প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সম্প্রতি বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাদেশি বলে দেগে দিয়ে বাঙালি শ্রমিকদের হেনস্তা করার ঘটনা উঠে আসছে খবরের শিরোনামে। দিল্লি, গুজরাত, হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কয়েক মাস আগে থেকেই সন্দেহভাজন অবৈধ অভিবাসীদের ধরপাকড় শুরু হয়েছে। অভিযোগ উঠছে, অনেক ক্ষেত্রেই পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে পুলিশ অতিসক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। আর তাতেই বিপদে পড়ছেন অসংখ্য ভারতীয়। যার দরুন সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হল জনস্বার্থ মামলা। তবে এবার সেই মামলা নিয়ে নিষ্ক্রিয় প্রতিক্রিয়া দিল আদালত।
জনস্বার্থ মামলা নিয়ে চুপ সুপ্রিম কোর্ট
উল্লেখ্য, একের পর এক বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিক বিজেপি শাসিত রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে বাংলাদেশি সন্দেহে নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। শুধু তাই নয়, দেশ জুড়ে বহু সন্দেহভাজনকেও আটক করা হচ্ছে। আর সেই কারণে এবার পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর নিপীড়ন বন্ধ এবং আটক করা বন্ধ করতে আবেদন জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা করা হয় সুপ্রিম কোর্টে। পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ বোর্ডের তরফে সেই মামলা করা হয়। আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার, সেই মামলা বিচারপতি সূর্য কান্ত মিশ্র এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চে ওঠে। কিন্তু সেই মামলা নিয়ে খুব একটা বড় রায় দিল না আদালত।
দেওয়া হলো না অন্তর্বর্তী নির্দেশ
সংবাদ প্রতিদিনের রিপোর্ট অনুযায়ী, শীর্ষ আদালতের বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ জনস্বাস্থ্য মামলার অভিযোগ পর্যবেক্ষণ করে জানিয়েছেন যে, ভিনরাজ্যে বাংলাভাষীদের ধরপাকড় নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট এই মুহূর্তে কোনওরকম নির্দেশ দিলে সেটার বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। তাই এই মুহূর্তে আদালত কোনও নির্দেশ দিলে বাংলাদেশ থেকে বৈধ নথি-সহ এ দেশে এসেছেন যাঁরা, তাঁদের সমস্যা হতে পারে। এখানেই শেষ নয়, বিচারপতিদের বেঞ্চ আরও জানিয়েছেন যে, “যদি কেউ অবৈধ ভাবে প্রবেশ করেন এবং তাঁকে আটক না করা হয় তাহলে সে সহজেই অদৃশ্য হয়ে যাবে!” তাই সব দিক বিবেচনা করে শীর্ষ আদালত কোনও নির্দেশ দেয়নি। অর্থাৎ ভিনরাজ্যে ধরপাকড় প্রক্রিয়া চলতেই থাকবে।
আরও পড়ুন: মায়ের থেকে মাত্র ৬ বছরের ছোট মেয়ে! বনগাঁর ভোটার তালিকায় বাংলাদেশির কীর্তি ফাঁস
এদিন জনস্বার্থ মামলার প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট অন্তবর্তী নির্দেশ না-দিলেও সেই মামলার শুনানিতে কোনও আপত্তি জানায়নি বিচারপতিরা। শুধু তা-ই নয়, আগামী ৮ সপ্তাহের মধ্যে সব রাজ্য ও কেন্দ্রকে তাদের মতামত জানাতে বলেছে এবং হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৫ আগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। এদিকে এই মামলা প্রসঙ্গে পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ বোর্ডের চেয়ারম্যান তথা রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ সামিরুল ইসলাম বলেছেন, ‘‘আমরা বাংলা ভাষাভাষী মানুষের ন্যায়বিচারের জন্য শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত আইনি লড়াই চালিয়ে যাব। মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা বাংলাবিরোধীদের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাব এবং তাঁদের পরাজিত করব। এই দেশ সবার, আমাদেরও সমান অধিকার আছে।’’