“কিছুই করেনি!” প্রাথমিক টেট দুর্নীতির তদন্তে হাইকোর্টের চরম ভর্ৎসনার মুখে পুলিশ

Calcutta High Court

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: এসএসসির ২০১৬ সালের পর ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেট নিয়োগ পরীক্ষাতেও বেনিয়মের ইঙ্গিত রয়েছে। হাইকোর্টে (Calcutta High Court) ঠিক এমনটাই জানিয়েছিল CBI। নকল ওয়েবসাইট তৈরি করে বাইরের লোক নিয়োগ, ফেল করাদের পাস হিসেবে দেখিয়ে নিয়োগ-সহ একাধিক অভিযোগ তোলা হয়েছে CBI-এর তদন্তে। আর এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই একটি বিরাট অংশের শিক্ষকদের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এমতাবস্থায় চাকরি সংক্রান্ত বিষয়ের তদন্ত নিয়ে রাজ্য পুলিশকে ভর্ৎসনা করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ।

প্রাথমিক TET মামলায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন!

প্রাথমিক শিক্ষক দুর্নীতি মামলার মাঝেই টাকার বিনিময়ে প্রাথমিক শিক্ষক পদে চাকরি দেওয়ার প্রতারণাকে ঘিরে কলকাতা হাইকোর্টে আরও একটি মামলা দায়ের করেছিল সুদীপ কর্মকার নামের এক ব্যক্তি। মামলাকারীর আইনজীবী ফিরদৌস সামিম অভিযোগ করে জানান যে, পর্ষদ অফিসে সাদা কাগজে সই করিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় গোবরডাঙার সুদীপ কর্মকারকে। আর সেই খবর পাঁচকান হতেই এখনও কোনো চাকরি পাননি সুদীপ। মেলেনি টাকাও, তাই প্রতারণার অভিযোগে প্রথমে গোবরডাঙা থানায় FIR দায়ের করে সুদীপের পরিবার। কিন্তু সেখানে তদন্তে বেশ গাফিলতি দেখা যায়, তাই তদন্তে পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে মামলা ওঠে হাইকোর্টে। গতকাল অর্থাৎ সোমবার সেই মামলার তদন্তেই বিরক্ত প্রকাশ করল বিচারপতি ঘোষ।

পুলিশকে তুলোধোনা বিচারপতি ঘোষের

আদালতের সূত্র অনুযায়ী, গতকাল সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের ডিভিশন বেঞ্চে টাকার বিনিময়ে প্রাথমিক শিক্ষক পদে চাকরি দেওয়ার প্রতারণা মামলায় মামলাকারীর অভিযোগ শুনে পুলিশের তদন্তে বিরক্ত প্রকাশ করেন বিচারপতি। এদিন হাইকোর্টে সকলের সামনে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ জানান, “কিছুই করেনি পুলিশ তদন্তের। একটা চার্জশিট জমা দিয়ে দিয়ে দায়িত্ব সেরেছে। চেষ্টার অভাব রয়েছে, সঠিক তদন্ত করতে আবেগের প্রয়োজন।” এছাড়াও পুলিশের উদ্দেশ্যে এদিন বিচারপতি ঘোষ আরও বলেন যে, “রাজ্যকে চারিদিকে ভর্ৎসনা করা হচ্ছে চাকরি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কিন্তু সেক্ষেত্রে তদন্তকারীদের কোনও হেলদোল নেই। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করুন, নইলে মানুষের মনে পুলিশের প্রতি আস্থা তৈরি হবে না।”

আরও পড়ুন: নাবালিকা ছাত্রীদের অপহরণের অভিযোগ! শিলিগুড়িতে গ্রেপ্তার AIDSO-র জেলা সভাপতি সহ ৪

পরবর্তী শুনানি কবে?

সবশেষে চাকরি প্রতারণামূলক মামলায় বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ নির্দেশ দেন যে, পরবর্তী শুনানির দিন তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট জমা দেবে এসডিপিও হাবড়া। এবং অভিযুক্তকে খুঁজতে সিআইডি-র নিখোঁজ সন্ধান দফতরের সাহায্য নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। জানা গিয়েছে, এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ৩ নভেম্বর। অন্যদিকে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার আগের শুনানিতে ই-মেল সংক্রান্ত তথ্য খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। গতকাল সেই নির্দেশ অনুযায়ী রিপোর্ট পেশ করে রাজ্যের আইনজীবী। যেখানে স্পষ্ট বলা হয় যে প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ডের ই-মেল থেকে স্পুফিং করা হয়েছে, কিন্তু সেই ই-মেল অন্য ডোমেন থেকে করা হয়েছে, বোর্ডের ব্যবহৃত ডোমেন থেকে নয়। তাই বোর্ডের কোনও কর্মীর এই প্রতারণায় যুক্ত থাকার কোনও প্রমাণ মেলেনি।

Leave a Comment