কাল থেকে ভারতের উপর অতিরিক্ত ২৫% শুল্ক! এবার এই ৪ উপায়ে পাল্টা দেবে দিল্লি

Trump’s Tariff

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ভারতকে একের পর এক ঝটকা দিচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্প! হ্যাঁ, রাশিয়ার তেল কেনার শাস্তিমূলক পদক্ষেপ হিসেবে আমেরিকা 1 আগস্ট থেকেই 25% বাড়তি শুল্ক (Trump’s Tariff) চাপিয়েছে ভারতের উপর, যা আগামীকাল অর্থাৎ 27 আগস্ট থেকে কার্যকর হচ্ছে।

আর এই 25% অতিরিক্ত শুল্কের ফলে মার্কিন বাজারে ভারতীয় পণ্যের উপর 50% শুল্ক কার্যকর হবে। ফলে আমেরিকার সর্বোচ্চ শুল্কবাহী দেশগুলোর তালিকায় ভারতের নাম বড়বড় অক্ষরে লেখা থাকবে। তবে ভারত কি চুপ থাকার পাত্র?

রাশিয়া থেকে তেল কেনার শাস্তি?

যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এই বাড়তি শুল্ক ভারতের রাশিয়া নির্ভর তেল কেনার শাস্তি হিসেবে দেওয়া হয়েছে। যদিও ওষুধ শিল্প, সেমিকন্ডাক্টর কিংবা এনার্জি রিসোর্সের মতো কিছু খাতে বাড়তি শুল্ক আরোপ করা হয়নি। তবে টেক্সটাইল, গয়না, চামড়া, মৎস্যপণ্য, কেমিক্যাল বা গাড়ির যন্ত্রাংশ শিল্পে এই বাড়তি শুল্কের বিরাট প্রভাব পড়বে।

হিসাব বলছে, ভারতের আমেরিকায় রপ্তানি বছরে প্রায় 87 বিলিয়ন ডলার, যা দেশের জিডিপির প্রায় 2.5%। এদিকে 2024 সালে ভারত-আমেরিকার বাণিজ্য ঘাটতি ছিল প্রায় 45.8 বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর এই নতুন শুল্ক কার্যকর হলে সেই ফারাক আরো বাড়তে পারে বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।

এখন প্রশ্ন উঠছে, ট্রাম্পের এই শুল্ক হামলার জবাব ভারত ঠিক কোন উপায়ে দেবে? চুপ করে বসে থাকবে, নাকি সুদে আসলে ফিরিয়ে দেবে? বিশেষজ্ঞরা আপাতত ভারতের সামনে চারটি রাস্তা খোলা দেখছে। সেগুলি হল—

নতুন বাজারের খোঁজ করতে হবে ভারতকে

আমেরিকার এই শুল্কের হাত থেকে বাঁচার জন্য ভারতকে এখন বিকল্প রাস্তা খুঁজে বার করতে হবে। ইউরোপ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বা আফ্রিকার মতো দেশগুলির সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে জোর দিতে হবে। এতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরতা কমবে। পাশাপাশি রপ্তানি শুল্কের প্রভাব কিছুটা হলেও কমবে।

পাল্টা শুল্ক আরোপ

যদি আলোচনার মধ্যে সমস্যার সমাধান না মেলে, তাহলে ভারত মার্কিন পণ্যের উপর বাড়তি শুল্ক চাপিয়ে দিতে পারে। যেমন 2019 সালে বাদাম, স্টিল, আপেলের উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপিয়ে দিয়েছিল নয়াদিল্লি। এবারের তালিকায় আমেরিকার কৃষিজাত পণ্য, ফার্মাসিউটিক্যাল প্রোডাক্ট থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

রাশিয়ার সঙ্গে নতুন বাণিজ্য কৌশল

রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করায় আমেরিকার আপত্তি সত্ত্বেও মস্কো ইতিমধ্যেই ভারতকে আশ্বাস দিয়েছে যে, তাদের বাজার সবসময় ভারতীয় পণ্যের জন্য খোলা থাকবে। সেক্ষেত্রে দুই দেশের বাণিজ্যিক লেনদেন আরো শক্তিশালী করা যেতে পারে। শুধু রাশিয়া নয়, বরং ভেনিজুয়েলা বা আফ্রিকার মতো দেশগুলি থেকেও তেল আমদানি কড়া যেতে পারে। যদিও খরচ বা পরিবহন ব্যবস্থা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

আরও পড়ুনঃ ফের চড়ল সোনার দাম, রুপো নিয়েও দুঃসংবাদ! আজকের রেট

দেশীয় শিল্পের পাশে দাঁড়ানো

দেশীয় শিল্পকে ভর্তুকি বা বিশেষ প্রণোদনা দেওয়া ভারতের জন্য সবথেকে বুদ্ধিমানের কাজ হবে বলে মনে করছে বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ। হ্যাঁ, টেক্সটাইল, আইটি কিংবা গয়না শিল্পের মতো মার্কিন শুল্কের চাপে ক্ষতিগ্রস্ত খাতগুলিকে আর্থিক সহায়তা দিলে এই শিল্পগুলির উপর চাপ অনেকটাই কমবে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। এখন দেখার আগামীদিন কেন্দ্র সরকার ঠিক কোন পথে হাটে।

Leave a Comment