প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: এখন থেকে আর সহজে মিলবে না রেশন কার্ড, বাড়তি সর্তকতা জারি করল রাজ্যের খাদ্য দপ্তর! বছর ঘুরতেই শুরু হতে চলেছে ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচন। আর এই নির্বাচনকে ঘিরে এখন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে ভোট প্রচারের তোড়জোড়। এমতাবস্থায় নির্বাচনের আগে ভুয়ো ভোটার তালিকা থেকে বাতিল করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে নির্বাচন কমিশন। বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা বা স্পেশ্যাল ইনটেনসিভ রিভিশন অর্থাৎ SIR কে ঘিরে রীতিমত উত্তাল পরিস্থিতি রাজ্য রাজনীতিতে। তাই এবার নতুন রেশন কার্ড ইস্যু করার ক্ষেত্রে আরও সতর্ক হচ্ছে খাদ্যদপ্তর।
রেশন ব্যবস্থা নিয়ে রাজ্যের কড়া অবস্থান
শহর ও গ্রামাঞ্চলের জন্য রেশন কার্ডের ক্ষেত্রে পৃথক ইনক্লুশন ও এক্সক্লুশন শর্ত রয়েছে। পারিবারিক আয়, নিজস্ব বাড়ি কি না, বাড়িতে কী কী ভোগ্যপণ্য ও আধুনিক গেজেট রয়েছে, চার চাকার নাকি দু’চাকার গাড়ি, পরিবারে কেউ সরকারি চাকরিজীবী আছেন কি না, ইত্যাদি জানতে চাওয়া হয়। পাশাপাশি নির্দিষ্ট কিছু আর্থ-সামাজিক মাপকাঠিও দেওয়া হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে এই সকল নথি জমা দিলে যাচাইকরণের মাধ্যমে রেশন কার্ড দেওয়া হয়। কিন্তু এখন সেই নিয়ম খাটবে না। আনন্দবাজারের রিপোর্ট অনুযায়ী, এ বার থেকে নতুন রেশন কার্ড দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও কঠোর অবস্থান নিতে চলেছে রাজ্যের খাদ্য দফতর।
যাচাইকরণ হবে আরও কড়াকড়ি
রাজ্যের SIR-এর ক্ষেত্রে এইমুহুর্তে ভোটার কার্ড, আধার ও রেশন কার্ডের কার্যকারিতা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠছে। যার জেরে সাধারণ মানুষের নাগরিকত্ব নিয়েও ধন্দ বাড়ছে। তাই সেক্ষেত্রে খাদ্য দপ্তরের তরফ থেকে জারি করা নতুন পিডিএস কন্ট্রোলের নির্দেশে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে যদি কোনও নতুন পরিবার নতুন রেশন কার্ডের জন্য আবেদন করে তাহলে সংশ্লিষ্ট দফতরের প্রতিনিধিদের সরাসরি আবেদনকারীর বাড়িতে গিয়ে যাচাই করতে হবে। আবেদনকারীর পরিবার সত্যিই সরকারি নির্ধারিত মাপকাঠির মধ্যে পড়ছে কি না, তা বিস্তারিত খতিয়ে দেখবেন খাদ্য দফতরের আধিকারিকেরা। যদি সেক্ষেত্রে দেখা যায় আবেদনকারী ঠিকভাবে শর্ত পালন করেনি, তাহলে আবেদন বাতিল হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামলায় বিচারপতিকে সরার জন্য চাপ! রাজ্যের উপর ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট
অখুশি রেশন ডিলাররা
খাদ্য দপ্তরের এই উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপে সকলেই বেশ খুশি। দপ্তরের তরফে আশা করা যাচ্ছে যে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ভুয়ো রেশন কার্ডেরবাড়বাড়ন্ত দূর করবে। একই সঙ্গে প্রকৃত উপভোক্তারা যাতে সরকারি রেশন ব্যবস্থার সুবিধা পান, তা নিশ্চিত করতে এই নয়া পদক্ষেপ। এই প্রসঙ্গে খাদ্য দফতরের এক আধিকারিক বলছেন, “খাদ্য নিরাপত্তা প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের তালিকা আরও স্বচ্ছ ও কার্যকর করার জন্যই এই পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ তবে রাজ্যের এই পদক্ষেপ মেনে নিতে পারেনি রেশন ডিলাররা। সংগঠনের নেতা বিশ্বম্ভর বসু বলেন, ‘‘এটি মানুষকে রেশন থেকে বঞ্চিত করার একটি প্রক্রিয়া মাত্র। কারণ, যাঁরা রেশন ডিলার, যাঁরা রেশন ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা হয়েছে, যাতে তাঁরা ব্যবসা ছেড়ে পালিয়ে যান। সাধারণ মানুষের কথাও এই নতুন প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে ভাবা হয়নি।’’