প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বছর ঘুরলেই ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। তার আগেই দীর্ঘ তিন বছরের বন্দিদশা কাটিয়ে অবশেষে মুক্তির আলো দেখলেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। দেখতে দেখতে সেই জেলমুক্তির এক সপ্তাহ কেটে গিয়েছে, আপাতত নাকতলার বাসভবন বিজয়কেতনেই রয়েছেন তিনি। জেলমুক্তির পর প্রথম দুদিন বাড়িতে ফিরেই তাঁকে সক্রিয় রাজনীতিতে দেখা গিয়েছিল কিন্তু এরপরেই কোথায় যেন কর্পূরের মত উবে গেলেন তিনি। এমনকি কথা দিয়েও যাননি বেহালা পশ্চিম কেন্দ্রে সাধারণের কাছে।
জেল মুক্তির পরেই খোলা চিঠি প্রার্থী
রিপোর্ট অনুযায়ী, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জেলমুক্তির পর বাড়িতে ফিরেই নিজের বিধানসভার মানুষদের কাছে বার্তা পাঠাতে হাতে তুলে ধরেছিলেন কলম। আর সেই ‘খোলা চিঠি’ লিফলেটের মাধ্যমে বেহালা পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের মানুষের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল। এদিকে এর মাঝেই যেন ঘটে গেল ছন্দপতন। জেলমুক্তির পর প্রথম দুদিন পরিচিত এবং সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করলেও গত বৃহস্পতিবার থেকে পুরোপুরি গৃহবন্দি বেহালার এই বিধায়ক। অথচ তিনিই জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই তিনি বেহালা পশ্চিমে নিজের বিধানসভা কেন্দ্রের পশ্চিমে পা রাখবেন। এবং মানুষজনের সঙ্গে দেখা করবেন।
হঠাৎ করেই গৃহবন্দী পার্থ
পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, নিজেকে একেবারে নাকি গুটিয়ে নিয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। খুব ঘনিষ্ঠ ছাড়া কারও সঙ্গে দেখাও করছেন না। নিজের ফোন মন্ত্রী ব্যবহার তো করছেনই না বরং প্রয়োজনে পরিবারের কারও ফোন থেকে কথা বলছেন তিনি অন্যদের সঙ্গে। এদিকে জেল থেকে ফেরার পর বেহালায় থাকা পার্থ অনুগামীরা আশা করেছিলেন যে জেলমুক্তির কয়েক দিনের মধ্যেই নিজের কার্যালয়ে এসে আবারও হয়ত বিধায়ক হিসাবে কাজকর্ম শুরু করবেন পার্থ। যদিও তেমনই কথা ছিল কিন্তু সেই আশায় জল পড়ল। বেহালা পশ্চিম বিধানসভার তৃণমূলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, এইমুহুর্তে পার্থ অনুগামীদের বিধায়ক কার্যালয়ে ভিড় না জমানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সুযোগ পেয়েও নথি যাচাইয়ে অনুপস্থিত একাংশ! দ্বিতীয় ভেরিফিকেশনের দাবি তুলল চাকরিহারারা
নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে পার্থের মুক্তির খবর পেলেও আনুষ্ঠানিক ভাবে এখনও বিধানসভাকে কোনও খবর দেননি পার্থ চট্টোপাধ্যায়। যার ফলে কেন্দ্রে তাঁর বসার জায়গা নির্ধারণ করা যায়নি। শুধু তাই নয়, গ্রেফতারির কারণে গত তিন বছরের বেশি সময় বিধায়ক হিসাবে তাঁর বেতনও বন্ধও হয়ে গিয়েছে। তাই সেক্ষেত্রে বেতন চালু করতে পার্থকে আবেদন করতে হবে সচিবালয়ে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেই আবেদন জমা পড়েনি বলে জানাচ্ছেন বিধানসভার এক শীর্ষ অধিকারিক। এবার দেখার পালা নির্বাচনের আগে পার্থ পুরোপুরিভাবে দলে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে কিনা।