সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ব্রহ্মস অ্যারোস্পেস লিমিটেডের বিজ্ঞানী নিশান্ত আগরওয়াল (Brahmos scientist Nishant Agarwal), যিনি 2018 সালে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থাকে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত তথ্য শেয়ার করার জন্য গ্রেফতার হয়েছিলেন, সেই মামলায় এবার বিরাট স্বস্তি পেলেন। উচ্চ আদালত, তথ্যপ্রযুক্তি আইন এবং অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্টের আওতায় আনা অভিযোগগুলোর ভিত্তিতে তাঁকে এবার বেকসুর খালাস করা হল।
শুধু একটি অভিযোগেই রায় বহাল
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা গিয়েছে, নিম্ন আদালত আগারওয়ালকে মোট 14 বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছিল। অভিযোগ ছিল, তিনি আইটি সিস্টেম ব্যবহার করে দেশের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত তথ্য সন্ত্রাসের দেশ পাকিস্তানের কাছে শেয়ার করছিলেন। তবে উচ্চ আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, এই অভিযোগের কোনও প্রমাণ মেলেনি। শুধুমাত্র একটি অভিযোগই তাঁর বিরুদ্ধে কাজ করছে। আর তা হল সরকারি নথি ব্যক্তিগত ডিভাইসে রাখা। নিয়ম অনুযায়ী, এই কারণে তাঁর তিন বছরের সাজা বহাল থাকবে। যদিও আগরওয়াল ইতিমধ্যেই তদন্ত চলাকালীন জেল হেফাজতে তিন বছর কারাবাস কাটিয়েছেন। ফলে আদালতের রায় অনুযায়ী তিনি এখন মুক্তি পাওয়ার যোগ্য।
বলে দিই, 2018 সালের অক্টোবর মাসে মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স এবং উত্তরপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্র এটিএস-এর যৌথ অভিযানেই গ্রেফতার করা হয়েছিল নিশান্ত আগারওয়ালকে। তিনি তখন ব্রহ্মোস অ্যারোস্পেস লিমিটেড টেকনিক্যাল রিসার্চ ডিপার্টমেন্টে কর্মরত ছিলেন। উল্লেখ্য, ব্রহ্মোস ভারত এবং রাশিয়ার যৌথ উদ্যোগেই তৈরি। তবে সেই সময় তদন্তে উঠে আসে, আগারওয়ালের ব্যক্তিগত ল্যাপটপে নাকি ব্রহ্মোস মিসাইল সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি রয়েছে যা সংস্থার নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিধিলঙ্ঘন।
আরও পড়ুন: মধ্যবিত্তদের পকেটে চাপ দিয়ে সোনা, রুপোর দাম নিয়ে দুঃসংবাদ! আজকের রেট
তদন্তে নয়া মোড়
সেই তদন্তে এমন সব তথ্য উঠে আসে যা শুনলে অবাক হবেন আপনিও। হ্যাঁ, পাকিস্তানি হানি-ট্র্যাপ চক্র সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে আগারওয়ালকে সেই সময় টার্গেট করা হয়েছিল। এমনকি লিঙ্কডিনে Sejal নামের একটি ভুয়ো প্রোফাইল আগরওয়ালের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। আর নিজেকে যুক্তরাজ্যের রিক্রুটার বলেও দাবি করে আগরওয়ালের সঙ্গে কথোপকথন চালিয়ে গিয়েছিল সে। পাশাপাশি আদালতে নিয়ে আসা চ্যাটে দেখা যায় যে, Sejal বিভিন্ন প্রতিরক্ষা কর্মীদের প্রলোভনে ফেলার জন্য একটি গ্রুপের সদস্য ছিল। এমনকি আগারওয়ালের ল্যাপটপে 2017 সালে তিনটি অ্যাপ ইন্সটল হয়। আর সেগুলি হল Qwhisper, Chat to Hire, X-trust। তদন্তকারীরা জানিয়েছিল, এই তিনটি অ্যাপ বাস্তবে ছিল একটি ম্যালওয়্যার সফটওয়্যার, যা ল্যাপটপে থাকা ব্রহ্মোস সংক্রান্ত গোপন নথিগুলিকে চুরি করে পাকিস্তানে গোয়েন্দা সংস্থার হাতে পাঠাত।