কমবে চিনের নির্ভরতা! ভারতেরই মিলল দুর্লভ খনিজের হদিস, অরুণাচলে বড় আবিষ্কার

Rare Earth

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: বহুদিন ধরেই ভারত সহ একাধিক দেশকে খনিজ সম্পদের (Rare Earth) জন্য চিনের উপর তাকিয়ে থাকতে হত। ইলেকট্রিক গাড়ি থেকে শুরু করে আধুনিক ইলেকট্রনিক্স চুম্বক তৈরির মতো গুরুত্বপূর্ণ জিনিস সেই ধাতু থেকেই আসত। আর এ নিয়ে বারবার ভারতকে ফ্যাসাদে ফেলেছে চিন। তবে এবার সেই ছবি বদলাতে চলেছে। কারণ, ভারতের বুকে এবার বিরল খনিজের বিপুল ভান্ডারের হদিস মিলেছে।

অরুণাচল থেকে অসমের পাহাড়ে এবার নতুন আবিষ্কার

ইকোনোমিক টাইমসের রিপোর্ট অনুযায়ী, অরুণাচল প্রদেশের পাহাড়ি ঘেরা অঞ্চল দিয়ে দুটি নদী পাপুম এবং পাড়ে বয়ে গিয়েছে। আর এই নদীর নামেই ওই জেলার নাম রাখা হয়েছে পাপুম-পাড়ে। এমনকি এখানে হদিস মিলেছে নীওডিমিয়াম সহ একাধিক বিরল ধাতুর। খনিজ মন্ত্রকের রিপোর্ট বলছে যে, এই এলাকায় নীওডিমিয়ামের মজুদ সবথেকে বেশি। আর নীওডিমিয়াম ইলেকট্রিক গাড়ির মোটর থেকে শুরু করে আধুনিক গ্যাজেট কিংবা উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন চুম্বক তৈরি করতে কাজে লাগে।

উল্লেখ্য, শুধুমাত্র অরুণাচল প্রদেশ নয়, বরং অসমের কার্বি আঙলং জেলায়তেও REE-এর সন্ধান মিলেছে। পাশাপাশি মেঘালয়ের আবিষ্কৃত হয়েছে বক্সাইট-REE বেল্ট। এমনকি মধ্যপ্রদেশের সিংরাউলি কয়লা খনিতেও এই বিরল খনিজের হদিস মিলেছে।

এতদিন ধারণা করা হচ্ছিল যে, বিরল খনিজ শুধুমাত্র অন্ধ্রপ্রদেশ, উড়িষ্যা, তামিলনাড়ু, কেরল, পশ্চিমবঙ্গ, গুজরাট, মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যের সমুদ্রতট কিংবা নদীর পাওয়া যেতে পারে। তবে নতুন আবিষ্কার সেই ভাবনাকেই বদলে দিল। হ্যাঁ, ভারতের জঙ্গল, পাহাড়, এমনকি কয়লাখনিতে লুকিয়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ বিরল খনিজের ভান্ডার। 

নির্ভরতা কমছে চিনের উপর

জানিয়ে রাখি, বর্তমানে বিশ্বের 70% বিরল খনিজের যোগান দেয় জিনপিং-এর দেশ। সবথেকে বড় ব্যাপার, রিফাইন ক্ষমতার 90%-ই এখন চিনের হাতে। আর এর ফলে ভারতের বাজারে ব্যবহৃত 85 থেকে 90 শতাংশ বিরল খনিজ চুম্বক চিন থেকেই আমদানি করতে হয়। সম্প্রতি ড্রাগনের দেশ রপ্তানি বন্ধ করাতেই বিপাকে পড়েছিল ভারতের ইলেকট্রিক গাড়ি নির্মাতা সংস্থাগুলি। আর সেই পরিস্থিতি মাথায় রেখে দেশের ভেতর এরকম খনির ভান্ডার আবিষ্কার সত্যি ভারতের জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ। 

আরও পড়ুনঃ পরকীয়ার শাস্তি হিসেবে বোরখা খুলে বেধড়ক মারধর! নিজের হজ ফেরত মাকে ধর্ষণ ছেলের

তবে পরিসংখ্যান বলছে যে, বিশ্বের বিরল খনিজ ধাতুর ভান্ডারে ভারত বর্তমানে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। পাশাপাশি চিন প্রথম স্থানে এবং ব্রাজিল দ্বিতীয় স্থানে আছে। তবে উৎপাদন ও প্রক্রিয়াকরণের ক্ষেত্রে ভারতের অংশীদারিত্ব এখনো মাত্র 1%-এরও কম। তাই শুধুমাত্র খনিজ মজুদ থাকলেই চলবে না, সঠিকভাবে উত্তোলন বা পরিশোধন ক্ষমতা এখন ভারতের কাছে সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

5 thoughts on “কমবে চিনের নির্ভরতা! ভারতেরই মিলল দুর্লভ খনিজের হদিস, অরুণাচলে বড় আবিষ্কার”

Leave a Comment