প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগেই মহাবিপদ! কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) বিরুদ্ধে এবার ১০০ কোটি টাকার মানহানির মামলা ঠুকলেন বিখ্যাত অভিনেতা তথা বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী! বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন, তাই সময় নষ্ট না করে এখন থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে শুরু হয়ে গিয়েছে ভোট প্রস্তুতিতে। এমতাবস্থায় আইনি জটে ফাঁসলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। অভিযোগ মিঠুনের বিরুদ্ধে কুণালের এক মন্তব্যকে ঘিরেই করা হয়েছে মানহানির মামলা।
মিঠুনের বিরুদ্ধে ‘কুমন্তব্য’ কুণালের
সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ অভিযোগ করেছিলেন যে, বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে সরাসরি জড়িত। তাই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার নজরে আসার আগেই মিঠুন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন শুধুমাত্র নিজেকে বাঁচানোর জন্য! আর এই মন্তব্যই রীতিমত আগুনে ঘি ঢালে। এখানেই শেষ নয়, মিঠুনের অভিযোগ, কুণাল নাকি এও বলেছিলেন যে মিঠুনের ছেলে ধর্ষণ মামলার সঙ্গে যুক্ত, যা সঠিক নয়। এমনকি, তাঁর স্ত্রীও নাকি আর্থিক লেনদেনে জড়িত বলে কুণাল মন্তব্য করেছেন। তাই এর প্রতিবাদে এক বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন মিঠুন চক্রবর্তী।
মানহানির মামলা করলেন মিঠুন
প্রথমদিকে কুণাল ঘোষের এই কুরুচিকর মন্তব্যের জেরে মিঠুন চক্রবর্তী আইনি নোটিস পাঠিয়েছিলেন তৃণমূল মুখপাত্রকে। কিন্তু সেই জবাবে সন্তুষ্ট না হয়ে শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হলেন মিঠুন। রিপোর্ট অনুযায়ী, গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার, কলকাতা হাইকোর্টে কুণালের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকার মানহানির মামলা দায়ের করলেন অভিনেতা। এই মামলায় মিঠুন দাবি করেন যে, কুণালের মন্তব্যের কারণে নতুন চলচ্চিত্র এবং বিজ্ঞাপনের কাজে ব্যাঘাত ঘটেছে তাঁর। এমনকি, এখনকার কাজের উপরেও প্রভাব পড়েছে। এর ফলে পেশাগত ভাবে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাই ক্ষতিপূরণ হিসাবে তাঁকে ১০০ কোটি টাকা দেওয়া হোক বলে দাবি করেছেন।
মামলায় অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী কুণাল ঘোষের বিরুদ্ধে আরও দাবি করেছেন যে, রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ, পদ্মভূষণ ও দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারপ্রাপ্ত তিনি। অথচ তাঁর নামকে উদ্দেশ্যমূলক ভাবে মিথ্যা কুৎসার সঙ্গে জড়ানো হয়েছে। তাই তিনি দাবি করেছেন যে ওই ধরনের কুমন্তব্য থেকে কুণালকে বিরত থাকার নির্দেশ দিক আদালত।
পাল্টা প্রতিক্রিয়া কুণালের
এদিকে এই মানহানির মামলা প্রসঙ্গে পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কুণাল ঘোষ। নিজের অবস্থানে অনড় থেকে তিনি বলেন, “যাঁর সত্যিকারের মান থাকে, তিনি কি বারবার দলবদল করেন? ভয় পেয়ে কেউ দল পাল্টায়! কোর্টে দেখা হবে।” এছাড়াও কুণাল আরও জানিয়েছেন যে, তিনিও মিঠুনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। চার-পাঁচটি চিটফান্ডের সঙ্গে মিঠুনের কী সম্পর্ক ছিল, সেটার পুরোটা আদালতেই তুলে ধরবেন।”
আরও পড়ুন: CAA নিয়ে ঘোষণার পিছনে ছিল অন্য কারোর হাত! প্রকাশ্যে সেই তথ্য তুলে ধরলেন শুভেন্দু
উল্লেখ্য, হাই কোর্টে মামলা দায়ের করতে গেলে ‘কোর্ট ফি’ দিতে হয়। সেক্ষেত্রে মিঠুন চক্রবর্তী মানহানির মামলায় সর্বোচ্চ ‘কোর্ট ফি’ ৫০ হাজার টাকা জমা দিয়েছেন। তবে এখনও পর্যন্ত মামলার শুনানির দিন ঠিক হয়নি। তবে আইনজীবী মহলের অনুমান, আগামী সপ্তাহেই এই মামলা আদালতের তালিকায় উঠতে পারে।