সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: রাজ্যের গৃহহীন মানুষদের মাথার ওপর পাকা বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে চালু হয়েছিল বাংলার বাড়ি প্রকল্প (Banglar Bari)। কেন্দ্রীয় আবাস যোজনার অর্থ বন্ধ হওয়ার পর থেকে রাজ্য সরকারের তহবিল দিয়েই এই প্রকল্পের শুভ সূচনা। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যাচ্ছে, অনেক উপভোক্তা সরকারি অনুদান হাতে পাওয়ার পরেও বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করছে না। সেজন্য এবার কঠোর পদক্ষেপের পথে নামল পঞ্চায়েত দপ্তর।
ফেরত দিতে হবে অনুদানের টাকা
আনন্দবাজারের রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে, একাধিক জেলায় উপভোক্তারা টাকা ব্যাঙ্কে রেখে দিচ্ছে বা অন্যান্য খাতে খরচ করছে। যারা এখনো পর্যন্ত বাড়ি তৈরি করার কাজ শুরু করতে পারেনি, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এবার জেলা প্রশাসনকে কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমনকি তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকেই টাকা ফেরত নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। এই ব্যাপারে পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার জানিয়েছেন, বাড়ি তৈরীর শর্তেই টাকা দেওয়া হয়েছে। সরকারি সুবিধা নিয়ে যদি বাড়িই তৈরি না করা হয়, তাহলে টাকা ফেরত নেওয়া ছাড়া আমাদের কাছে আর কোনো কিছু করার থাকবে না।
প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, বাংলার বাড়ি প্রকল্পে প্রতিটি পরতিবার পিছু ১.২০ লক্ষ টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়। প্রথমে তিন কিস্তিতে অর্থ দেওয়া হলেও পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে দুই কিস্তিতেই পুরো টাকা দেওয়া হবে। অর্থাৎ প্রথম কিস্তিতে ৬০ হাজার টাকা এবং দ্বিতীয় কিস্তিতে আরো ৬০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রথম দফায় ১২ লক্ষ পরিবারের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এই প্রকল্পের টাকা পাঠানো হয়। এরপর ২০২৫ সালের মে মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ বিতরণ করেন।
এবার রয়েছে বড়সড় লক্ষ্য
রাজ্য সরকারের হিসাব বলছে, মোট ২৮ লক্ষ পরিবার ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পের আওতায় সুবিধা পেয়েছে। তবে এর মধ্যে ১২ লক্ষ পরিবার টাকা পেয়েছে এবং বাকি ১৬ লক্ষ পরিবারকে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাস এবং ২০২৬-এর মে মাসে অনুদান দেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, আরও ১৬ লক্ষ পরিবারকে এই প্রকল্পের আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। অর্থাৎ আগামী দিনে প্রায় ৫০ লক্ষ পরিবার উপকৃত হবে।
আরও পড়ুনঃ ‘ইলিশের গাড়ি পিছু ৫০ হাজার তোলাবাজি পুলিশের!’ ডায়মন্ড হারবার মডেল নিয়ে বিস্ফোরক শুভেন্দু
তবে নবান্নের শীর্ষকর্তাদের মতে, প্রকল্পে শুধুমাত্র বাড়ি নয়, বরং স্বচ্ছতাও দরকার। তাই প্রতিটি জেলায় এবার বিশেষ টিমের মাধ্যমে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে যে টাকা পাওয়ার পর উপভোক্তরা বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করছে কিনা বা কাজ কতটা এগিয়েছে। প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেছেন, যেখানে অনুদান পেয়েও কাজ শুরু হয়নি, সেই সমস্ত রিপোর্ট সরাসরি পঞ্চায়েত দপ্তরে পাঠানো হবে এবং টাকা ফেরত নেওয়া হবে।