প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: নোংরা কুড়িয়ে চলে সংসার, কোনরকমে এক বেলা খাবার জোটে কখনও কখনও তাও আবার মেলে না। এই অবস্থায় ৫৫ বছর বয়সী রেখা দেবী ১৭তম সন্তানের জন্ম দিলেন। ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থানের উদয়পুরে। এর আগে ১৬ জন সন্তানের দেখভাল করতে গিয়ে প্রবল পরিমাণে ঋণে ডুবে গিয়েছিল গোটা পরিবার আর তার মাঝেই ফের আরও এক সন্তানের জন্ম হওয়ায় আলোড়ন পড়ে গেল এলাকা জুড়ে।
সংসার চালাতে গিয়ে ঋণে জর্জরিত
রিপোর্ট অনুযায়ী, কার্যত কাগজ ও ভাঙা জিনিস কুড়িয়ে জীবিকা নির্বাহ করে উদয়পুরের এই পরিবার। রেখা গালবেলিয়া (Rekha Galbelia) নামের ওই মহিলার মেয়ে শীলা তাঁদের পারিবারিক সংগ্রামের কথা তুলে বলেছেন। তিনি জানান, “আমাদের অনেক সামাজিক প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হয়েছে। আমাদের মায়ের এতগুলো সন্তান জেনে সবাই অবাক হয়ে যায়।” এই প্রসঙ্গে রেখার স্বামী কাভরা জানাচ্ছেন, প্রবল আর্থিক অসঙ্গতির মধ্যেই দিন কাটছে তাঁদের। সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার জন্য রীতিমতো মালিকদের কাছ থেকে ২০ শতাংশ সুদে টাকা ধার করছেন তিনি। এর জন্য লাখ লাখ টাকা বেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও বাকি রয়ে গিয়েছে সুদের টাকা শোধ করা। তার মধ্যেই নতুন সন্তানের জন্ম দেওয়ায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
A 55-year-old woman from Udaipur has given birth to her 17th child. Her family, struggling with poverty, survives by collecting scrap.#Udaipur pic.twitter.com/360C6QmECi
— The Tatva (@thetatvaindia) August 27, 2025
গৃহহীন পরিবার
পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে এর আগে রেখা নাম্নী ১৬টি সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। তার মধ্যে চার ছেলে ও এক মেয়ে জন্মের পরপরই মারা গিয়েছিল। অন্যদিকে রেখার জীবিত সন্তানদের মধ্যে পাঁচজন বিবাহিত এবং তাঁদেরও আবার কারও কারও সন্তান হয়েছে। আর এই আবহে রেখা ফের জন্ম দিলেন আরেক সন্তানের। খুবই করুণ অবস্থা পরিবারের। এদিকে কাভরা জানাচ্ছেন, ”প্রধানমন্ত্রীর আবাস যোজনায় একটি বাড়ি আমরা পেয়েছিলাম। কিন্তু তবুও গৃহহীনই থাকতে হয়েছে, কারণ যে জমির জন্য বাড়িটা পাওয়া গিয়েছে সেই জমিটা আমাদের নামে ছিল না। খাবার, শিক্ষা এবং পরিবারের সদস্যদের বিয়ে দেওয়ার ক্ষমতাও আমার নেই।”
আরও পড়ুন: কীভাবে গুলি করেছিল দেশরাজ, কটাই বা লেগেছে? প্রকাশ্যে ঈশিতার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট
অবাক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীরা
উল্লেখ্য রেখা নাম্নীর সন্তান ধারণের বিতর্ক নিয়ে স্থানীয় কমিউনিটি হেলথ সেন্টারের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ রোশন দারঙ্গি বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। তিনি জানান, “রেখাকে ভর্তির সময় পরিবার তাঁর চিকিৎসার ইতিহাস সম্পর্কে ভুল তথ্য দিয়েছিল। যখন রেখাকে ভর্তি করা হয়, তখন পরিবার হাসপাতালকে জানায় এটি তাঁর চতুর্থ সন্তান। কিন্তু পরে জানা যায়, এটি তাঁর ১৭তম সন্তান।” স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনায় চমকে গিয়েছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীরা।