প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সামনেই ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। তাই ভোট যুদ্ধের ময়দানে নিজেদের অধিকার বজায় রাখতে উঠে পড়ে লেগেছে শাসক দল থেকে শুরু করে বিরোধীদল গুলি। সাধারণ মানুষকে নিজেদের প্রভাব কতটা তা বোঝাতে তৎপর হয়ে উঠেছে তারা। এমতাবস্থায় ফের সরকারি হাসপাতালে কঙ্কালসার চেহারা প্রকাশ্যে এল সামাজিক মাধ্যমে। মালদার (Malda) সরকারি হাসপাতালে বেড না মেলায় সাপে কাটা রোগীকে গাড়িতে শুইয়েই স্যালাইন দেওয়ার অভিযোগ উঠল।
ঠিক কী ঘটেছে?
দ্য ওয়ালের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বুধবার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লকের সোনাকুল এলাকার এক যুবককে বিষধর সাপে কামড়ায়। সেই খবর তাঁর দাদা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ওয়াসিম আক্রমের কানে পৌঁছতেই সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর ব্যক্তিগত গাড়িতে করে তাঁকে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান ভাইকে। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখে অবাক কাণ্ড। হাসপাতালে চিকিৎসক তো নেই তার উপর হাসপাতালে একটা বেডেরও ব্যবস্থা নেই। এমন কি ছিল না বসার জায়গা। হাসপাতালের চারিদিকে ছিল ছাগল, কুকুর। তাঁর ভাইকে নিয়ে প্রথমে জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়। তারপর বলা হয় তাঁকে কয়েক ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। গাড়িতেই স্যালাইনের ব্যবস্থা করে দেয় স্বাস্থ্যকর্মীরা। আর সেই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আইনজীবী।
তাজমুল হোসেনকে নিয়ে কটাক্ষ
দাদা ওয়াসিম আক্রম ফেসবুক লাইভ করে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালের পরিস্থিতি তুলে ধরেন। এখানকার চিকিৎসার চূড়ান্ত অব্যবস্থার কথা তুলে ধরে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।এমনকি এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী তাজমুল হোসেন যিনি কিনা এই হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তাঁকেও তীব্র আক্রমণ করেন। এদিন ওয়াসিম আক্রম, তাজমুল হোসেনকে আক্রমণ করে বলেন, “রোগীর কী অবস্থা, সেটা দেখার ওনার কোনও দরকার নেই। উনি কেবল চাই, ক্ষমতা আর ভোট। ” মুহূর্তের মধ্যে তাঁর ফেসবুক লাইভ দ্রুত গতিতে ভাইরাল হয়ে পড়ে। এখানেই শেষ নয়, সরকারি হাসপাতালের পরিস্থিতি নিয়ে তিনি জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছেও অভিযোগ দায়ের করেছেন।
আরও পড়ুন: নবান্নের দিকে জানলা নিষিদ্ধ, আবাসন নির্মাণ নিয়ে ১৭ দফা শর্ত দিল লালবাজার
পাল্টা জবাব তাজমুল হোসেনের
সরকারি হাসপাতালের এইরূপ অব্যবস্থা নিয়ে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে আঙুল তোলে বিজেপি। তাঁদের অভিযোগ তৃণমূলের নেতা জন-প্রতিনিধিরা চুরি করতেই ব্যস্ত, মানুষের সেবা নয়। এদিকে এত অভিযোগের পরেও উল্টো সুর গাইলেন মন্ত্রী তাজমুল। তাঁর দাবি, যে পরিষেবা বাংলায় পাওয়া যায় তা সারা ভারতে কোথাও পাওয়া যায় না। এমনকি ওই আইনজীবীকে পাগল সম্মোধন করে তিনি বলেন, “বাংলার হাসপাতালে যা পাওয়া যায়, তা আর কোথাও পাওয়া যায় না। পাগলে কী বলল, তাতে কান দিয়ে লাভ নেই। প্রত্যেকটা মানুষ আজ খুশি রয়েছেন। ”
 
					