহের পাশ থেকে মিলেছে একটি সুইসাইড নোট-ও, যেখানে SIR এ কাজের চাপকে দোষারোপ করা হয়েছে। আর এই ঘটনায় ফের জলপাইগুড়ির পর সমাজমাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ এবং শোকপ্রকাশ করে চাঞ্চল্যকর পোস্ট করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।

সুইসাইড নোটে কী লেখা ছিল?

সুইসাইড নোটে মৃত্যুর জন্য নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করে কৃষ্ণনগরের আত্মঘাতী বিএলও রিঙ্কু তরফদার লিখেছেন, “আমার এই পরিণতির জন্য নির্বাচন কমিশন দায়ী। আমি কোনও রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করি না। খুবই সাধারণ মানুষ। কিন্তু এই অমানুষিক কাজের চাপ আমি নিতে পারছি না। আমি একজন পার্শ্বশিক্ষিকা। বেতন পরিশ্রমের তুলনায় খুবই কম। কিন্তু এরা আমাকে ছাড় দিল না। আমার স্বামী, ছেলে, মেয়ে কেউ দায়ী নয়। ওরা আমাকে যথেষ্ট যত্নেই রাখে।” চিঠিতে তিনি বাঁচতে চান জানিয়ে রিঙ্কু এ-ও লিখেছেন যে, “আমি বাঁচতে চাই। আমার সংসারে কোনও অভাব নেই।” আর তাই নিয়ে এবার ফের নির্বাচন কমিশনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বিজেপিকে টার্গেট করে বড় পোস্ট তৃণমূলের

ইতিমধ্যেই BLO-র আত্মহত্যার ঘটনায় SIR নিয়ে কমিশন এবং বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। সমাজমাধ্যমে একটি দীর্ঘ পোস্ট করে লেখা হয়েছে, “নির্বাচন কমিশনের জটিল ডিজিটাল প্রক্রিয়া, অবাস্তব সময়সীমা, শাস্তির আতঙ্ক ও রাতভর তদারকির নামে যে মানসিক নির্যাতন কর্মীদের ওপর চাপানো হচ্ছে— তা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। অমানবিক চাপে যখন বিএলও-দের প্রাণ যাচ্ছে, তখন বিজেপি শুধু রাজনৈতিক ফয়দা লুটতে ব্যস্ত। এটাই বিজেপির নিষ্ঠুর, অমানবিক ও দায়িত্বহীন রাজনীতির প্রকৃত চেহারা।”

আরও পড়ুন: দাবি না মানলেই বিজেপিকে সমর্থন! তৃণমূলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে নয়া সমীকরণের ইঙ্গিত বংশীর

কী বলছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?

কৃষ্ণনগরের BLO মৃত্যুর ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও অভিযোগ করেছেন। তিনি লিখেছেন, “একজন মহিলা প্যারা-শিক্ষিকার এমন মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখজনক। পরপর বিএলও মারা যাচ্ছেন। নির্বাচন কমিশনের উচিত অবিলম্বে ব্যবস্থা নিয়ে মানুষের জীবনরক্ষা করা। আর কত জীবন যাবে? এই এসআইআর প্রক্রিয়ার জন্য আরও কতকে মরতে হবে? কত মৃতদেহ দেখলে কমিশনের হুঁশ হবে? বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে।” এদিকে এখনও পর্যন্ত এই ঘটনা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে দেখা যায়নি বিজেপিকে। তবে সির আবহে একের পর এক বুথ লেভেল অফিসারের মৃত্যু সত্যিই কমিশনের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলছে কেন সরকারী কর্মীদের এইভাবে SIR এর জন্য মরতে হচ্ছে।

Leave a Comment