প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বছর ঘুরলেই পশ্চিমবঙ্গে শুরু হতে চলেছে ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। আর সেই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোট প্রচারের তুমুল হইচই শুরু হয়েছে এখন থেকেই। আর এই আবহে রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে গীতাপাঠের ব্রিগেডে প্যাটিস বিক্রতাদের বেধড়ক মারধর করা নিয়ে। এবার সেই ঘটনায় বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
চর্চায় ব্রিগেডে প্যাটিস বিক্রতাদের মারধর
গত রবিবার ব্রিগেডে গীতাপাঠের আয়োজন করা হয়েছিল RSS এর পক্ষ থেকে। সেখানে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবং পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। লক্ষ লক্ষ জনসমাবেশ ঘটে। সেই সময় ওই কর্মসূচি চলাকালীনই ঘটে যায় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি। ময়দান চত্বরে চিকেন প্যাটিস বিক্রি করার জন্য দু’জনকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে কর্মসূচিতে আসা কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয় খাবার সমস্ত ফেলে দিয়ে এক প্যাটিস বিক্রেতাকে কান ধরে ওঠবস করানোরও অভিযোগ ওঠে। যার প্রতিবাদে মহম্মদ সালাউদ্দিন এবং শেখ রিয়াজুল নামে ওই দুই প্যাটিস বিক্রেতা ময়দান থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এবার সেই ঘটনার প্রসঙ্গে মুখ খুললেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কী বললেন মমতা?
স্থানীয় রিপোর্ট অনুযায়ী, আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার দুপুরে কৃষ্ণনগরের জনসভার মঞ্চ থেকে ব্রিগেডে গীতাপাঠের অনুষ্ঠানে প্যাটিস বিক্রেতাকে মারধরের ঘটনা নিয়ে গর্জে উঠলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বিজেপিকে একপ্রকার নিশানা করেই বললেন, “ আজ এক জন গরিব হকার তার জিনিস বিক্রি করতে গিয়েছে। তাকে ধরে মেরেছে। যারা গায়ে হাত দিয়েছে সবকটাকে গ্রেপ্তার করেছি। এটা বাংলা। উত্তরপ্রদেশ নয়।” এদিন সর্বধর্ম সমম্বয়ের বার্তা দিয়ে মমতা আরও বলেন, “গীতাপাঠ তো আমরা সকলেই বাড়িতে করি। পাবলিক মিটিং করার কী দরকার? দুর্গাপুজো যখন হয়, তখন মিলেমিশে করি। আপনারা কে? যে ভেদাভেদ করছেন। আমি সবধর্মকে নিয়ে চলতে চাই। নতুন ধর্ম আমদানি করেছেন।”
আরও পড়ুন: অনিকেতের পোস্টিং মামলায় রাজ্য সরকারকে বড় ধাক্কা সুপ্রিম কোর্টের
শেষ আপডেট অনুযায়ী, আক্রান্ত বিক্রেতাদের দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে ময়দানে থানার পুলিশ ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের নাম সৌমিক গোলদার, স্বর্ণেন্দু চক্রবর্তী এবং তরুণ ভট্টাচার্য। সৌমিকের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙায়, স্বর্ণেন্দু থাকেন অশোকনগরে এবং অপর ধৃত তরুণ ভট্টাচার্য হুগলির উত্তরপাড়া এলাকার বাসিন্দা। পুলিশের অভিযোগ, গত রবিবার ব্রিগেডে মারধরের ওই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই ওই ভিডিয়ো এবং ছবির ভিত্তিতেই অভিযুক্তদের চিহ্নিত করেছেন তদন্তকারীরা। তবে তদন্ত এখনও চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।