প্রীতি পোদ্দার, কুলটি: সমাজ বেশ উন্নত হলেও এখনও মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন প্রশাসন। একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেই চলেছে চারিদিকে। কিছুদিন আগে দুর্গাপুরের ধর্ষণ কাণ্ড নিয়ে রাজনৈতিক মহলে এক চাপা উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল, এখনও চলছে তার তদন্ত, এমতাবস্থায় আসানসোল (Asansol) পুরনিগমের কুলটি থানা এলাকায় জনজাতি সম্প্রদায়ের এক গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগকে ঘিরে তৈরি হল চাঞ্চল্য পরিস্থিতি। বুধবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে।
ধর্ষণের শিকার এক গৃহবধূ
রিপোর্ট অনুযায়ী গত বুধবার, গভীর রাতে আসানসোল পুরনিগমের কুলটি থানা এলাকায় এক গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ঘটনার সময় বাড়িতে ছিলেন না নির্যাতিতার স্বামী। অভিযোগ, ওইদিন রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ নির্যাতিতার স্বামী জরুরী কাজের জন্য বাড়ির বাইরে ছিলেন, যার ফলে সেই সময় বাড়িতে একাই ছিলেন গৃহবধূ। আর সেই সুযোগে বাড়িতে হঠাৎ করে ঢুকে পড়ে এক প্রতিবেশী যুবক। কোনো কিছু বোঝার আগেই গৃহবধূর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং শারীরিক নির্যাতন চালায় ওই যুবক। এরপর কাজ সেরে স্বামী বাড়ি ফিরতেই গোটা ঘটনা খুলে বলেন তিনি। পরেরদিন সেই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
গ্রামবাসীর মারধরের মুখে অভিযুক্ত
কুলটিতে এইরূপ ধর্ষণের ঘটনায় গ্রামের লোক ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করে। সঙ্গে সঙ্গে অভিযুক্তের বাড়িতে গিয়ে চড়াও হন তাঁরা। বেধড়ক মারধর করে তাঁকে উত্তেজিত গ্রামবাসী। এরপর নির্যাতিতার পরিবার বৃহস্পতিবার রাতে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে অভিযুক্ত প্রতিবেশী যুবকের বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করে পরে অভিযুক্তকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু অভিযুক্ত যুবক নিজের বিরুদ্ধে ওঠা ধর্ষণের অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে। তাঁর দাবি, “সব মিথ্যে। আমি তো রাত ১১টার মধ্যে ঘরে চলে এসেছিলাম।” চরম শাস্তির দাবি তুলেছে গ্রামবাসী। ইতিমধ্যেই পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে এবং নির্যাতিতার পরিবারের সদস্য এবং স্থানীয়দের সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: শুধু পুলিশই নয়, দোষী সাংসদও! মহারাষ্ট্রের ধর্ষিতা চিকিৎসকের সুইসাইড নোটে বিস্ফোরক তথ্য
স্ত্রীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া এই ভয়ংকর ঘটনার পরিণতি দেখে বেশ ক্ষুব্ধ নির্যাতিতার স্বামীর। তিনি বলেন, “আমি তখন বাড়িতে ছিলাম না। রাত তিনটে নাগাদ ফিরি। শুনি, ওকে রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ ধরে নিয়ে যায়, ছাড়ে রাত ২টোয়। ছেলেটাকে গ্রামের লোক ধরেছে। তারপর পুলিশে দেওয়া হয়েছে। আমরা শুধু চাই, বিচার হোক—যাতে আর কোনও মেয়ের সঙ্গে এমন না হয়।” অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি বিধান চন্দ্র মাজি বলেন, “খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। দেখি ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানাই। আমরা চাই, পুলিশের মাধ্যমে নিরপেক্ষ তদন্ত হোক এবং দোষীর শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।”