বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: দুঃসংবাদটা এসেছিল শুক্রবার দুপুরে। সকলকে কাঁদিয়ে সংসারের মায়া ত্যাগ করে পরলোক গমণ করেন স্বনামধন্য গায়ক, অসমের হার্টথ্রব জুবিন গর্গ (Zubeen Garg)। ইয়া আলি থেকে শুরু করে বাংলায় চোখের জলে, পিয়া রে, মন মানে না এর মতো একাধিক হিট গান শ্রোতাদের উপহার দিয়েছেন তিনি। এহেন একজন শিল্পীর মৃত্যুতে আজও শোক কাটেনি ভক্ত মহলে।
জানা যায়, সিঙ্গাপুরে স্কুবা ড্রাইভিং করতে গিয়েই দুর্ঘটনায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন জুবিন। যদিও অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে শারীরিক অবস্থাও খুব একটা ঠিক ছিল তাঁর। প্রকাশ্যে আসা বেশ কয়েকটি মেডিকেল রিপোর্টেও সেই কথা উল্লেখ রয়েছে! প্রিয় গায়ক যে সারাদিনই মদে ডুবে থাকতেন সে কথা বোধহয় জানতে বাকি নেই কারোরই। সূত্রের খবর, শেষবারের মতো মৃত্যুর আগের রাতেও মদ্যপান করেছিলেন গায়ক। কিন্তু কেন মদ্যপানের প্রতি এত প্রবল আসক্ত ছিলেন অসমের রত্ন জুবিন? জানুন সেই করুণ কাহিনী (Zubeen Garg Sad Story)।
কী কারণে নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন জুবিন গর্গ?
1972 সালের 18 নভেম্বর মেঘালয়ের তুরা অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন জুবিন। অসমের সংগীতশিল্পী মূলত অসমিয়া ভাষার গান দিয়েই নিজের কেরিয়ার শুরু করেছিলেন। যদিও পরবর্তীতে বাংলা ছাড়াও বলিউডের জন্যও বহু হিন্দি গান গেয়েছেন তিনি। জানা যায়, শিল্পীর বাবা মোহিনী বরঠাকুর পেশায় ছিলেন ম্যাজিস্ট্রেট। তাছাড়াও জুবিনের মা ইলি বরঠাকুর ছিলেন সংগীতশিল্পী। জুবিন ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, 2006 সালে ইয়া আলি গানের মাধ্যমেই বদলে যায় ওর জীবন।
জুবিন ঘনিষ্ঠদের দাবি, শুরুর দিকে একেবারেই মদ্যপানে আসক্ত ছিলেন না জুবিন। একটা সময় ছিল, গায়ক কোনওরকম নেশাজাত দ্রব্য পছন্দই করতেন না। তবে ছন্দ কাটে বোনের (Zubeen Garg Sister) মৃত্যুর পর। 2022 সালের ফেব্রুয়ারিতে এক গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় জুবিনের বোন পেশায় অভিনেত্রী-গায়িকা জংকী বরঠাকুরের। জানা যায়, অনুষ্ঠান করতে যাওয়ার পথেই প্রাণ হারান তিনি। এদিন দাদা জুবিনও সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠান করছিলেন।
জীবিত থাকাকালীন বেশ কয়েকটি সাক্ষাৎকারে প্রয়াত গায়ক জুবিন বেশ কয়েকবার মদাসক্তির কথা স্বীকার করে নিয়েছিলেন। কিন্তু কেন নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েন গায়ক? ঘনিষ্ঠ মহলে নাকি জুবিন বলেছিলেন, বোনের মৃত্যুর পরই তিনি মদ্যপানে ডুবে যান। কাছের মানুষের চলে যাওয়াটা নাকি একেবারেই মেনে নিতে পারেননি তিনি। তাই বোন জংকী দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাতেই মদ্যপান শুরু করেন গর্গ। এরপর থেকে খুব কম দিনই গিয়েছে, যখন নেশা ছাড়া সময় কাটিয়েছেন জুবিন।
অবশ্যই পড়ুন: আর চিন্তা নেই! সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দেখুন আজকের ভারত-পাক ম্যাচ, রইল উপায়
উল্লেখ্য, মৃত্যুর আগে একটি পডকাস্টে জুবিন জানিয়েছিলেন, স্বনামধন্য গায়ক অরিজিৎ সিংকে তিনি নিজের দাদার মতোই দেখতেন। সেই দাদাই নাকি একবার তাঁকে মদ ছেড়ে গাঁজায় আসার পরামর্শ দিয়েছিলেন। যদিও একথা একেবারে প্রত্যক্ষভাবে বলেননি জুবিন। গায়কের কথায়, অরিজিৎ ভাই গাঁজায় আছেন, আমি মদ্যপানে…. উনি এয়ার ফোর্সে আমি নেভিতে। তবে অরিজিৎ ভাই আমাকে নেভি ছেড়ে এয়ার ফোর্সে যোগ দেওয়ার কথা বলেছিলেন। যদিও সেই পরামর্শ শোনেননি তিনি। গায়কের বক্তব্য ছিল, ধোঁয়া আমার একেবারেই সহ্য হয় না।