বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: গণহত্যার অভিযোগে গতকাল অর্থাৎ রবিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল-1 এ বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রুজু হওয়া হত্যা মামলার শুনানি হয়। আর সেখানেই, হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথম সাক্ষ্য দিয়েছিলেন খোকন চন্দ্র বর্মণ নামক এক বাসচালক।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো সূত্রে খবর, রবির দুপুরে খোকন হাসিনার বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ আনেন। আর সেই সূত্রে, অনেকেই মনে করছেন খোকন চন্দ্র বর্মণ নামক ওই ব্যক্তির লক্ষ্য পূরণ হলে বাংলাদেশে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হতে পারে হাসিনাকে। কিন্তু কে এই খোকন চন্দ্র বর্মণ? কী তাঁর আসল পরিচয়?
হাসিনার বিরুদ্ধে খোকনের সাক্ষ্য
রবিবার বাংলাদেশের বিশেষ আদালতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে খোকন চন্দ্র বর্মণ জানিয়েছিলেন, 2024 সালের 5 আগস্ট, বাংলাদেশের রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় পুলিশ তাঁর মাথা লক্ষ্য করে গুলি করে। ওই গুলি তাঁর চোখ, নাক এবং মুখেও লাগে। সাক্ষ্য দেওয়ার সময় খোকন নিজেই মাস্ক খুলে বিচারকদের তার মুখের বিকৃত অবস্থা দেখিয়েছিলেন।
এরপরই, হাসিনার বিরুদ্ধে কন্ঠ উঁচিয়ে খোকন চন্দ্র জানান, হাজার হাজার মানুষকে যারা মেরেছিল, সেই শেখ হাসিনা, প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আওয়ামী লিগের সাধারণ সম্পাদক সহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হোক। দেশের হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী, এদের বিচার চাই। এদিন মামলার শুনানি পর্ব শুরুর আগেই প্রসিকিউটার মহম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছিলেন, শেখ হাসিনাই সব অপরাধের নিউক্লিয়াস।
অবশ্যই পড়ুন: হঠাৎ বিকট শব্দ! মাওবাদীদের বনধের দিনই জঙ্গলমহলে থামল দিল্লিগামী রাজধানী এক্সপ্রেস
কে এই খোকন চন্দ্র বর্মণ?
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, হিন্দু উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত খোকন চন্দ্র বর্মণ জুলাই আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন। জানা যায়, গত বছরের আগস্টে তাঁকে ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় গুলি করা হয়। তবে গুলিটি মাথার বদলে মুখে লাগায় মুখমণ্ডল বিকৃত হলেও তিনি বেঁচে রয়েছেন।
সূত্রের খবর, শেখ হাসিনার অভ্যুত্থানের পর, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই খোকনকে বাঁচানোর জন্য সব রকম চেষ্টা চালিয়েছিল। জানা যায়, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নিজের সাথে করে খোকন চন্দ্রকে রাশিয়ায় নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানেই নাকি চিকিৎসা হয় তাঁর।
এই মুহূর্তে বাংলাদেশ আন্দোলনের সবচেয়ে বড় জীবিত এবং ভুক্তভোগী সাক্ষী তিনি। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণের জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে পেনশন পান খোকন এই মুহূর্তে তিনি নাহিদ ইসলামের দল এনসিপির সাথে যুক্ত।