বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: গত জুনে রাজ্যের OBC তালিকায় স্থগিতাদেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। উচ্চ আদালতের তরফে এমন বিচার পেয়ে সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এবার রাজ্যের আবেদনের ভিত্তিতে কার্যত কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করালো শীর্ষ আদালত।
সোমবার, OBC মামলায় রাজ্যকে একপ্রকার স্বস্তি দিয়েই শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, কীভাবে হাইকোর্ট এমন স্থগিতাদেশ দিতে পারে? এমন প্রশ্নেই উচ্চ আদালতের রায়ের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ চাপাল দেশের শীর্ষ আদালত।
শীর্ষ আদালতের সিদ্ধান্তে স্বস্তি রাজ্য সরকারের?
সোমবার, নির্ধারিত সময়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই, বিচারপতি কে বিনোদ চন্দ্রন ও বিচারপতি এনভি আঞ্জারিয়ার বেঞ্চে শুরু হয়েছিল শুনানি। এদিন শুনানি পর্ব চলাকালীন রাজ্যের OBC তালিকার ওপর কলকাতা হাইকোর্টের গত 17 জুনের স্থগিতাদেশের নির্দেশকে সামনে রেখে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেন, কীভাবে একটি এক্সিকিউটিভ ফাংশনে স্থগিতাদেশ দিতে পারে কলকাতা হাইকোর্ট?
মূলত এমন প্রশ্নই এদিন ছুঁড়ে দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের মাননীয় প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই। উল্লেখ্য, গত 24 জুলাই কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ দিয়ে সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির এজলাসে মামলা মেনশন করে দ্রুত শুনানির আবেদন জানিয়েছিলেন রাজ্য সরকারের আইনজীবী কপিল সিব্বল। সোমবার সেই মতোই আদালতে সাওয়াল করেন তিনি।
আর তাতেই, কলকাতা হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের রায়কে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করালো দেশের শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, শুধুমাত্র সংরক্ষণ প্রদানের জন্য নির্বাহী নির্দেশনা যথেষ্ট। এর জন্য আলাদা করে কোনও আইনের প্রয়োজন হবে না।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির এমন পর্যবেক্ষণের পর রাজ্যের তরফে আইনজীবী সিব্বল প্রধান বিচারপতি গাভাইকে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশ চাপানোর আবেদন জানান। যদিও সাওয়াল করার পাশাপাশি কড়া যুক্তি দিয়েছিলেন রাজ্য পক্ষের আইনজীবী।
অবশ্যই পড়ুন: এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ হোক, চান সৌরভ গাঙ্গুলি! জানালেন কারণও
এদিন সুপ্রিম কোর্টে কপিলের যুক্তি ছিল, একটি অবমাননার মামলা দায়ের করে তাতে স্থগিতাদেশ চাপিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। যার জেরে নিয়োগ থেকে শুরু করে প্রমোশন সব ক্ষেত্রেই সমস্যা হচ্ছে। সোমবার রাজ্য পক্ষের আইনজীবির তরফে এমন যুক্তি শোনার পর শেষমেষ শীর্ষ আদালতের বিচারপতি জানান, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ভুল রয়েছে!
আগামী 6-8 সপ্তাহের মধ্যে শুনানি শেষ করার পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্টকে একটি বিশেষ বেঞ্জ গঠনের নির্দেশ দেয় দেশের শীর্ষ আদালত। সব মিলিয়ে বলাই যায়, কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার ক্ষেত্রে সফল হয়েছে রাজ্য সরকার! এখন দেখার সুপ্রিম নির্দেশ মেনে রাজ্যের OBC মামলা কোন খাতে গড়ায়!