প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গরু পাচার নয়, সামান্য কৃষিকাজের জন্য গরু কিনে বাড়ি ফেরার সময় রাস্তার মাঝেই চরম অশান্তির মুখে পড়তে হয়েছিল বয়স্ক বাসিন্দাদের! গলায় ও হাতে দড়ি বেঁধে কান ধরে হাঁটানো হয়েছিল সারা রাস্তা। সেইসঙ্গে মারধর করার অভিযোগও উঠেছিল। ভাইরাল সেই ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই, অবশেষে দুর্গাপুরের গোটা ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বিজেপি নেতা পারিজাত গঙ্গোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করল পুলিশ।
ঘটনাটি কী?
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৩১ জুলাই, বৃহস্পতিবার, দুর্গাপুরের গ্যামন ব্রিজ এলাকায় বাঁকুড়ার আশুড়িয়া হাট থেকে গরু কিনে ফিরছিলেন জেমুয়া গ্রামের তিন বাসিন্দা। অভিযোগ, সেই সময় রাস্তায় বিজেপির যুব মোর্চার রাজ্য কমিটির সদস্য পারিজাত গঙ্গোপাধ্যায় ও তাঁর অনুগামীরা গাড়ি আটকায়। প্রথমে চাষিদের বেধড়ক মারধর করা হয়। এরপর গরুর দড়ি দিয়েই তাঁদের হাত ও গলা বেঁধে দেওয়া হয়। তারপর কান ধরিয়ে তাঁদের রাস্তায় হাঁটানো হয়। ঘটনার পুরো ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাতে নিন্দার ঝড় ওঠে। ভিডিও সূত্রে পুলিশ একে একে অনুগামীদের ধরলেও মূল অভিযুক্ত পারিজাতকে আটক করতে পারছিল না। গোটা বিষয় ঘিরে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে। শেষে পুলিশের জালে ধরা দিলেন বিজেপি নেতা।
গ্রেফতার বিজেপি নেতা
স্থানীয় সংবাদ সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, গতকাল অর্থাৎ রবিবার রাতে দুর্গাপুরে গরু পাচারকারী সন্দেহে মারধরের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত তথা বিজেপির যুব মোর্চার রাজ্য কমিটির সদস্য পারিজাত গঙ্গোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করল পুলিশ। জানা গিয়েছে ধানবাদ থেকে তাঁকে ধরা হয়েছে বলে। বিগত কয়েকদিন ধরেই ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিলেন বিজেপির যুব মোর্চার রাজ্য কমিটির সদস্য পারিজাত গঙ্গোপাধ্যায়। যদিও দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের দাবি, গত কয়েক দিন ধরে পুলিশ ধরপাকড়ের নামে দলের কর্মীদের চরম হেনস্থা করছে। মারধরের পাশাপাশি হুমকি হুঁশিয়ারিও চলছিল, তাই শেষ পর্যন্ত পারিজাত আত্মসমর্পণ করেছেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের আগেই উলাটপুরাণ! চিরঞ্জিতের মুখে শোনা গেল বিরোধী দলনেতার প্রশংসা
তৃণমূল জেলা সভাপতি তথা পান্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে জানিয়েছেন যে, “ অকারণে সাধারণ মানুষের প্রতি অত্যাচারের প্রতিবাদে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, মূল দোষী এবং বাকি সহযোগীরা কেউই যেন ছাড় না পায়। খবর ছিল এতদিন পারিজাত বিজেপি নেতাদের আশ্রয়ে ছিল। এদিকে বিজেপির চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় পাল্টা দাবি করে বলেন, “অপরাধীরা শাস্তি পাক, কিন্তু নির্দোষ কর্মীদের হয়রানি হলে বিজেপি আন্দোলনে নামবে।”