প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বাংলার অর্থনীতি শক্তিশালী করতে রাজ্যের ছোট-বড় ব্যবসায়ীদের ভূমিকা যে বেশ গুরুত্বপূর্ণ সেটি বারংবার প্রকাশ্যে এনেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই ব্যবসায়ীদের কর্মদক্ষতা বাড়াতে আরও বড় সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। এখন থেকে ব্যবসায়ীদের পাওনা পেতে আর দেরি নয়, সরকারি কাজ শেষ হলেই প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই মিলবে টাকা। ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য নতুন পোর্টাল চালু করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
ব্যবসায়ীদের জন্য নয়া পোর্টাল মমতার
রিপোর্ট অনুযায়ী, গতকাল অর্থাৎ বুধবার, নেতাজি ইন্ডোরে ব্যবসায়ী সম্মেলনে ব্যবসায়ীদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রেড রিসিভেবল ডিসকাউন্টিং সিস্টেম নামক নতুন পোর্টাল চালু করেছেন। উদ্বোধনের মাধ্যমে তিনি বলেন, ‘সরকারি কাজের পেমেন্ট পেতে দেরি হতো। কাজ হয়ে গেল, টাকা সময়ে পেল না—এর ফলে যে দেরি হচ্ছে, তাতে পরের কাজে সমস্যা হচ্ছে। ব্যবসায় আরও বিনিয়োগ করতে পারছেন না। তাই এই নয়া পোর্টাল চালুর ভাবনা নেওয়া হয়েছে যে দ্রুত এই সমস্যা সমাধান করবে। রেজিস্টার্ড MSME-র কাজ শেষ করার তথ্য যখনই পোর্টালে আপলোড করা হবে, এর সঙ্গে যুক্ত ৭২টি ব্যাঙ্ক ও বাকি আর্থিক প্রতিষ্ঠান সেই ব্যবসায়ীকে নির্দিষ্ট সময়ে টাকা দিয়ে দেবে। রাজ্য সরকার সেটা জেনে পরে তাদের টাকা মিটিয়ে দেবে।’ আগামী দিনে রাজ্যের অর্থনীতি আরও ফুলে উঠবে বলেই আশা রাখছেন মমতা।
ওয়েলফেয়ার বোর্ড তৈরির ঘোষণা মমতার
ব্যবসায়ীদের সুবিধা করে দেওয়ার জন্য এবং বাংলার অর্থনীতি শক্তিশালী করার লক্ষ্য নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা ও শিলিগুড়িতে ট্রেড ও এক্সপোর্ট ফেসিলিটেশন সেন্টার তৈরির ঘোষণা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, বাংলার তাঁত, হস্তশিল্প, টেরাকোটা থেকে শুরু করে সবটাই এই সেন্টারের মধ্যে দিয়ে পাঠানো যাবে। বিজনেস টু বিজনেস হাব তৈরি হবে বলেও জানিয়েছেন। তবে তার আগে ব্র্যান্ডিং, প্যাকেজিং, ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়েও এখন প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। অন্যদিকে গোটা রাজ্যের ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যবসা সংক্রান্ত সমস্যার দ্রুত সমাধানের জন্য পশ্চিমবঙ্গ ট্রেডার্স ওয়েলফেয়ার বোর্ড তৈরির ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। যেখানে সংযুক্ত থাকবেন সরকারি আমলারাও। যে জেলার সমস্যা, সেই জেলাতে বসেই মেটানো হবে, তাই প্রতি জেলা চেম্বার থেকে ১৫ দিনের মধ্যে নাম পাঠানোর পরামর্শ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: বাজেটে ৪৭২ কোটি থেকে বেড়ে ৫,৬০২ কোটি! সংখ্যালঘু অধিকার দিবসে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী
বর্তমানে যে হারে অনলাইন কেনাকাটির রমরমা বাড়ছে তাতে খুচরো ব্যবসায়ীরাই রাজ্যের অর্থনীতির মেরুদণ্ড বলেই উল্লেখ করছেন মমতা। তাঁর কথায়, “অসংগঠিত ক্ষেত্রে ৬৫ লক্ষ ব্যবসায়ী রয়েছেন। রাজ্যে খুচরো ব্যবসায়ীরাই বাংলার অর্থনীতির মেরুদণ্ড।” এদিন কর্মস্থানে AI বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর প্রসঙ্গ তুলেছিলেন মমতা। তিনি জানিয়েছেন এআই আসছে, প্রযুক্তিও বাড়ছে, তবে তার জেরে যাতে মানুষের রুজি-রোজগার না যায়, সেই দিকেই বাড়তি নজর দেবে রাজ্য। রাজ্যে ব্যবসার খুঁটিনাটি তথ্য প্রকাশ্যে আনার পাশাপাশি কেন্দ্রের একাধিক সিদ্ধান্তের তুলোধোনাও করেছিলেন মমতা।