এসব সেভিংস অ্যাকাউন্টধারীদের নোটিশ পাঠাচ্ছে আয়কর দপ্তর! বাঁচবেন কীভাবে জানুন

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: সকালে ঘুম থেকে উঠেই যদি মোবাইলে ইনকাম ট্যাক্স ডিপার্টমেন্টের তরফ থেকে কোনো নোটিশ (Income Tax Notice) দেখতে পান, তাহলে কেমন হবে? নিশ্চয়ই বিপাকে পড়বেন! অনেকের তো সেভিংস অ্যাকাউন্টে সৎভাবে টাকা রেখেও নোটিশ আসছে। কিন্তু এর নেপথে কী কারণ রয়েছে? কোন নিয়ম না মানলে এই ধরনের নোটিশ পাঠাচ্ছে ইনকাম ট্যাক্স ডিপার্টমেন্ট? চলুন আজকের প্রতিবেদনে বিস্তারিত আলোচনা করছি।

কেন আসছে ইনকাম ট্যাক্স নোটিশ?

বর্তমান সময়ে আয়কর বিভাগ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) প্রযুক্তি ব্যবহার করছে, যার মাধ্যমে ব্যাঙ্কের লেনদেনগুলি স্ক্যান করে সন্দেহজনক অ্যাকাউন্টগুলিকে চিহ্নিত করা হচ্ছে। ফলে যদি কোনো সেভিংস অ্যাকাউন্টে হঠাৎ করে কোনো বড় অংকের লেনদেন বা নিয়মিত বড় অংকের টাকা ঢুকে থাকে, তাহলে আয়কর দপ্তর সেই অ্যাকাউন্টের প্রতি বাড়তি নজর দিচ্ছে।

এ বিষয়ে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট সি. কমলেশ কুমার জানিয়েছেন, যদি আপনার সেভিংস অ্যাকাউন্টে বছরে 10 লক্ষ টাকা বা তার বেশি জমা পড়ে, তাহলে ব্যাঙ্ক সেই তথ্য ইনকাম ট্যাক্স ডিপার্টমেন্টকে পাঠিয়ে দেয়। এছাড়া যদি কোনো অ্যাকাউন্টে ক্রমাগত বড় অংকের টাকা জমা পড়ে বা তোলা হয় এবং তার উৎস স্পষ্ট না থাকে, তাহলে ব্যাংক সেই অ্যাকাউন্টকে সন্দেহজনক হিসেবেই চিহ্নিত করে এবং ইনকাম ট্যাক্স ডিপার্টমেন্টকে সমস্ত তথ্য জানিয়ে দেয়।

কী কী নিয়ম না মানলে ইনকাম ট্যাক্স নোটিশ এড়ানো যাবে?

এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছে, নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে চললেই ইনকাম ট্যাক্স ডিপার্টমেন্টের নোটিশের ঝামেলা থেকে বাঁচা সম্ভব। আর সেই নিয়মগুলি হল—

বড় লেনদেনে সতর্ক থাকুন

যদি এককালীন বা বছরে 10 লক্ষ টাকা বা তার বেশি জমা করতে চান, তাহলে অবশ্যই তার উৎস সঠিকভাবে জানাতে হবে। আর যদি এই উৎস সম্পর্কে কোনো গাফিলতি থেকে থাকে বা স্পষ্ট না হয়, তাহলে ইনকাম ট্যাক্স নোটিশ আসতে পারে।

ঘনঘন বড় লেনদেন এড়িয়ে চলুন

বারবার বড় অংকের টাকা জমা দেওয়া বা তোলা হলে তা ব্যাঙ্কের কাছে অস্বাভাবিক বলেই মনে হয়। আর তখন সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক ইনকাম ট্যাক্স ডিপার্টমেন্টকে রিপোর্ট পাঠিয়ে দিতে পারে। তাই ঘন ঘন বড় লেনদেন এড়িয়ে চলুন।

অর্থের উৎসের প্রমাণ রাখুন

আপনার অ্যাকাউন্টে যদি আপনার পরিবার বা আত্মীয়স্বজন কোনো বড় অংকের টাকা পাঠায়, তাহলে তার চুক্তিপত্র বা ডকুমেন্ট রেখে দিন। ধরুন, আপনার বাবা আপনাকে 10 লক্ষ টাকা দিল। সেক্ষেত্রে বাবার পক্ষ থেকে একটি গিফট ডিক্লায়েরেশন থাকলে ভবিষ্যতে আইনি জটিলতা এড়াতে পারবেন।

প্যান এবং কেওয়াইসি আপডেট করুন

বড় অংকের লেনদেনের ক্ষেত্রে অবশ্যই প্যান নাম্বার এবং কেওয়াইসি আপডেট বাধ্যতামূলক। তাই আপনার অ্যাকাউন্টে অবশ্যই এগুলি আপডেট করে রাখুন, যাতে প্রয়োজনে ইনকাম ট্যাক্স ডিপার্টমেন্ট আপনার পরিচয় জানতে পারে।

আরও পড়ুনঃ দুর্গাপুজোর আগেই চালু হচ্ছে গোটা কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে, দাবি রিপোর্টে

সততা বজায় রাখুন

ব্যাঙ্ক প্রতিটি অ্যাকাউন্টেরই কার্যকলাপ ট্র্যাক করে থাকে। তাই কোনোরকম সন্দেহজনক লেনদেন হলে ব্যাঙ্ক আপনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে কিংবা নোটিশ পাঠাতে পারে। তাই স্বচ্ছতা বজায় রেখে খোলামেলা লেনদেন করুন। এতে ঝামেলা থেকে মুক্তি পাবেন।

Leave a Comment