প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে বঙ্গ বিজেপির একাদশতম রাজ্য সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিলেন শমীক ভট্টাচার্য। গতকাল সায়েন্স সিটিতে এক সংবর্ধনার অনুষ্ঠানে তাঁকে বঙ্গ বিজেপির সভাপতি হিসেবে অভিষিক্ত করা হয়।
কিন্তু এদিন এই অনুষ্ঠানে সকলে উপস্থিত থাকলেও দেখা মেলেনি দিলীপ ঘোষের। শোনা যায় তাঁকে নাকি এই অনুষ্ঠানে ঢাকায় হয়নি। আর এই নিয়ে তাই এবার রাজনৈতীক মহলে গুঞ্জন উঠল তবে কি নির্বাচনের আগেই দল পাল্টাবে দিলীপ ঘোষ।
ক্রমেই দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে দিলিপের
গত লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে ধীরে ধীরে দলের সঙ্গে দিলীপে দূরত্ব একটু একটু করে বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদীর কর্মসূচি থেকে শুরু করে অমিত শাহের মিটিং কোথাও দেখা যায় না তাঁকে। লোকসভা ভোটে হেরে সাংসদ পদও খুইয়েছেন তিনি।
তার উপর দিলীপ ঘোষ সস্ত্রীক দিঘায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্মিত জগন্নাথ মন্দির দর্শন নিয়ে নিজের দলের সঙ্গেই ব্যাপক দূরত্ব তৈরি হয়েছে। আর এই আবহে গতকাল নিমন্ত্রণ না মেলায় বেশ অভিমানিত হয়েছেন তিনি। তবে কি এবার তৃণমূলে যোগ দেবেন তিনি?
অভিমানী দিলীপ
সাধারণ নিয়মিত প্রাতঃভ্রমণে যাওয়া অভ্যেস দিলীপ ঘোষের। কোনোদিনও সেই অভ্যাস বাদ দেননি। আজও তাই ইকো পার্কে প্রাতঃভ্রমণ সারেন তিনি। নিয়মিত প্রাতঃভ্রমণে যাওয়া অভ্যেস দিলীপ ঘোষের। আজও তাই ইকো পার্কে প্রাতঃভ্রমণ সারেন তিনি। আর সেখানেই তৃণমূলে যোগ প্রসঙ্গে মুখ খোলেন।
তিনি বললেন, “আমার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ পার্টি ঠিক করবে। ভগবানের খাতায় লেখা আছে। আমাকে বিজেপি নিয়ে এসে একটা জায়গা দিয়েছিল। আমি নিজে থেকে আসিনি। পার্টি চেয়েছে তাই আমি এসেছি। পার্টি আমাকে রাজ্য সভাপতি করেছে, বিধায়ক করেছে, সাংসদ করেছে, জাতীয় নেতা করেছে। আমি নিজে থেকে কিছু চাইনি।”
তৃণমূলে যোগ নিয়ে কী বললেন দিলীপ ঘোষ?
এছাড়াও এদিন তিনি বলেন, “পার্টি আমাকে গাড়ি দিয়েছে, সিকিউরিটি দিয়েছে। আমি নিজে এগুলোর কোনোটাই চাইনি। পার্টি যদি মনে করে আমি এখন সাধারণ কর্মী হিসেবে কাজ করব, তাহলে তাই করব।” এরপরই সাংবাদিকরা গতকাল শমীক ভট্টাচার্যের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের প্রসঙ্গ তোলেন। তখনই তিনি অভিমানের সুরে বলেন, “আমাকে ডাকলে আমি যাই। না ডাকলে যাই না।” তবে, এদিন দিলীপ ঘোষ তৃণমূলে যোগ নিয়ে কোনও সরাসরি মন্তব্য করেননি।
আরও পড়ুন: দুই সন্তানকে নিয়ে দ্বিতীয়বার বিয়ের পিঁড়িতে বাস্তবের ‘মিসেস চ্যাটার্জি’, পাত্র …
এদিকে বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে যেন বিরোধী দলের অন্দরে সম্পর্কের ভাঙন বেশি শুরু হয়েছে। সবমিলিয়ে এইমুহুর্তে দিলীপ ঘোষের রাজনৈতিক অবস্থান এবং দলের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন বাংলা রাজনীতিতে এক নয়া চমক আসতে চলেছে বলে অনেকেই মনে করছে। সেক্ষেত্রে তৃণমূলে যোগের সম্ভাবনাও উসকে দিয়েছেন অনেকে। দেখার পালা দিলীপের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কোথায় গিয়ে ঠেকে।