গ্রাহকদের ফিক্সড ডিপোজিট ভেঙে ৫ কোটি লুঠ করে পালাল SBI কর্মী!

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: প্রবীণ নাগরিকরা ব্যাঙ্কে এসেছিল কেউ ফিক্সড ডিপোজিটের খোঁজে, আবার কেউ পেনশনের টাকা তোলার জন্য, কিংবা কেউ সঞ্চয়ের আশায়। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যেই তাদের জীবন যেন ওলটপালট (SBI Scam) হয়ে গেল। হ্যাঁ, ফরিদকোটের সাদিক শাখায় স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার গ্রাহকরা হঠাৎ করে জানতে পারলেন যে, তাদের সঞ্চয়ের সব টাকা উধাও!

ঘটনাটি কী?

রিপোর্ট অনুযায়ী, ঘটনাটি 23 জুলাই, বুধবারের। অভিযোগ উঠছে, ব্যাঙ্কের এক কর্মী গ্রাহকদের ফিক্সড ডিপোজিটের টাকা ভেঙে তাদের অ্যাকাউন্ট খালি করে দিয়েছে। আর ক্রেডিট লিমিট ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকার ঋণ তুলে নিয়েছে। ব্যাঙ্ক থেকে পাওয়া এক রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রায় 70 জন গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় 5 কোটি টাকা উধাও হয়ে গিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। আর এই ঘটনার পর সন্দেহভোজন ব্যাঙ্ক কর্মী অমিত ধিংরা বর্তমানে পলাতক। 

এ নিয়ে পরমজিৎ কৌর নামের এক মহিলা জানিয়েছেন, তার জয়েন্ট এফডি অ্যাকাউন্ট থেকে 22 লক্ষ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে সন্দীপ সিংহের চারটি এফডি একসঙ্গে ভেঙে নেওয়া হয়েছে। তাতে প্রত্যেকটিতে 4 লক্ষ টাকা ছিল। মূলত যাদের বয়স 60 পেরিয়েছে, তাঁরা জীবনভর এক টাকাও খরচ না করে সঞ্চয় করেছিল। আর সেই টাকা আজ সব ধুলিস্যাৎ।

কীভাবে ঘটল এই জালিয়াতি?

প্রথম দিকে এক-দুজন গ্রাহক বুঝতে পারে যে, তাদের অ্যাকাউন্ট থেকে অবৈধ লেনদেন চলছে। তারা ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে ঘটনাটি জানায়। এরপর দেখা যায় যে, অনেক গ্রাহকের ক্ষেত্রেই চিত্রটি একই। তল্লাশি করে দেখা যায়, গ্রাহকদের এফডি ভাঙা হয়েছে বিনা অনুমতিতেই। পাশাপাশি নাম পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে। এমনকি ওই টাকাগুলি অন্যত্র স্থানান্তরিত করে নেওয়া হয়েছে। 

আরও পড়ুনঃ জাভির নাম করে AIFF-কে হাসির পাত্র বানাল এক কিশোর! প্রকাশ্যে আসল ঘটনা

ঘটনা সামনে আসতেই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ তদন্ত নেমেছে এবং ব্যাঙ্ক নিজেই জানায় যে, অমিত ধিংরা নামের এক ব্যক্তিই মূল দোষী। তবে বর্তমানে তিনি পলাতক। এ নিয়ে সাদিক থানার ইনচার্জ নভদীপ ভাট্টি জানিয়েছেন, ওই কর্মীর বিরুদ্ধে চারটি এফআইআর ইতিমধ্যে দায়ের করা হয়েছে। আর বর্তমানে তদন্ত চলছে। ব্যাঙ্কের ফিল্ড অফিসার সুশান্ত অরোরা জানিয়েছেন, আমি নতুন এই শাখায় এসেছি। কিছু গ্রাহক আমাকে এসে অভিযোগ জানালে আমি এই প্রতারণার ব্যাপারে জানতে পারি। 

যদিও এই ঘটনার পর গ্রাহকরা একেবারে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। কারণ তাদের জীবনের সমস্ত সঞ্চয় এক নিমিষেই ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে। তবে স্টেট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছে যে, প্রতিটি অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে, আর তল্লাশি চালানো হচ্ছে। তদন্ত শেষ হলে ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা সম্পূর্ণ ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

Leave a Comment