সহেলি মিত্র, কলকাতাঃ আর গোয়াল ঘর নয়, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে শীঘ্রই পাকা চালের বাড়ি পেতে চলেছেন পুরুলিয়ার দুঃখু মাঝি। আর দুঃখু মাঝির (Dukhu Majhi) এবার পাশে দাঁড়ালেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। হ্যাঁ একদম ঠিক শুনেছেন। দুঃখু মাঝিকে বাড়ি করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।
দুঃখু মাঝির পাশে দাঁড়ালেন শুভেন্দু অধিকারী
পুরুলিয়ার বাঘমুন্ডির পদ্মশ্রী পুরস্কার প্রাপ্ত দুঃখু মাঝির জীবন কত কষ্টে কাটছিল তা আপনাদের Indiahood.in -এ করা আগের প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছিল। দেশের রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পুরস্কারপ্রাপ্ত মানুষের মাথার ওপর নেই কোনও পাকা ছাদ। তিরপলের ঘরে থাকছেন স্ত্রী ও দিদিকে নিয়ে। এদিকে এই খবর শুভেন্দু অধিকারীর কাছে যেতেই দুঃখু মাঝির বাড়ি নির্মাণ করার দায়িত্ব নিলেন তিনি।
Happy to inform, BJP led by LoP @SuvenduWB has taken full responsibility for Padma Shri Duku Majhi’s welfare. We will build him a new house & financial aid has also been provided by Team. BJP delivers where TMC fails miserably.@MrSinha_ @AshokShrivasta6 @BefittingFacts… pic.twitter.com/IzvtF4DlfH
— Amit Thakur 🇮🇳 (@Amit_Thakur_BJP) August 3, 2025
ছোটবেলা থেকেই দুঃখু মাঝির গাছ লাগানোর প্রতি গভীর ভালোবাসা পোষণ করতেন। স্কুল ছাড়ার পরও, সেই সবুজ আবেগ তাকে গ্রাস করে ফেলেছিল – তার জীবন মাটি, শিকড় এবং চারাগাছের সাথে মিশে গিয়েছিল যা তিনি এত ভালোবাসার সাথে যত্ন করেছিলেন। সেই আবেগই অবশেষে তাকে চড়িদা-বীরগ্রামের ধুলোময় গলি থেকে রাইসিনা হিলসের পালিশ করা মেঝেতে নিয়ে যায়। ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু দুঃখুবাবুকে পদ্মশ্রী প্রদান করেন, যা কেবল সিন্দ্রি নয়, সমগ্র পুরুলিয়া বনাঞ্চলে গর্বের সাথে প্রতিধ্বনিত হয়েছিল।
আজ দুঃখু মাঝি চরম দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করছেন। তার শরীর যেমন বয়সের ভারে ভাঙছে, ঠিক তেমনই তিনি থাকছেনও এক জীর্ণ মাটির ঘরে। ত্রিপল দিয়ে বাঁধানো এবং বাঁশের খুঁটি দিয়ে শক্ত করা এক ঘরে থাকছেন তিনি। যে কোনও মুহূর্তে সেই ঘর ভেঙে পড়তে পারে, এই আশঙ্কায় রয়েছেন তিনি।
কেন রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পেয়েছিলেন দুঃখু মাঝি?
জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ৫,০০০ টিরও বেশি গাছ লাগিয়েছেন। জানলে অবাক হবেন, এই বৃদ্ধ বন বিভাগের অফিস থেকে চারা সংগ্রহ করেন এবং সাইকেলে ভ্রমণের সময় মাঠে, নদীর ধারে এমনকি শ্মশানেও রোপণ করেন। দুঃখু মাঝি বলেন যে তার জীবনের উদ্দেশ্য প্রকৃতিকে আলিঙ্গন করা এবং একটি সবুজ পরিবেশ গড়ে তোলা, যা তাকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এমন একটা মানুষের দিন এভাবে চরম দারিদ্রতার সঙ্গে কাটছে তা সত্যিই দেখা যায় না।