কুলদীপ সিংহ সেঙ্গারকে এখনই জামিন নয়! উন্নাও ধর্ষণকাণ্ডে বড় নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

Unnao Rape Case

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সাজাপ্রাপ্ত আসামী হয়ে মুক্তি দেওয়া সম্ভব নয়….উন্নাওয়ের ধর্ষণকাণ্ডে (Unnao Rape Case) দোষী সাব্যস্ত হওয়া বিজেপির বহিষ্কৃত বিধায়ক কুলদীপ সিংহ সেঙ্গারের বিরুদ্ধে এমনই মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। সম্প্রতি কুলদীপের সাজা স্থগিত ও জামিনে মুক্তির নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল সিবিআই। সেই মামলায় এবার দিল্লি হাইকোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ জারি করল শীর্ষ আদালত। অর্থাৎ, এখনই মুক্তি পাচ্ছেন না কুলদীপ।

জামিন মঞ্জুর করেছিল হাইকোর্ট

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশের উন্নাওয়ে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযোগ ওঠে, বাঙ্গেরমউ কেন্দ্রের চার বারের বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ এবং তাঁর সঙ্গী শশীর বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার মামলায় ২০১৮ সালের ১৩ এপ্রিল কুলদীপকে গ্রেফতার করে পুলিশ। চার্জশিটের ভিত্তিতে পকসো আইনের ১২০বি (ষড়যন্ত্র), ৩৬৩ (অপহরণ) ৩৬৬ (অপহরণ ও বিবাহের জন্য বাধ্য করা) ৩৭৬ (ধর্ষণ)-সহ একাধিক ধারায় চার্জ গঠন করে নিম্ন আদালত। সেই মামলায় কুলদীপকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা শোনানো হয়। এরপরই নিম্ন আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কুলদীপ। গত মঙ্গলবার বিজেপির বহিষ্কৃত নেতার জামিন মঞ্জুর করেছিল হাইকোর্ট এবং ১৫ লক্ষ টাকা ব্যক্তিগত বন্ডে কুলদীপের সাজা মকুব করে।

জামিন পাওয়ার নির্দেশে স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের

দিল্লি হাইকোর্ট উন্নাওয়ে ধর্ষণের ঘটনার মামলায় স্পষ্ট জানায় যে, উন্নাওয়ের নির্যাতিতার বাড়ির পাঁচ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে প্রবেশ করতে পারবেন না কুলদীপ সিং। নির্যাতিতার পরিবারকে হুমকি না-দেওয়ারও নির্দেশও দেয়। তবে জামিনের ওই নির্দেশের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে যায় উন্নাওকাণ্ডের তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। এবার সেই মামলায় কুলদীপ সিংহ সেঙ্গারের জামিন পাওয়ার নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। রিপোর্ট মোতাবেক আজ অর্থাৎ সোমবার, উন্নাও ধর্ষণকাণ্ডে বিজেপির বহিষ্কৃত বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গারের জামিনের মামলা উঠেছিল। আর সেই মামলায় জামিনের রায়ে স্থগিতাদেশ দিল প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্তের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বিশেষ অবসরকালীন বেঞ্চ। এদিন প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, “দোষী সাব্যস্ত হওয়া ব্যক্তি আর এক অপরাধে দোষী সাব্যস্ত। এই বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা দিল্লি হাই কোর্টের গত ২৩ ডিসেম্বরের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিচ্ছি।” অর্থাৎ এই নির্দেশের ফলে বোঝাই যাচ্ছে যে এখনই কুলদীপ জেল থেকে ছাড়া পাবেন না। আগামী জানুয়ারি মাসে এই মামলার পরবর্তী শুনানি।

৪ সপ্তাহের মধ্যে জমা দিতে হবে হলফনামা

প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত জামিন মামলার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিলেন যে, কুলদীপ সেঙ্গারের জামিন মঞ্জুর করার আগে তাঁকে যে যে বিষয়গুলির উপরে ভিত্তি করে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল, সেগুলি দিল্লি হাইকোর্টের নজর এড়িয়ে গিয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। যা অদ্ভুত বলেও মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি। পাশাপাশি সিবিআই-এর দায়ের করা একটি আবেদনের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্ট চার সপ্তাহের মধ্যে কুলদীপ সেঙ্গারকেও নোটিশ জারি করে এই বিষয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছে। এই মামলায় সিবিআইয়ের পক্ষে সওয়াল করেছেন কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। শুনানিতে তিনি গোটা ঘটনাকে ‘ভয়াবহ’ আখ্যা দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: থাই দেখতে দেখতে যাবে ছেলেরা, বুঝে চলা উচিৎ! মেয়েদের পোশাক নিয়ে বেফাঁস চিরঞ্জিত

প্রসঙ্গত, গত বুধবার সন্ধ্যায় দশ জনপথে গিয়ে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী ও সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবারের লোকজন। সেখানে তাঁদের মামলায় বড় কোনও আইনজীবীর সাহায্য চেয়েছিলেন। আর এর পর সিবিআই-ই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। যদিও সিবিআইয়ের এই পদক্ষেপেই স্বস্তির বদলে শঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন নির্যাতিতা ও তাঁর আইনজীবীরা। তাঁদের প্রশ্ন, “এতদিন সিবিআই কী করছিল? সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার দোষী কুলদীপ সেঙ্গারের সঙ্গে গিয়ে দেখা করেছিলেন। আমাদের সুপ্রিম কোর্টে আরও সতর্ক থাকতে হবে।”

Leave a Comment