বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: সাম্প্রতিককালে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের প্রবণতা লাফিয়ে বেড়েছে। এই বাজার যে ব্যাপক অনিশ্চয়তার অন্যতম প্রাণকেন্দ্র তা বোঝা সত্ত্বেও, নিজেদের কষ্টার্জিত অর্থ এই বাজারে ঢালছেন ইনভেস্টররা। তবে শেয়ার মার্কেট বা স্টক মার্কেটের দুনিয়ায় এমন এক সুবিধা রয়েছে যার মাধ্যমে আপনি ধারে বা ঋণ হিসেবে অর্থ নিয়ে স্টকে বিনিয়োগ করতে পারবেন। স্টক মার্কেটের দুনিয়ায় এর পোশাকি নাম লিভারেজ বা মার্জিন ট্রেডিং (Margin Trading)।
যদিও অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারীদের মতে, নিজেদের রিটার্ন বাড়ানোর জন্য ধার করা অর্থ স্টকে বিনিয়োগ করার সুবিধা থাকলেও এতে বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি অনেকটাই বেশি। তবে এসবের মধ্যে দিয়েও লিভারেজ ট্রেডিং ব্যবহার করে বিনিয়োগকারীরা বেশ কয়েকটি স্টকে বিপুল পরিমাণে বিনিয়োগ করেছেন। সেই সূত্র ধরেই তৈরি হয়েছে প্রথম 10 এর তালিকা। তাতে প্রথম পাঁচে রয়েছে পরিচিত কয়েকটি স্টক।
লিভারেজ ট্রেডিং বা মার্জিন ট্রেডিং কী?
প্রথমেই জানিয়ে রাখি, লিভারেজ ট্রেডিং বা মার্জিন ট্রেডিং মূলত সেই সুবিধা যেখানে খুচরা বিনিয়োগকারীরা একটি ব্রোকারেজ ফার্ম থেকে টাকা ধার হিসেবে নিয়ে শেয়ার কিনে থাকেন। অর্থাৎ একটি ব্রোকারেজ ফার্ম আপনাকে অর্থ দেয় যাতে আপনি বেশি পরিমাণ অর্থ দিয়ে ট্রেড করতে পারেন। এর বিনিময়ে বিনিয়োগকারীকে কিছু সুদ দিতে হয়। একই সাথে ক্রয়-কৃত শেয়ারের প্রতিশ্রুতিও দিতে হয়। সাধারণত বিনিয়োগকারীরা তাদের নির্দিষ্ট অর্থের 4 গুণ পর্যন্ত পেতে পারেন। অর্থাৎ একজন ব্যক্তি যদি 1 লক্ষ টাকা রাখেন তবে তিনি সর্বোচ্চ 4 লাখ টাকা পর্যন্ত মূল্যের শেয়ার কিনতে পারবেন। সাম্প্রতিক কালে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছে এই মার্জিন ট্রেডিং।
এই 5 স্টকে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করেছেন ইনভেস্টররা
সাম্প্রতিক কালে মার্জিন ট্রেডিং বা লিভারেজ ট্রেডিংয়ের জনপ্রিয়তা একেবারে মাত্র ছড়িয়েছে। আর সেই আবহেই সবচেয়ে বেশি ট্রেড হয়েছে বেশ কিছু পরিচিত স্টক। আর সেই স্টকগুলির প্রথম দশের ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে একটি তালিকা। সেই তালিকার একেবারে শীর্ষে রয়েছে হিন্দুস্তান অ্যারোনেটিক্স লিমিটেডের স্টক। শেষবারের মতো গত 4 ডিসেম্বর লিভারেজ ট্রেডিং এর ক্ষেত্রে এই স্টকের অবস্থান ছিল 1,677 কোটি টাকায়।
এরপরই তালিকার দ্বিতীয় স্থানে আসে Jio। রিলায়েন্স এর মালিকানাধীন এই সংস্থার স্টকে বিনিয়োগকারীদের মোট অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল 1399 কোটি টাকায়। বর্তমানে এই স্টকের দাম 293.55 টাকা। এরপরই তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে ম্যাগাজিন ডক শিপ বিল্ডার্স। এই সরকারি সংস্থাটির স্টক শেষ এক সপ্তাহের মধ্যে ধাক্কা খেয়ে ক্লোজ হয়েছিল। গত 4 ডিসেম্বরের তথ্য অনুযায়ী লিভারেজ ট্রেডিংয়ে এই স্টকের অবস্থান ছিল 1200 কোটি টাকায়।
অবশ্যই পড়ুন: ‘বন্দে মাতরম দেশের পুজো, মুসলমানদের ধর্মীয় বিশ্বাসের পরিপন্থী!’ মন্তব্য আরশাদ মাদানীর
তালিকার চতুর্থ স্থানে রয়েছে টাটা গ্রুপের সবচেয়ে বড় খুচরো বিক্রেতা ট্রেন্ট। জুডিও থেকে শুরু করে ওয়েস্টসাইডের মূল সংস্থাটির স্টক মার্জিন ট্রেডিংয়ের শীর্ষ 10 স্টকের তালিকায় নাম লিখিয়েছে যা টাটার জন্য বড় গর্বের বিষয়। 4 ডিসেম্বর পর্যন্ত এই স্টকের লিভারেজযুক্ত অবস্থান ছিল 1,107 কোটি টাকা। টাটার এই সংস্থার পরই তালিকার পঞ্চম স্থানে নাম রয়েছে ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেডের স্টকের। প্রতিরক্ষা খাতে ব্যবসা রয়েছে এই সংস্থার। বলে রাখি, 4 ডিসেম্বরের তথ্য অনুযায়ী বিনিয়োগকারীরা এই স্টকে 1,042 কোটি টাকার বিরাট তহবিল গড়েছেন। বিগত কয়েক মাসে এই স্টকটির শক্তি ক্রমশ বেড়েছে। সব মিলিয়ে বলাই, এই স্টকগুলিতে বিনিয়োগ করার জন্য টাকা ধার বা ঋণ নিচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা!