সহেলি মিত্র, কলকাতা: ৯ আগস্ট, ২০২৫… আরজি কর ইস্যুতে সরগরম হয়ে উঠেছিল কলকাতা ও হাওড়া। আরজি কর মেডিকেল কলেজের তরুণী চিকিৎসকের নৃশংস ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার বর্ষপূর্তিতে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন নির্যাতিতার পরিবার। এদিকে সেই প্রতিবাদে সাড়া দিয়েছিল বঙ্গ বিজেপি থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। কলকাতা ও হাওড়ায় পুলিশের সাথে বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। ঘটনায় পুলিশ কর্মী থেকে শুরু করে নির্যাতিতার মা ও বহু মানুষ আহত হন। যদিও এবার পুলিশ কর্মীদের ওপর আক্রমণ এবং অকথ্য গালিগালাজের ঘটনায় সরব হল পুলিশ সদস্যদের পরিবার। সেইসঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন তাঁরা।
শুভেন্দুকে নিশানা পুলিশ পরিবারের সদস্যদের
গত ৯ আগস্ট নির্যাতিতার বাবা-মা এবং শুভেন্দু অধিকারী এবং অগ্নিমিত্রা পাল সহ বিরোধী বিজেপি নেতাদের নেতৃত্বে মিছিলটি আরও তীব্র হয়ে ওঠে যখন বিক্ষোভকারীরা নবান্নের চারপাশে নিষেধাজ্ঞামূলক আদেশের অধীনে থাকা পুলিশ ব্যারিকেড ভেঙে যাওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশ লাঠিচার্জ, জলকামান এবং লাঠিচার্জ করে পাল্টা আক্রমণ করে, যার ফলে ১০০ জনেরও বেশি আহত হয়, যার মধ্যে ভুক্তভোগীর মাও ছিলেন। এদিকে বিক্ষোভকারীদের পাল্টা হামলায় আহত হন বহু পুলিশ কর্মীও। সেইসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে পুলিশের বিরুদ্ধে অকথ্য গালিগালাজ করার অভিযোগ ওঠে। এই ধরণের ঘটনার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন পুলিশ সদস্যদের পরিবার। মিছিল শেষে সাংবাদিক বৈঠকে তাঁরা নিজেদের ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন।
এবারের নবান্নের মিছিলে পুলিশ কর্মীদের যেভাবে কু কথা শুনতে হয়েছে বা মার খেতে হয়েছেন তা অগ্রহণযোগ্য বলে দাবি তাঁদের পরিবারের সদস্যদের। এই ধরণের ঘটনা পুলিশ কর্মীদের বাড়ির সদস্যদের ওপর পড়েছেও বলে দাবি করা হয়েছে। আর এই ঘটনায় মূল দায়ী করা হয়েছে বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীকে।
সাংবাদিক বৈঠকে উঠল অনুব্রত মণ্ডল প্রসঙ্গও
পুলিশ পরিবারের সদস্যদের মূল অভিযোগ, যারা সমাজের রক্ষক তাদেরকেই সবসময় আক্রমণ করা হচ্ছে। উচিত-অনুচিত কিছু না ভেবেই কুরুচিকর কথা বলা হচ্ছে তাদের উদ্দেশে। আর এতে শুধু পুলিশকর্মীরাই নন, ভুক্তভোগী হতে হচ্ছে পরিবারের সদস্যদেরও। বাড়ির মহিলা, বয়স্ক, এমনকী শিশুরাও মানসিকভাবে আক্রান্ত হচ্ছেন বলে দাবি তাদের।
আরও পড়ুনঃ ফের বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্তের আশঙ্কা! দুর্যোগ নিয়ে বড় আপডেট, আগামীকালের আবহাওয়া
এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলেরও প্রসঙ্গ ওঠে। সেখানে হয় নতুন ঘটনা। অনুব্রত মণ্ডল-প্রশ্নে মেজাজ হারান পুলিশকর্মীর পরিবারের সদস্যেরা। কার্যত সাংবাদিক সম্মেলন শেষ না করে বাইরে বেরিয়ে যান তাঁরা। মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগেই বীরভূমের আইসি-কে মা-বোন তুলে গালিগালাজ করেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। সেই সময় কেন পুলিশ-পরিবার সরব হয়নি সেই প্রশ্ন ওঠে এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে। এই প্রশ্ন শুনে মেজাজ হারান পুলিশ সদস্যদের পরিবার। মেজাজ হারিয়ে সদস্যরা বলেন, তাঁরা তখনও প্রতিবাদ করেছিলেন। তবে অনুব্রত মণ্ডল সঙ্গে সঙ্গেই ক্ষমা চেয়ে নেন। যাইহোক, পুলিশ কর্মীদের ওপর হামলার এই ঘটনার জল কতদূর এগোয় এখন সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।