কাজাখস্তানকে পাশে নিয়ে বিরাট প্ল্যান! এবার ভারতের কাছে হার মানবে চিন

বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: চিনকে বড় ধাক্কা দিতে চলেছে ভারত! বহু আগে থেকেই তৈরি ছিল প্ল্যান। জানা যাচ্ছে, চিনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের তুলনায় এবার ভারত একটি বিকল্প বাণিজ্য পথ খুঁজে পেয়ে গিয়েছে। বেশ কয়েকটি রিপোর্ট অনুযায়ী, কাজাখস্তানের নেতৃত্বে তৈরি ট্রান্স ক্যাম্পিয়ন আন্তর্জাতিক পরিবহন রুট (Kazakhstan Trade Route) যাকে সাধারণত মিডল করিডোর বলা হয়, এবার এই করিডোরই ভারতের জন্য গেম চেঞ্জার হতে চলেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেল, মধ্য এশিয়া এবং ইউরোপের সাথে বাণিজ্যের অন্যতম এই কৌশলগত পথ যে শুধুই চিনের ওপর ভারতের নির্ভরতা কমাবে তাই নয়, পাশাপাশি একটি বিকল্প রুট পেয়ে যেতে পারে দিল্লি, যা মূলত ভৌগোলিক, কৌশলগত এবং অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী হবে।

চিনের BRI কেন ভারতের জন্য সমস্যার হয়ে উঠেছে?

বলে রাখি, চিনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ বা BRI প্রকল্পটি এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপকে সংযুক্ত করার জন্য তৈরি হলেও বর্তমানে এটি চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। মূলত সেই কারণে, এবার চিনের এই BRI ভারতের জন্য সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আসলে, চিন পাকিস্তান করিডোরটি পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের মধ্যে দিয়ে যায়, যেই অংশটি আসলে নিজস্ব অংশ হিসেবেই দেখে ভারত।

তাছাড়াও, দিল্লি কোনও ভাগেই চিনের BRI এর ঋণ ভিত্তিক নীতি ও তাতে চিনের ধারাবাহিক হস্তক্ষেপ পছন্দ করে না। ফলত, একাধিক সমস্যা নিয়েই বাণিজ্যের নতুন বিকল্প পথ খুঁজছিল ভারত। অবশেষে মিলল সাফল্য। এবার কাজাখস্তানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যপথ তথা মিডিল করিডোরটিকে ভাল বিকল্প হিসেবে দেখছে ভারত। আর তাতেই উদ্বেগ বেড়েছে ড্রাগনের।

মিডল করিডোর আসলে কী?

সহজে বলতে গেলে, মিডল করিডোর আসলে একটি ব্যস্ততম বাণিজ্য পথ যা মূলত রাশিয়া বা চিনের মতো উন্নত পরাশক্তির ওপর নির্ভর না করেই মধ্য এশিয়া, ক্যাম্পিয়ান সাগর, ককেশাস ও ইউরোপকে সংযুক্ত করে। বলে রাখি, এই রুটটি আসলে রেল ও সমুদ্রের মাধ্যমে কাজ করে। এর বিস্তৃতি প্রায় 4,250 কিলোমিটার রেল ও 500 কিলোমিটার সমুদ্র রুটে জুড়ে। বলা বাহুল্য, 2014 সালে তৈরি হয়েছিল এই ব্যস্ততম বাণিজ্যপথ।

অবশ্যই পড়ুন: ভয়ে কাঁপবে প্রতিপক্ষ, বাঘা ফুটবলারকে সই করাতে কাড়াকাড়ি ইস্টবেঙ্গল-পাঞ্জাব এফসির

ভারতের জন্য মিডিল করিডোর কেন গুরুত্বপূর্ণ?

ভারতে বেশিরভাগ বৈদেশিক বাণিজ্য সমুদ্রপথে হয়ে থাকে। বিশেষ করে সুয়েজ খালের মাধ্যমে বেশিরভাগ বাণিজ্য পরিচালিত হয় এদেশে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে হুথি আক্রমণ এবং লোহিত সাগরের অস্থিরতার কারণে সুয়েজ পথ এখন সংকটে। ফলে, জাহাজগুলি সেই পথে প্রবেশ করতে না পারায় খরচ উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

বেশ কয়েকটি রিপোর্ট অনুযায়ী, মালবাহী জাহাজের খরচ বেড়েছে 122 শতাংশ। এহেন আবহে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই মধ্য করিরোডটি সবচেয়ে নিরাপদ বিকল্প হয়ে উঠতে পারে। বিশেষ করে ইউরোপ এবং মধ্য এশিয়ার সাথে বাণিজ্যের জন্য এই বাণিজ্য পথটি ব্যবহার করে নিজেদের রপ্তানি কৌশল আরও শক্তিশালী করে তুলতে পারবে ভারত। যার ফলে আর কিছু না হলেও চিনের ওপর নির্ভরতা অনেকটাই কমবে কেন্দ্রের।

Leave a Comment