সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: কীভাবে দেখবেন ২০০২ সালের ভোটার লিস্ট (2002 Voter List)? আজ থেকেই বাংলায় শুরু হয়েছে এসআইআরের কাজ। রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে অফিস, চায়ের দোকান সব জায়গায় এখন আলোচনার মূল বিষয় এই এসআইআর। সকলের মনে সংশয়, এসআইআর হলে কি সত্যিই ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ যাবে! অনেকেই এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে। তবে আবার অনেকেই ভাবছে, ২০০২ সালের ভোটার লিস্ট কোথায় পাব বা কীভাবে নিজের নাম দেখবো। কাদের নামই বা বাদ পড়বে? সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে দেবো আজকের এই প্রতিবেদনে।
প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে তাদের ওয়েবসাইটে ইতিমধ্যেই ২০০২ সালের ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। মূলত প্রতিটি বিধানসভা অঞ্চল অনুযায়ী ওই তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। তাই সরাসরি কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়েই বাড়ি বসেই দেখে নিতে পারবেন ২০০২ সালের ভোটার লিস্টে আপনার কিংবা আপনার পরিবারের কারও নাম রয়েছে কিনা।
কীভাবে চেক করবেন ২০০২ সালের ভোটার লিস্ট?
২০০২ সালের ভোটার লিস্টে নাম রয়েছে কিনা তা দেখার জন্য নিম্নলিখিত ধাপগুলি অনুসরণ করতে হবে-
১) প্রথমে আপনি গুগলে গিয়ে ‘2002 West Bengal Voter List’ লিখে সার্চ করতে পারেন অথবা সরাসরি ceowestbengal.nic.in/Roll_dist লিঙ্কে ক্লিক করতে পারেন।
২) এরপরে ওয়েবসাইটে ঢুকলে আপনি একাধিক জেলার নাম দেখতে পাবেন। সেখান থেকে আপনার নিজের জেলা থেকে সিলেক্ট করতে হবে।
৩) জেলা সিলেক্ট করার পর আপনি বিধানসভা কেন্দ্রগুলির নাম দেখতে পাবেন। সেখান থেকে আপনার বিধানসভা কেন্দ্র সিলেক্ট করতে হবে।
৪) এরপর আপনি যে বুথে বা স্কুলে গিয়ে ভোট দিয়েছেন, সেটিকে খুঁজে ক্লিক করতে হবে।
৫) এরপরেই আপনার সামনে ২০০২ সালের ভোটার লিস্ট খুলে যাবে। সেখান থেকে আপনার নাম খুঁজে নিলেই সমস্যা সমাধান।
নাম না থাকলে কী করবেন?
যদি কোনওক্রমে ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় আপনার কিংবা আপনার বাবা-মায়ের নাম না থাকে, তাহলে কমিশন নির্ধারিত ১১টি ডকুমেন্টের মধ্যে যে কোনও একটি ডকুমেন্ট দেখালে আপনার নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়বে না। আর সেই ডকুমেন্টগুলোর তালিকায় রয়েছে-
১) ১৯৮৭ সালের ১ জুলাইয়ের আগে সরকার বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, ব্যাঙ্ক কিংবা পোস্ট অফিস, এলআইসি বা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার দেওয়া কোনওরকম পরিচয়পত্র।
২) নিজের জন্মের শংসাপত্র বা বার্থ সার্টিফিকেট।
৩) পাসপোর্ট।
৪) রাজ্য সরকারের দেওয়া স্থায়ী বাসস্থানের প্রমাণপত্র।
৫) যে কোনও স্বীকৃত পর্ষদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া মাধ্যমিকের সার্টিফিকেট কিংবা শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট।
৬) ফরেস্ট রিজার্ভ সার্টিফিকেট।
৭) উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের দেওয়া তপশিলি জাতি, তপশিলি উপজাতি, অনগ্রসর সম্প্রদায় বা অন্য যে কোনও কাস্ট সার্টিফিকেট।
৮) জাতীয় নাগরিকের নথি বা এনআরসি।
৯) সরকারের তরফ থেকে দেওয়া কোনও জমি বা বাড়ি বরাদ্দের শংসাপত্র কিংবা দলিল।
১০) রাজ্য কিংবা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের দ্বারা তৈরি করা ফ্যামিলি রেজিস্টার তথ্য।
১১) কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য সরকার বা রাষ্ট্রায়ত্ত কোনও সংস্থার দেওয়া পরিচয়পত্র। এছাড়াও অবসরপ্রাপ্তরা পেনশন পেমেন্টের অর্ডারও দেখাতে পারে।
এই ১১টি ডকুমেন্টের মধ্যে আপনি যে কোনও একটি ডকুমেন্ট দেখালেই হবে। তবে এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, আধার কার্ডকেও আপনি পরিচয় প্রমাণপত্র হিসেবে দেখাতে পারেন। তবে সেটি দিয়ে কোনওরকম ভাবেই নাগরিকত্বের দাবি করতে পারবেন না। কারণ, আধার কার্ডের সঙ্গেও এই ১১টি ডকুমেন্টের মধ্যে যে কোনও একটি দেওয়া লাগবে।
আরও পড়ুনঃ LG-র ৪৩ ইঞ্চি স্মার্ট টিভি মাত্র ১০ হাজার টাকায়! অফার Amazon, Flipkart-র
এসআইআরে অংশ না নিলে কী হবে?
আপনি ২০২৫ সালের এসআইআরে যদি অংশগ্রহণ না করেন, তাহলে ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের জন্য যে নতুন তালিকা প্রকাশ করা হবে, সেখানে আপনার নাম থাকবে না। পাশাপাশি আপনি বিধানসভা ভোটেও কোনওরকম ভাবে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। এমনকি আপনি আপনার নাগরিকত্ব হারাবেন। তাই অবশ্যই এখনই গুগলে গিয়ে ২০০২ সালের ভোটার তালিকা ডাউনলোড করুন এবং দেখে নিন আপনার নাম রয়েছে কিনা। আর যদি নাম না থাকে, তাহলে অবশ্যই কমিশনের দেওয়া এই ১১টি ডকুমেন্টের মধ্যে যে কোনও একটি সংগ্রহ করে রাখুন।