প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ২৬ এর বিধানসভা শুরু হতে এখনও বাকি বেশ কয়েক মাস। তার মধ্যেই ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনী কর্মসূচী- SIR নিয়ে বেশ কয়েকটি রাজ্যে বিতর্কের সূত্রপাত ঘটেছে। প্রথমে বিহার দিয়ে শুরু হয়েছে SIR প্রক্রিয়া। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের তরফে স্পষ্ট জানানো হয় যে শুধু বিহার নয়, অন্য রাজ্যগুলিতে হবে SIR প্রক্রিয়া। ইতিমধ্যেই বিহারের খসড়া তালিকা থেকে ৬১ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ গিয়েছে। যা নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে শুরু হয়েছে তরজা। বিজেপি ছাড়া কোনও দলই সমর্থন করছে না এই প্রক্রিয়ার। এমতাবস্থায় বঙ্গের ২৯৩ টি বিধানসভায় ভোটার তালিকা প্রকাশ করল কমিশন।
নিখোঁজ কুলপির তালিকা
গত ৫ আগস্ট অর্থাৎ মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গের ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে থেকে ১০৩টি বিধানসভা কেন্দ্রের ২০০২ সালের ভোটার তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু সেই সময় চারটি বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার তালিকা পাওয়া যাচ্ছিল না। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপি ও বীরভূমের মুরারই, রামপুরহাট ও রাজনগর এই চার কেন্দ্রের ভোটার তালিকা তখনও পাঠানো হয়নি। এরপর ভোটার তালিকা খুঁজে বার করার জন্য জেলাশাসকদের নির্দেশ দেয়। পরে বীরভূমের তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার তালিকা খুঁজে পাওয়া গেলেও, কুলপির তালিকা এখনও ‘নিখোঁজ’। তাই সেক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে তালিকা শেষ পর্যন্ত খুঁজে না পাওয়া গেলে ২০০৩ এর ড্রাফট ব্যবহার করবে কমিশন। সেক্ষেত্রে আপনারাও নাম যাচাই করে নিতে পারেন https://ceowestbengal.nic.in/roll_dist এই সাইটের মাধ্যমে।
SIR নিয়ে সম্পূর্ণ প্রস্তুত CEO দপ্তর
বাংলায় শেষবার ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনী কর্মসূচী বা SIR হয়েছিল ২০০২-২০০৪ সালের মধ্যে। ভোটার তালিকায় কারা মৃত, কারা ভুয়ো ভোটার, কারা বাসস্থান পরিবর্তন করেছেন – এই সব কিছুই যাচাই করা হয় সমীক্ষায়। অবশেষে ২০২৫-এ এই প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে। গত বুধবার, ভোটার তালিকার SIR এর প্রস্তুতি কোন পর্যায়ে রয়েছে, তা জানতে জাতীয় নির্বাচন কমিশন চিঠি পাঠিয়েছিল সব রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদের। এমতাবস্থায় গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার, রাজ্যের ২৪ টি জেলায় ২০০২ সালের ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। একইসঙ্গে SIR হলে রাজ্যের CEO দপ্তর যে এই মুহূর্তে প্রস্তুত, তাও পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘কোচবিহারে ৮ মাসের গর্ভবতীর পেটে লাথি’, তৃণমূলের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ সুকান্তর
এদিকে রাজ্যে BLO-দের দেওয়া নির্দেশিকার পরতে পরতে কমিশনকে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, বিএলও-দের কাজ করতে হবে কমিশনের অধীনে। কোনও রকম পক্ষপাত তাঁরা করতে পারবেন না। সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে ভোটার তালিকার কাজ করে যেতে হবে। সেক্ষেত্রে যদি কেউ ভুল তথ্য প্রেরণ করে বা ইচ্ছে করে কোনো দলের হয়ে কাজ করে তাহলে কত দিন জেল বা কত টাকা জরিমানা হতে পারে, তা-ও উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে নির্দেশিকায়। তবে সেক্ষেত্রে ঘোর আপত্তি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।