আর সহ্য করবে না ভারত! এবার চিনের টুঁটি চেপে ধরল দিল্লি

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: আর চুপচাপ সহ্য করবে না ভারত! এবার বেজিংকে সায়েস্তা করল দিল্লি (India on China)! একদিকে যেখানে ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ রাসায়নিক সার আমদানির উপর অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক বসিয়ে লাভের গুড় খাচ্ছিল চিন, অন্যদিকে সার সরবরাহের সংকটের মুখ থেকে চিনের প্রভাব খর্ব করার পথে হাঁটছে ভারত।

সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রকের ডিরেক্টরস জেনারেল অফ ট্রেড রেমেডিজ তদন্ত করে জানিয়েছে যে, চিন থেকে আসা সস্তার কেমিক্যালের কোপে পড়ে দেশের স্থানীয় শিল্প দিনের পর দিন মার খাচ্ছে। এর জেরে প্রায় 99.2 বিলিয়ন ডলারের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক ঘাটতির বিরুদ্ধে এবার পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছে নয়াদিল্লি। 

কারা কোন খাতে ধাক্কা খেয়েছে?

বলে রাখি, চিনের আরোপ করা এই অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্কগুলির তালিকায় রয়েছে শিল্পক্ষেত্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। প্রথমত রয়েছে PEDA, যার উপর প্রতি টনে 2017.9 টাকা শুল্ক বসানো হয়েছে। দ্বিতীয়ত রয়েছে Acetonitrile, যা ওষুধ প্রস্তুতির ক্ষেত্রে সবথেকে অপরিহার্য উপাদান। এর উপরেও প্রতি টনে 481 টাকা শুল্ক বসানো হয়েছিল।

তৃতীয়ত থাকছে Vitamin A Palmitate, যা পুষ্টি সরবরাহের ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা রাখে। আর এখানেও প্রতি কেজিতে 20.87 টাকা শুল্ক ধার্য করা হয়েছে। এর পাশাপাশি থাকছে Insoluble Sulphur, যা টায়ার ইন্ডাস্ট্রিতে প্রয়োজন। এর উপর প্রতি টনে 358 টাকা শুল্ক ধার্য করা হয়েছে। এমনকি সোডিয়াম ও পটাশিয়াম টারশিয়ারি বুটক্সাইডও রয়েছে, যেগুলি ওষুধ তৈরি করার জন্য অপরিহার্য। 

তবে সম্প্রতি জিনপিং সরকার কোনও কারণ ছাড়াই ভারতের জন্য বিশেষ সার রপ্তানি বন্ধের পথে হেঁটেছে। অথচ এই একই সার অন্যান্য দেশে পাঠাচ্ছে চিন। একজন কৃষি আমদানিকারক সংস্থার কর্মকর্তা বলেছেন, চিন ইচ্ছা করেই ভারতকে বিপাকে ফেলছে। এই সারগুলি ফল এবং সবজি চাষে প্রয়োজন পড়ে, যার ওপর নির্ভর করে কোটি কোটি কৃষকের জীবিকা এবং দেশের খাদ্য নিরাপত্তা। 

আরও পড়ুনঃ জঙ্গি কার্যকলাপের অভিযোগে মালয়েশিয়ায় গ্রেফতার ৩৬ বাংলাদেশি! তাড়ানো হচ্ছে দেশে

এবার আসবে কৌশলগত জবাব

তবে চিনের এসব কূটনৈতিক ক্রিয়া-কলাপের যোগ্য জবাব দিতে ভারত এবার মরিয়া! হ্যাঁ, ভারত আর চুপ করে বসে থাকবে না! চিন বহুদিন ধরেই কৌশলগতভাবে বিভিন্ন উপাদানের যোগান বন্ধ করে রাজনৈতিক চাপ বাড়াচ্ছিল। এমনকি রেয়ার আর্থ এলিমেন্ট থেকে শুরু করে API, সবই তালিকায় রয়েছে। আর এবার সেই তালিকায় সারও যুক্ত করেছে।

তবে ভারত ইতিমধ্যেই বিকল্প দেশ যেমন ইজরায়েল, কানাডা, মরক্কোর সাথে সম্পর্ক জোরদার করতে চাইছে। কারণ ড্রাগনের দেশের উপর নির্ভরযোগ্যতা কমিয়ে বিকল্প খোঁজার পথে দিল্লি। এমনকি দেশীয় উৎপাদকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, যাতে এই বিশেষ সার এবং কেমিক্যালের উৎপাদন অনেকটাই বাড়ে এবং কৃষি খাতের চাহিদা পূরণ হয়।

Leave a Comment