কেন্দ্রের কড়াকড়িতে সংকটে বাংলার লক্ষ লক্ষ মানুষের পেনশন!

Old Age Scheme

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: হাতে গোনা আর কয়েকটা মাস, তারপরেই বছর ঘুরলে ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। তাই তো ভোট প্রচারের প্রস্তুতিতে ময়দানে নেমে পড়েছে শাসকদল থেকে শুরু করে বিরোধী দলগুলি। এমতাবস্থায় প্রকল্প নিয়ে ফের কেন্দ্র এবং রাজ্যের মধ্যে বাদ-প্রতিবাদ লেগেই রয়েছে। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প, বাড়ি নির্মাণ প্রকল্প নিয়ে শুরু থেকেই রয়েছে দুই দলের মধ্যে প্রবল তর্কাতর্কি। এমতাবস্থায় আরও এক প্রকল্প নিয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ল রাজ্য সরকারের। কেন্দ্রের নিয়মে এবার বাংলায় ২ লক্ষের বার্ধক্য ভাতায় (Old Age Scheme) কোপের আশঙ্কা বাড়ল।

ডিজিটাল লাইফ সার্টিফিকেট জমা নেওয়ার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি কেন্দ্র

উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গে ‘জয় বাংলা’ প্রকল্পের অধীনে বৃদ্ধ, বিধবা ও বিশেষভাবে সক্ষম এক কোটিরও বেশি উপভোক্তাকে প্রতি মাসে এক হাজার টাকা করে পেনশন দিয়ে থাকে রাজ্য সরকার। প্রকল্প অনুযায়ী ৬০ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে থাকা প্রবীণ উপভোক্তারা প্রতি মাসে এক হাজার টাকা করে পেয়ে থাকেন। তার মধ্যে মাত্র ৩০০ টাকা দেয় কেন্দ্র। আর বাকি ৭০০ টাকা দিতে হয় রাজ্যকে। অন্যদিকে ৮০ বছরের বেশি বয়সিদের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ অর্থ দেয় রাজ্য। এমতাবস্থায় চলতি বছরে বার্ধক্য ভাতা প্রাপকদের ডিজিটাল লাইফ সার্টিফিকেট বা DLC জমা নেওয়ার ক্ষেত্রে নতুন নিয়ম চালু করেছে কেন্দ্র। আর তাতেই সংকটের মুখে পড়েছে এই প্রকল্প।

বায়োমেট্রিক যাচাই অসফল

কেন্দ্রের নির্দেশে নয়া নিয়ম অনুযায়ী বার্ধক্য ভাতা প্রাপকদের ডিজিটাল লাইফ সার্টিফিকেট দেওয়ার আগে উপভোক্তাদের বায়োমেট্রিক ছাপ নেওয়া হচ্ছে এবং রেটিনা স্ক্যান করা হচ্ছে নির্দিষ্ট অ্যাপ ব্যবহার করে। তাতে দেখা যাচ্ছে, বার্ধক্যজনিত কারণে রাজ্যের বহু উপভোক্তার বায়োমেট্রিক যাচাই সম্ভবই হচ্ছে না। প্রশাসনিক রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রায় দু’লক্ষ উপভোক্তার রেটিনা স্ক্যান করে DLC দেওয়া সম্ভব হয়নি। এদিকে প্রবীণদের বায়োমেট্রিক যাচাইয়ে সমস্যা হবে জেনেও DLC প্রদানের কোনও বিকল্প পরিকল্পনা করেনি কেন্দ্র। যার ফলে বিপুল সংখ্যক উপভোক্তার ন্যায্য প্রাপ্য কেন্দ্রের তরফে বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: কোনও বিনিয়োগ ছাড়াই মাসে মিলবে ৭০০০, মহিলাদের জন্য দারুণ স্কিম LIC-র

জানা গিয়েছে জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের আওতাধীন বার্ধক্য ভাতা প্রাপকদের রাজ্যের দু’টি দফতরের মাধ্যমে রূপায়িত হয়। গ্রামীণ এলাকার উপভোক্তাদের ভাতা প্রদান এবং DLC নেওয়ার দায়িত্বে রয়েছে পঞ্চায়েত দপ্তর। এবং শহরে পুর দপ্তরের অধীনস্ত স্টেট আর্বান ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি এই দায়িত্ব পালন করে। এই অবস্থায় গ্রামীণ এলাকার পাশাপাশি শহর এলাকার বহু প্রবীণ উপভোক্তাদের একই সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তাই সেই কারণে জেলাস্তরের সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের ওই প্রবীণ উপভোক্তাদের অন্যান্য নথি সহ একটি তালিকা তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। এবং এই উপভোক্তাদের টাকা যাতে কেন্দ্র হঠাৎ করে বন্ধ না করে দেয়, তাই এই তালিকা দিল্লিতে পাঠানোর বন্দোবস্ত করছে রাজ্য সরকার।

Leave a Comment